প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্ন সন্ত্রাস দমনে যুক্তরাষ্ট্র কি নাখোশ?

প্রকাশিত

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘র‌্যাবের উপর নিষেধাজ্ঞা তারা কবে তুলবে জানি না। তবে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে ক্ষতি যেটা করেছে…যাদের দিয়ে আমরা এদেশে সন্ত্রাস দমন করেছি তাদের উপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার অর্থটা কী? সন্ত্রাসীদের মদদ দেওয়া, আমার এটাও প্রশ্ন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে যে, তাহলে সন্ত্রাস দমনে তারা কি নাখোশ?’

তিনি বলেন, ‘৪০ বছর ধরে তালেবানের সঙ্গে যুদ্ধ করে সেই তালেবানকেই ক্ষমতা দিয়ে চলে এল যুক্তরাষ্ট্র। ৪০ বছর তো তারা রাজত্ব করল। তাহলে তাদের ব্যর্থতার কথা বলে না কেন?’

বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র সফর শেষে গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞাসহ বিভিন্ন সময় নানা রকম ঘটনা ঘটায়। দুঃখের বিষয় হচ্ছে আমাদের দেশেরই কিছু লোক স্থানীয়ভাবে সেখানে থাকে। তারা সেখানের সিনেটরদের কাছে বানোয়াট ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে থাকে। এসব তথ্য দিয়ে একটা পরিবেশ সৃষ্টি করে। যারা এসব করে, দেশের বদনাম করে তারা কিন্তু নিজেরা এক একটা অপকর্ম করেই দেশ ছাড়ে। কোনো না কোনো অপরাধে তারা অপরাধী অথবা চাকুরিচ্যুত।’

র‌্যাবের উপর নিষেধাজ্ঞা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আামর প্রশ্ন হচ্ছে র‌্যাব সৃস্টি করেছে কে?? আমেরিকার পরামর্শে এটি করা হয়েছে। তারাই তো র‌্যাব সৃষ্টি করতে পরামর্শ দিয়েছে। র‌্যাবের প্রশিক্ষণ, অস্ত্র, হেলিকপ্টার, আইটি সিস্টেম সবই যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া। যখন নিষেধাজ্ঞা দেয়, অভিযোগ জানায় তখন একটাই কথা বলা লাগে, যেমন ট্রেনিং দিয়েছে তেমনই কার্যক্রম করছে। এখানে আমাদের করার কী আছে? ট্রেনিং যদি ভালো হতো তাহলে তো একটু কথা ছিল।

দ্বিতীয় কথা, আমাদের দেশের আইনশৃঙ্খলা সংস্থা র‌্যাব, পুলিশ যেই হোক, তারা যদি কোনো অপরাধ করে তার কিন্তু বিচার হয়। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে ইচ্ছামতো গুলি করে মারলেও বিচার হয় না।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংস্থা গুম-খুন নিয়ে কথা বলেন। গুমের হিসাব নিয়ে দেখা গেল সবচেয়ে বেশি গুম হয়েছিল জিয়াউর রহমানের আমলে। তারপর থেকেই তো চলছে। আমরা যখন তালিকা চাইলাম ৭৬ জনের তালিকা পাওয়া গেল। এর মধ্যে এমনও আছে মাকে লুকিয়ে রেখেছে আরেকজনকে শায়েস্তা করতে। কেউ বোনকে লুকিয়ে রেখেছে। আবার দেখা গেছে ঢাকা থেকে খুলনা চলে গেছে। তালিকায় এমনও নাম আছে ভারত থেকে কিছু পলাতক আসামি। তাদের নাম তালিকায়। এটা কেমন করে হয়?’

তিনি বলেন, ‘এমনও হয়েছে যে তালিকায় নাম আছে কিন্তু লুকিয়ে আছে যুক্তরাষ্ট্রে। সেই বিষয়গুলো আমরা তাদের সামনে তুলে ধরেছি। এই যে গুম গুম করেন, তাহলে আগে দেখেন সেটা কী কারণে। এ রকম গুমের ঘটনা যখনই ঘটে আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী খুঁজে বের করে। গুম যত বড় করে দেখানো হয়, খুঁজে পাওয়ার খবরটা পত্রিকায় দেখান না। যদি বড় করে দেখানো হতো তাহলে বাংলাদেশের বদনাম হতো না।’

প্রধানমন্ত্রী গত রবিবার দেশের উদ্দেশে যাত্রা করেন। এরপর লন্ডনে দুই ঘণ্টার যাত্রাবিরতি দিয়ে সোমবার দিবাগত রাত ১টায় দেশে পৌঁছান। এই দীর্ঘ সফর নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন প্রধানমন্ত্রী।

আপনার মতামত জানান