জয়তু মাশরাফি; জয়তু অধিনায়ক

প্রকাশিত

প্রথাগত জন্মদিন বলতে আমরা যা বুঝি বা জন্মদিনের আনুষ্ঠানিকতা বলতে যা বোঝায় – কেক কাটা, পোলাও, কোর্মা, রোষ্ট খাওয়া তথা ভুঁড়িভোজ, পরিবার পরিজন নিয়ে হৈ হুল্লোড় এসব তার পছন্দ নয়। এর চেয়ে মাশরাফির পছন্দ স্রষ্টা ও তার সৃষ্টির সেবার মধ্য দিয়েই দিনটি কাটিয়ে দেয়া। যার ফলে কোনো জন্মদিনেই আড়ম্বরতা থাকে না মাশরাফির বাড়িতে।

তিনি নিজে ঘটা করে জন্মদিন পালন করেন না, সে অর্থে জন্মদিনে তার এবং পরিবারের কোনো আনুষ্ঠানিকতা থাকে না। তাতে কি! ভক্ত-সুহৃদ ও শুভানুধ্যায়ীরা যে তার জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানাতে উন্মুখ হয়ে থাকেন। তার জন্মদিনটা এখন পরিণত হয়েছে সার্বজনীন উৎসবে। ক্রিকেট, অধিনায়ক মাশরাফিকে ছাপিয়ে মানুষ মাশরাফির জন্মদিন আজ দেশের সবার আনন্দ-উৎসবের উপলক্ষ।

মাশরাফির কাছে হয়তো জন্মদিনের আবেদনটা ভিন্ন, তিনি হয়তো সাধারণের মতো জন্মদিনটা দেখেন না, তবুও জন্মদিন, জন্মদিনই। সত্য হলো ৩৫ বছর আগে আজকের দিনে পৃথিবীতে এসেছিলেন বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে জনপ্রিয় চরিত্র। একজন সত্যিকারের নেতা, যার চরিত্র, আচার-আচরণ ও কথাবার্তার মধ্যে শুধু বিনয়-সৌজন্যতা বোধই শুধু নয়; একটা সার্বজনীনতা কাজ করে।

ক্রিকেটার, পেস বোলার মাশরাফির চেয়ে অধিনায়ক মাশরাফি বড়। মানুষ মাশরাফি তার চেয়েও বড়। তার মানবিক গুণগুলো সবার মন জয় করে নিয়েছে। তাই তো বঙ্গবন্ধু কন্যা, গণতন্ত্রের মানসকন্যা ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও মাশরাফিকে দেশের শ্রেষ্ঠ সম্পদ হিসেবে অভিহিত করেছেন।

যিনি সবসময় নিজের চেয়ে দলের ও সবার কথা ভাবেন। তার কাছে দলটাই সব। দলের মঙ্গল, কল্যাণ ও উন্নতির জন্যই আকুল থাকে মাশরাফির মন প্রাণ। আর সে কারণেই ক্রিকেটারদের কাছে মাশরাফি সবচেয়ে জনপ্রিয়, তাদের আস্থা ও নির্ভরতার প্রতীক মাশরাফি। এ কারণেই মাশরাফির নেতৃত্বে পুরো দলটাকে মনে হয় একটা পরিবার।

ক্রিকেটীয় ক্যারিয়ারে বাংলাদেশ দলকে অনেক দিয়েছেন মাশরাফি। তার অধীনে ২০১৪ সালের পর থেকে এক স্বপ্নীল যাত্রা শুরু করেছে টাইগাররা। বাংলাদেশ দলকে অধিনায়ক ও ক্রিকেটার মাশরাফি তুলেছেন এক অনন্য উচ্চতায়। তবু আক্ষেপ রয়েছে একটি ট্রফির। বারবার খুব কাছে গিয়েও উঁচিয়ে ধরা হয় না কোনো বহুজাতিক টুর্নামেন্টের শিরোপা। তবু ভক্ত-সমর্থকদের বড় অংশের বিশ্বাস ২০১৯ সালের বিশ্বকাপে মাশরাফির অধীনে সাফল্যের দেখা পাবে বাংলাদেশ।

মাশরাফি নিজেও মনে প্রাণে চান আগামী বিশ্বকাপ হোক বাংলাদেশের। ‘আমি বিশ্বকাপ এনে দিতে চাই। দলকে ফাইনালে দেখতে চাই। ক্রিকেট বিশ্বে তাক লাগিয়ে দিতে চাই’- এমন কথা সরাসরি না বললেও তার চিন্তা ভাবনা ও আলাপচারিতায় বারবার ফুটে উঠেছে বিশ্বকাপটাকে স্মরণীয় করে রাখতে দৃঢ়প্রত্যয়ী মাশরাফি।

মাশরাফি সুস্থ্য থাকুক এবং তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল বিশ্বকাপে দারুণ কিছু করে দেখাক, মাশরাফির জন্মদিনে এটাই জাগোনিউজের শুভকামনা।

আপনার মতামত জানান