রূপগঞ্জ ট্র্যাজেডি: যা বলছে কারখানার মালিকপক্ষ

প্রকাশিত

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের কর্ণগোপ এলাকার হাসেম ফুড লিমিটেডের ছয়তলা ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৫২ জন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। ফায়ার সার্ভিস বলেছে, ভবনের চারতলায় তালাবদ্ধ থাকায় এবং অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র না থাকার কারণে এত প্রাণহানি হয়েছে। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে কারখানার মালিক পক্ষ।

এ ব্যাপারে সজীব গ্রুপের মালিক এমএ হাসেমের বক্তব্য পাওয়া না গেলেও মালিকের পক্ষ থেকে ওই গ্রুপের একজন ম্যানেজার কাজী রফিকুল ইসলাম বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, ‘ইকুইপমেন্ট (যন্ত্রপাতি) এনাফ (যথেষ্ট) পরিমাণ ছিল। আমার অ্যালার্ম দেয়ার জন্য সবকিছু ছিল।’

তিনি আরও বলেন, ‘নিচতলায় আগুন ধরার কারণে পুরোটা ছড়িয়ে গেছে।’ ভবনের চার তলায় তালাবদ্ধ ছিল, সে কারণে শ্রমিকরা বের হতে পারেননি। ফায়ার সার্ভিস এই অভিযোগের বিষয়ে কাজী রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এটি মিথ্যা কথা, এটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।’

কিন্তু ফায়ার সার্ভিস বলেছে, আগুন নেভানোর পর তারা চারতলায় তালাবদ্ধ থাকায় একটি জায়গায় ৪৯ জনের মৃতদেহ পেয়েছে। তাহলে সেটাকে কীভাবে মিথ্যা কথা বলছেন? এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘যখন নিচতলায় আগুনটা ধরেছে, তখন সবাই আতঙ্কে ওপরে চলে গেছে।’

তাহলে এত মানুষের মৃত্যুর দায়িত্বটা কে নেবে- প্রশ্নের জবাবে ইসলাম বলেন, ‘ডিসি ও ডিআইজির সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। এটা আমাদের মালিক পক্ষ দেখবে। হতাহতদের ক্ষতিপূরণ সম্পূর্ণ ম্যানেজমেন্ট দেবে।’

কারখানাটির মালিকের পক্ষ থেকে অসংগতির অভিযোগগুলো অস্বীকার করা হলেও ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক দেবাশীষ বর্ধন বলেছেন, ভবনে চারতলায় সিঁড়ির গেট তালাবন্ধ থাকায় সেখানে আটকা প্রত্যেকেরই মৃত্যু হয়েছে।

কারখানার ভবনটি আগুন নেভানোর ব্যবস্থা না থাকার অভিযোগও তুলেছেন তিনি।

নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ বলেছেন, তাদের তদন্তে সব অভিযোগ খতিয়ে দেয়া হবে।

বৃহস্পতিবার বিকালে কারখানাটিতে আগুন লাগার পর রাত পর্যন্ত তিনজন নারী শ্রমিকের মৃতদেহ এবং ২৫ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছিল। কিন্তু শুক্রবার সকালে ৪৯ জনের লাশ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস। এনিয়ে ৫২ জনের লাশ উদ্ধার হয়েছে। কারখানার ভেতরে আরও লাশ আছে কিনা তা খুঁজতে শনিবার সকালে থেকে তৃতীয় দিনের মতো উদ্ধার অভিযান চালানো হচ্ছে।

আপনার মতামত জানান