বর্ষায় বরবটি চাষের পদ্ধতি, যত্ন ও পরিচর্যা
বর্ষায় চাষিভাইদের জন্য বরবটির চাষ (Cowpea Cultivation) লাভজনক হতে পারে৷ বর্ষায় সাধারণত শাকসবজির অনেক ক্ষতি হয়, কিন্তু বরবটি লাভের মুখ দেখাতে পারে৷ দেশের মধ্যে উত্তরপ্রদেশ, পঞ্জাব, মধ্যপ্রদেশ, ঝাড়খন্ড, কর্ণাটক, তামিলনাড়ু, রাজস্থান, ছত্তিশগঢ় সহ বিভিন্ন রাজ্যে এই বরবটির চাষ হয়ে থাকে৷
কৃষকেরা নিজের রাজ্যের জলবায়ু অনুযায়ী এই বরবটির চাষ (Cowpea Cultivation) করে থাকেন৷ কিন্তু উত্তরপ্রদেশে বর্ষার (Monsoon Cultivation) আগমনে, বিশেষ করে জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে এর চাষ শুরু হয়ে যায়৷ দুই ধরণের বরবটি বেশিরভাগ চাষ করা হয়ে থাকে৷ একটি দৈর্ঘ্যে ছোট, এবং অপরটি দৈর্ঘ্যে বড়, কিছুটা লতানো প্রকৃতির৷ দ্বিতীয়টিই বর্ষাকালে বেশি চাষ করা হয়৷ এর জন্য মাচা তৈরির প্রয়োজন হয়৷
লতানো বরবটির চাষ-
এই ধরণের বরবটির চাষ (Cowpea Cultivation) জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে শুরু হয়ে যায়৷ বপনের সময় এদের মধ্যে ৭০ থেকে ৮০ সেন্টিমিটার দূরত্ব রাখতে হয়৷ চারার দূরত্ব ১৫ সেন্টিমিটার রাখা প্রয়োজন৷ এই চারা রোপনের প্রায় ৬০দিন পরে উৎপাদন হতে শুরু করে৷ দু মাস পর্যন্ত ফলন পাওয়া যায়৷ সপ্তাহে ২ বার আপনি বরবটি সংগ্রহ করতে পারবেন৷ কৃষকদের মতে বরবটি চাষে জমিতে রাইজোবিয়াম ব্যাকটিরিয়া পাওয়া যায়, যা জমিতে নাইট্রোজেনের মাত্রা ধরে রাখতে সাহায্য করে৷ এতে চাষের জমির উর্বরতা (Fertility of Land) উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেতে থাকে৷
কৃষকভাইয়েরা যদি এক একর চাষের জমিতে বরবটি চাষ করে, তাহলে এর থেকে প্রায় ৮-১০ হাজার টাকা ব্যয় হয়৷ উল্লেখ্য, এক একর থেকে ৪০-৫০ ক্যুইন্টাল পর্যন্ত বরবটি পাওয়া যেতে পারে৷ ৩হাজার থেকে ১ হাজার টাকা প্রতি ক্যুইন্টাল রোজগার করতে পারেন কৃষকেরা৷ এভাবে প্রতি এক একর জমি থেকে প্রচুর উপার্জন করতে পারবেন তারা৷
তবে এই চাষে গাছে কীটের উপদ্রব হতে পারে, যা ফসল নষ্ট করে দিতে পারে৷ তাই এর উপদ্রব যাতে না হয় তার জন্য নিম তেল ছড়িয়ে দিতে পারেন৷ এছাড়া রাসায়নিক ওষুধ মোনোপোটোফস ৬২৫ মিলিগ্রাম প্রতি হেক্টরে ছড়ানো যেতে পারে৷
কৃষি বিশেষজ্ঞদের মতে, বরবটি চাষে জমিতে যেন জল না জমে যায়৷ এতে রাইজোবিয়াম ব্যাকটিরিয়ার ওপর প্রভাব পড়তে পারে যা জমির উর্বরতা বৃদ্ধিকে বাধা প্রদান করতে পারে৷ ফসলের ভালো ফলনের সম্ভাবনাও হ্রাস পেতে থাকে৷ জৈব পদ্ধতিতে সমগ্র বিষয়টি করলে তা সবদিক থেকেই ভালো৷
আপনার মতামত জানান