বড় পরিসরে ইসলামী বইমেলা আয়োজনের দাবি

প্রকাশিত



জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটের আঙিনায় চলছে পক্ষকালব্যাপী ইসলামী বইমেলা। পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) ১৪৪৩ হিজরি উপলক্ষে ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ এ মেলার আয়োজন করে। গত ১৯ আগস্ট গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ধর্মবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান বইমেলার উদ্বোধন করেন। ১৫ দিনের ইসলামী বইমেলা ৩ নভেম্বর শেষ হওয়ার কথা থাকলেও প্রকাশকদের অনুরোধে ১২ নভেম্বর পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলায় থাকে পাঠকের আনাগোনা। ৬২টি স্টলে দেশের ইসলামী ধারার শীর্ষস্থানীয় প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানগুলো এবারের মেলায় অংশ নিয়েছে।

শুরুতে কিছুটা ভাটা থাকলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক প্রচারণায় বইমেলা প্রকাশক, লেখক ও পাঠকদের মিলনমেলায় পরিণত হয়। মেলাকে ঘিরে নতুন বইয়ের মোড়ক উম্মোচন অনুষ্ঠিত হয় বেশ কিছু প্রকাশনীর। ইসলামী ব্যক্তিত্ব, খ্যাতিমান লেখক ও বরেণ্য ব্যক্তিবর্গের আগমনে তৈরি হয়েছে পাঠকদের উপচে পড়া ভিড়। তা ছাড়া পাঠকদের মনকে সজীব রাখতে ইসলামী সংগীত পরিবেশন করছেন শিল্পীরা।

সব কিছুর মতো ইসলামপ্রিয় পাঠককদের মধ্যেও বেড়েছে পাঠ-সচেতনতা। তাই তথ্যনির্ভর জীবনঘনিষ্ঠ বইয়ের প্রতি আগ্রহ তাদের। বইয়ের মলাট দেখার পাশাপাশি বইয়ের বিষয়বস্তুকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন পাঠকরা। ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি বিষয়ক গবেষণাধর্মী ননফিকশন মৌলিক বইয়ের গুরুত্ব যেমন বেড়েছে, তেমনি ফিকশনধর্মী বইয়ের চাহিদাও বহু বেড়েছে। এ ছাড়া শিশুতোষ বইয়ের চাহিদাও আগের চেয়ে অনেক বেশি। বর্তমানে বইয়ের বাহ্যিক সৌন্দর্য বৃদ্ধির পাশাপাশি বিষয়বস্তুতে বৈচিত্র্য ও নিত্য-নতুন তথ্য সংযুক্তি চোখে পড়ার মতো। বইয়ের পাতার নান্দনিক দৃশ্য ও নতুন বইয়ের অন্য রকম গন্ধ পাঠকদের নিয়ে যায় ইসলামী বইমেলার স্টলগুলোতে।

ইসলামী বইমেলা ঘিরে নতুন বইয়ের মোড়ক উম্মোচন করেছে অনেক প্রকাশনী। পাঠকদের ব্যাপক সমাগমে আশাতীত বই বিক্রি বেড়েছে। সাধারণত বিকেল থেকে পাঠকদের ভিড় শুরু হয়, যা রাত অবধি চলতে থাকে। তবে মেলার পরিসর খুবই ছোট্ট হওয়ার অভিযোগ রয়েছে মেলায় আসা পাঠকদের। বিশেষত বিকেলের উপচে পড়া ভিড়ের মধ্যে খুবই অস্বস্তিতে পড়েন পাঠকরা। তা ছাড়া বসার কোনো স্থান না থাকায় মেলায় আসা শিশু-কিশোররা সমস্যায় পড়ছে বলে অনেকে অভিযোগ করেন। এসব সমস্যা সমাধানে আরো বড় পরিসরে ইসলামী বইমেলার আয়োজন করলে আগ্রহী সব প্রকাশক মেলায় অংশ নিতে পারবেন বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানগুলো।

এবারের ইসলামী বইমেলায় দ্বিতীয় বছরের মতো অংশ নিয়েছে গার্ডিয়ান পাবলিকেশন্স। বইমেলায় আগের চেয়ে অনেক বেশি পাঠকের উপস্থিতি বেড়েছে বলে জানিয়েছেন পাবলিকেশন্সের কর্নধার নুর মোহাম্মদ। তিনি বলেন, বইমেলা এখন লেখক-পাঠক ও ইসলামী ব্যক্তিত্বদের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। সেই সঙ্গে বই বিক্রির হারও অনেক বেড়েছে বলে জানান। ইসলামিক ফাউন্ডেশন আগামীতে আরো বড় পরিসরে রবিউল আউয়াল মাসজুড়ে বইমেলা আয়োজনের উদ্যোগ নেবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

প্রথমবার বইমেলায় অংশ নেওয়া মুহাম্মদ পাবলিকেশন্সের কর্নধার মুহাম্মদ আবদুল্লাহ খান বলেন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বায়তুল মোকাররমের বইমেলা এখন লেখক-পাঠকদের মিলনক্ষেত্র। আগে এখানে শুধু হকাররা বই বিক্রি করলেও এখন দেশের শীর্ষস্থানীয় ইসলামী প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানগুলো মেলায় অংশ নিচ্ছে। তবে প্রতিবছর যেন প্রকাশনাপ্রতিষ্ঠানগুলো অংশ নিতে পারে তা নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষের যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি বলে তিনি মনে করেন।

আপনার মতামত জানান