নারী ইউএনও দিয়ে গার্ড অব অনার, কাদের সিদ্দিকীর বাধা

প্রকাশিত




টাঙ্গাইলের সখীপুরে এক বীর মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যুর পর নারী ইউএনওর মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রদর্শনে (গার্ড অব অনার) বাধা দিয়েছেন বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী (বীর-উত্তম)। শনিবার (২৯ এপ্রিল) দুপুরে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হামিদ খানের মৃত্যুতে রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রদর্শনে ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে নারী ইউএনও এলে তাকে বাধা দেন তিনি।

এ সময় তিনি নারী ইউএনওর পরিবর্তে একজন পুরুষ কর্মকর্তাকে দিয়ে গার্ড অব অনার দিতে বলেন। এরপর ইউএনও চলে গেলে ওই বীর মুক্তিযোদ্ধার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে কাদের সিদ্দিকী চলে যাওয়ার পর জেলা প্রাশসকের নির্দেশে সেই নারী ইউএনও ফারজানা আলমের নেতৃত্বেই রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রদর্শনের পর বীর মুক্তিযোদ্ধাকে দাফন করা হয়।


বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হামিদ খান শুক্রবার (২৮ এপ্রিল) রাতে সখীপুর বাজারের নিজ বাড়িতে মারা যান। শনিবার বেলা ২টায় জানাজার আগে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রদর্শনের জন্য ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে নারী কর্মকর্তা আসায় এমন ঘটনা ঘটে।

জানাজার আগে সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় কাদের সিদ্দিকী ইউএনকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘কোনো মহিলার গার্ড অব অনার দেওয়ার সুযোগ নেই। তিনি এখানে এসে মুক্তিযোদ্ধার লাশের সঙ্গে বেয়াদবি করেছেন। যদি এখন বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকতেন তাহলে এখানকার অনেক কর্মকর্তাকে ঢাকায় পাঠিয়ে দিতাম।’

একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে অসম্মান করার অভিযোগ তুলে ইউএনওকে আগামীকালের মধ্যে সখীপুর থেকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য সরকারকে আহ্বান জানান তিনি।


কাদের সিদ্দিকী আরো বলেন, ‘আব্দুল হামিদ খান একজন বড় মাপের বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। দেশ স্বাধীন হলেও দেশের স্বাধীনতা অর্থবহ হয় নাই। মুক্তিযোদ্ধারা যথাযথ সম্মান পায়নি। আমি খুবই মর্মাহত পুলিশের গার্ড অব অনার নিয়ে। রাত ১২টার দিকে বীর মুক্তিযোদ্ধা মারা গেলেও আজ বেলা ২টার মধ্যেও রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দিতে কেউ আসেননি। মেয়ে যত বড়ই হোক মেয়েদের জানাজায় শামিল হওয়ার সুযোগ নেই।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারজানা আলম বলেন, ‘আমি জানাজা পড়তে যাইনি। আমি গিয়েছিলাম বীর মুক্তিযোদ্ধাকে রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রদর্শনের জন্য। আমি নারী ইউএনও হওয়ায় বঙ্গবীর মহোদয় আমাকে গার্ড অব অনার দিতে নিষেধ করেন। বঙ্গবীর মহোদয় নিঃসন্দেহে একজন বড় মাপের বীর মুক্তিযোদ্ধা। তার বিরুদ্ধে আমার কোনো অভিযোগ নেই। তবে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের দেওয়া জানাজার নির্ধারিত সময়ের আগেই আমি সেখানে গিয়েছিলাম, পরে নয়।’

আপনার মতামত জানান