হাইওয়ে পুলিশের জব্দকৃত ট্রাকে খেজুরের দোকান

প্রকাশিত


নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার কাঁচপুর হাইওয়ে থানা পুলিশের জব্দকৃত ড্যাম্পিং করা ট্রাক ভাড়া নিয়ে খেজুরের দোকান করছে এক ব্যবসায়ী। গতকাল দুপুরে উপজেলার কাঁচপুর শিল্পাঞ্চলের হাইওয়ে থানার ড্যাম্পিং এলাকায় গিয়ে এ দৃশ্য চোখে পড়ে।

স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, কাঁচপুর হাইওয়ে থানা পুলিশ দুর্ঘটনাকবলিত গাড়ি, অবৈধ সিএনজি, অটোরিকসা ও লাইসেন্স বিহীন গাড়ি হাইওয়ে পুলিশের ড্যাম্পিং এরিয়ায় না রেখে মহাসড়কের একপাশে রাখছে। এতে অর্ধেক রাস্তা দখল হয়ে যাওয়ায় প্রতিনিয়ত যানজট ও দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে যাত্রী ও শিল্পাঞ্চলে কর্মরত হাজার হাজার শ্রমিকরা। গাড়িগুলো হাইওয়ে সড়কের পাশে রেখে ফুটপাতে দোকান ঘর নির্মাণ করে ভাড়া দিচ্ছে বলেও অভিযোগ আছে।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাঁচপুর ইউনিয়ন যুবলীগের ক্লাব থেকে শুরু করে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সিনহা গামের্ন্টেস পর্যন্ত রাস্তার উভয় পাশের ফুটপাত অবৈধভাবে দখল করে ব্যবসা চালিয়ে আসছে। সোনারগাঁ ফিলিং ষ্টেশনের পাশে গিয়ে দেখা যায় ড্যাম্পিং করা একটি ট্রাকের একঢালা নামিয়ে তাতে খেজুরের পসরা সাজানো। ছবি তুলতে দেখে দোকানদার কৌশলে সরে পড়ে। ব্যবসায়ীদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, কাঁচপুর ষ্টেনে প্রায় দুই হাজারের বেশি ব্যবসায়ী ফুটপাত দখল করে নিয়মিত ব্যবসা করছে। তবে প্রত্যেক ব্যবসায়ীকে প্রতিদিন গুনতে হয় ১ শ থেকে ৫শত টাকা চাঁদা। আবার কেউ কেউ বসিয়েছে দুরপাল্লার গাড়ির টিকেট কাউন্টার, ট্যাক্সিষ্টেন, মাইক্রো ষ্টেন, লেগুনা ষ্টেন, সিএনজি ও অটোরিক্সা ষ্টেন। ফুটপাত ও গাড়ি ষ্টেন থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায় করে স্থানীয় ছাত্রলীগ, যুবলীগ, শ্রমিকলীগ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশের নামে চাঁদা আদায় করছে একটি দালাল চক্র। এ চক্রটি ফুটপাত থেকে চাঁদা আদায় সহ জব্দ করা গাড়ি ছাড়িয়ে দেওয়ার মিডিয়া হিসেবে কাজ করে বলেও জানা যায়।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ফুটপাত দখল করে অবৈধ দোকান করায় সাধারন যাত্রীদেও জীবনের ঝুকি নিয়ে মহাসড়কের প্রায় মাঝখান দিয়ে চলতে হয়। এতে ঘটছে দুর্ঘটনা। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, কাঁচপুর শিল্পাঞ্চলের পুরো এলাকায় কয়েকটি গ্রুপ দখলদারী ও পরিবহন চাঁদাবাজি করছে। গ্রুপগুলোর নেতৃত্বে আছে উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান বাবুল ওমর, তার ভাই ফারুক ওমর, যুবলীগের মাহবুব পারভেজ, লিটন খান, ছাত্রলীগের রাসেল মাহমুদ, শাহ আলম মেম্বার ও মনু মেম্বার। তবে কাঁচপুর হাইওয়ে থানা থেকে সোনারগাঁও ফিলিং ষ্টেশনের বিশাল এলাকাটি নিয়ন্ত্রণ করে একটি দালাল চক্র। তারা হাইওয়ে পুলিশের দালাল হিসেবে এলাকায় পরিচিত।

খোজ নিয়ে জানা যায়, কাঁচপুর ষ্টেন থেকে প্রতিদিন প্রায় ৮লাক টাকা আদায় করা হয়। এ কারনে কয়েকদিন পর পর দখল নিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়।

এ ব্যাপারে কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ওসি সাজ্জাদ করিম খান বলেন, আমাদের এরিয়া থেকে স্থানীয় মসজিদের উন্নয়নের জন্য মসজিদ কমিটির পক্ষ থেকে নামমাত্র টাকা আদায় করে। দখল বানিজ্য নিয়ে স্থানীয় প্রভাবশালী ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের মধ্যে কয়েকদিন পর পর সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে।

আপনার মতামত জানান