দলিলপত্রাদির ভিত্তিতে জমির মালিকানা : ভূমিমন্ত্রী

প্রকাশিত



ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর সার্বিক দিকনির্দেশনায় ভূমি মন্ত্রণালয় ডিজিটাল সেবা প্রবর্তন এবং আইন ও বিধি-বিধান সংশোধন করে টেকসই ভূমি ব্যবস্থাপনা স্থাপনে জোর দিচ্ছে। টেকসই ভূমি ব্যবস্থায় সঠিক দলিলাদি ছাড়া কেউ কোনো জমি দখল করে রাখতে পারবে না। এর ফলে অবৈধ দখলদাররা ভূমিদস্যুতার সুযোগ পাবে না।

আজ বৃহস্পতিবার ‘বার্তা, দাপ্তরিক স্মৃতিকোষ এবং অনলাইনে জলমহালের আবেদন প্রক্রিয়ার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

এ সময় সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভূমিসচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান পিএএ এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খন্দকার মাহবুবুল হক।

সাইফুজ্জামান চৌধুরী আরো বলেন, পর্যায়ক্রমে সরকারের সব সায়রাত মহালের সম্পদ ব্যবস্থাপনা ডিজিটাইজেশনের আওতায় চলে আসবে। ইতিমধ্যে ৭৬ শতাংশ সরকারি ভূ-সম্পদ, খাসজমি ও সায়রাত মহালের তফসিল ভূমি তথ্য ব্যাংকে আপলোড করা হয়েছে।

ভূমি তথ্য ব্যাংক চালু হয়ে গেলে সংশ্লিষ্ট প্রকৃত পেশাজীবী ও ব্যবসায়ীদের কাছে স্বচ্ছতা ও দক্ষতার সাথে সরকারি সম্পদ ইজারা দেওয়া সম্ভব হবে। এতে সরকারের রাজস্ব আয় বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে বলে ভূমিমন্ত্রী মত প্রকাশ করেন।

ভূমিসচিব বলেন, ইতিমধ্যে অটোমেটেড চালান সিস্টেমের সাথে ইন্টিগ্রেডেট করে ভূ-সম্পদ ইজারা ব্যবস্থার জন্য অর্থ গ্রহণের সিস্টেম স্থাপন করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। তখন পেমেন্ট গ্রহণের জন্য ব্যাংক ড্রাফট গ্রহণের প্রয়োজন হবে না। এর ফলে ভবিষ্যতে ইজারাগ্রহীতাদের আর ব্যাংকে যেতে হবে না।

ভূমিসচিব আরো জানান, প্রচলিত পদ্ধতিতে জলমহাল ইজারার আবেদনে অনেক সময় জলমহাল ইজারা প্রক্রিয়ায় মধ্যস্বত্বভোগী ও দালালদের নানা অপকৌশলের কারণে প্রকৃত মৎস্যজীবীগণ নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতেন। এখন আর সেই সুযোগ নেই। ভূমিসচিব জানান, পরীক্ষামূলকভাবে অনলাইনে জলমহাল আবেদন শুরুর পর কোনো ধরনের অভিযোগ আসেনি।

মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খন্দকার মাহবুবুল হক বলেন, অনলাইনে জলমহাল আবেদন ব্যবস্থার কারণে প্রকৃত মৎস্যজীবীরা প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে জলমহাল ইজারা গ্রহণ করতে পারবেন। ইতিমধ্যে সারা দেশে ১৪ লাখের বেশি মৎস্যজীবীর রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হয়েছে।

ভূমিমন্ত্রী আজকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভূমি মন্ত্রণালয়ের আওতাভুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ‘বার্তা’ অ্যাপের মাধ্যমে শুভেচ্ছা পাঠান। এ ছাড়া একটি মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি অনুষ্ঠানস্থলে অনলাইনে জলমহাল আবেদন করেন। অনুষ্ঠানে ‘দাপ্তরিক স্মৃতি কোষ’-এর ওপর একটি সচিত্র উপস্থাপনা করেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের ভূমিসেবা ডিজিটাইজেশন মনিটরিং সেলের প্রধান ড. মো. জাহিদ হোসেন পনির।

ভূমি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম, ভূমি সংস্কার বোর্ডের চেয়ারম্যান সোলেমান খানসহ ভূমি মন্ত্রণালয় এবং এর আওতাভুক্ত দপ্তর-সংস্থা, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং মৎস্য অধিদপ্তরের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

অনলাইনে জলমহাল ইজারার আবেদন : গত ১৫ নভেম্বর ২০২১ তারিখে জারি করা এক পরিপত্রের মাধ্যমে ভূমি মন্ত্রণালয় উন্নয়ন প্রকল্পে মন্ত্রণালয় পর্যায়ে জলমহাল ইজারার আবেদন অনলাইনে দাখিলের সুবিধা পরীক্ষামূলকভাবে চালু করে।

এ ছাড়া গত ১০ ফেব্রুয়ারি একটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সাধারণ আবেদনে জেলা ও উপজেলা থেকে জলমহাল ইজারা প্রাপ্তির লক্ষ্যে সরকারি জলমহাল ব্যবস্থাপনা নীতি, ২০০৯ অনুযায়ী নিবন্ধিত ও প্রকৃত মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি কর্তৃক অনলাইনে ইজারার আবেদন দাখিলের ব্যবস্থা প্রবর্তনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

land.gov.bd ভূমিসেবা কাঠামো থেকে অথবা সরাসরি jm.lams.gov.bd ওয়েব পোর্টালে গিয়ে জলমহাল ইজারার জন্য আবেদন দাখিল করা যাচ্ছে। এ ছাড়া জলমহাল ইজারার আবেদন অনলাইনে দাখিল এবং ইজারা প্রক্রিয়ার বিস্তারিত উপর্যুক্ত ওয়েব পোর্টাল থেকেই জানা যাচ্ছে।

আপনার মতামত জানান