অবশেষে অস্ট্রেলিয়ার জয়
বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের হারানোর মোক্ষম সুযোগ পেয়েও তা কাজে লাগাতে পারেনি ক্যারিবীয়রা। তাদের জয়ের স্বপ্ন ফিকে হয়ে যায় মিসেল স্টার্কের গতিতে। অস্ট্রেলিয়ান এই পেসার গতির বলে শেষ দিকে নিয়মিত উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে কার্য্যত ছিটকে যায় ক্যারিবীয়রা। ১৫ রানের জয় তুলে নেয় অস্ট্রেলিয়া।
২৮৯ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে ৩১ রানে দুই ওপেনারের উইকেট হারিয়ে প্রাথমিক বিপর্যয়ে পড়ে যায় উইন্ডিজ। শাই হোপ, নিকোলাস পুরানের ব্যাটে খেলায় ফিরে জয়ের স্বপ্ন দেখে ক্যারিবীয়রা। শাই হোপ-নিকোলাসের বিদায়ের পর জয়ে স্বপ্ন জিইয়ে রাখেন অধিনায়ক জেসন হোল্ডার।
ইনিংসের শেষ দিকে হোল্ডারের অনবদ্য ব্যাটিংয়ে জয়ের পথেই ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শেষ দিকে হোল্ডার ও ব্রাথওয়েটের উইকেট হারিয়ে চাপের মধ্যে পড়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। জয়ের জন্য শেষ দিকে ২৭ বলে প্রয়োজন ছিল মাত্র ৩৭ রান। খেলার এমন মুহূর্তে মিসেল স্টার্কের জোড়া আঘাত। তার বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন ব্রাথওয়েট ও হোল্ডার। পরপর দুই উইকেট হারিয়ে চাপের মধ্যে পড়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শেষ দিকে অ্যাশলে নার্স ও শেলডন কটরিল দলের পরাজয় এড়াতে পারেনি।
বৃহস্পতিবার ইংল্যান্ডের নটিংহামের ট্রেন্ট ব্রিজে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে চরম বিপর্যয়ে পড়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। ৩৮ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে কোণঠাসা হয়ে পড়ে বিশ্বকাপের বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।
আন্দ্রে রাসেল, শেলডন কটরিল, ওশান থমাসের গতিতে দিশেহারা অ্যারন ফিঞ্চ, ডেভি ওয়ার্নার, উসমান খাজা ও ম্যাক্সওয়েলরা। এই চারজনের মধ্যে উসমান খাজা সর্বোচ্চ ১৩ রান করার সুযোগ পান। গ্ল্যান ম্যাক্সওলকে রানের খাতাই খুলতে দেননি শেলডন কটরিল। দ্বিতীয় বলেই ফেরেন অস্ট্রেলিয়ান এ অলরাউন্ডার।
অস্ট্রেলিয়ান সেরা চার ব্যাটসম্যান ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন। ফিঞ্চ, উসমান ও ম্যাক্সওয়েলের ক্যাচ তালুবন্দী করেন উইন্ডিজ উইকেটকিপার শাই হোপ। ডেভিড ওয়ার্নারের ক্যাচ তুলে নেন সিমরন হিতমার।
এরপর ক্যারিবীয় গতি দানবদের বোলিংয়ে সামনে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন স্মিথ। তার দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় অস্ট্রেলিয়া। পঞ্চ উইকেটে মার্কু স্টইনিসের সঙ্গে গড়েন ৪১ রানের জুটি। ২৩ বলে ১৯ রান করে আউট হন স্টইনিস। তার বিদায়ের পর ষষ্ঠ উইকেটে অ্যালেক্স কেরির সঙ্গে জুটি বাঁধেন স্মিথ। এই জুটিতে তারা ৬৮ রান যোগ করেন। ৫৫ বলে ৭টি চারের সাহায্যে ৪৫ রান করে ফেরেন কেরি।
এরপর সপ্তম উইকেটে নাথান কোল্টার নাইলের সঙ্গে জুটি বেঁধে ১০২ রান যোগ করেন স্মিথ। তাদের এই জুটিতে বড় সংগ্রহের পুঁজি পায় অস্ট্রেলিয়া। স্মিথ ও নাইল দুজনেই জোড়া ফিফটি তুলে নেয়ার পর সেঞ্চুরির পথে ছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য, দুজনের কেউই সেঞ্চুরির দেখা পাননি।
স্মিথ ৭৩ রানে ফিরে গেলেও একের পর এক বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ক্যারিয়ারের অভিষেক সেঞ্চুরির পথে ছিলেন নাইল। কিন্তু ইনিংস শেষ হওয়ার ১০ বল আগে কার্লোস ব্রাথওয়েটকে বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয় ক্যাচ তুলে দেন নাথান কোল্টার নাইল। তার আগে ৬০ বলে ৭৯ মিনিট ব্যাট করে আট চার ও ৪টি ছক্কায় ক্যারিয়ার সেরা ৯২ রানের ইনিংস খেলেন গড়েন নাইল।
টার্গেট তাড়া করতে নেমে শুরুতেই বিপদে পড়ে যায় উইন্ডিজ। দলীয় ৩১ রানের ব্যবধানে ফেরেন দুই ওপেনার ইভিন লুইস ও ক্রিস গেইল। তৃতীয় উইকেটে নিকোলাস পুরানকে সঙ্গে দিয়ে ইনিংস মেরামত করেন শাই হোপ। এই জুটিতে তারা ৬৮ রান যোগ করেন। ৩৬ বলে ৪০ রান করে নিকোলাস আউট হলেও ব্যাটিং চালিয়ে যান হোপ।
চতুর্থ উইকেটে সিমরন হিতমারের সঙ্গে গড়েন ৫০ রানের জুটি। ২৮ বলে ২১ রান করে ফেরেন হিতমার। বিশ্বকাপে প্রথম ফিফটি তুলে নেয়ার পর প্যাট কামিন্সের বলে ক্যাচ তুলে দেন হোপ। তার আগে ১০৫ বলে ৭টি চারের সাহায্যে গড়েন ৬৮ রানের ইনিংস। তার বিদায়ের মধ্য দিয়ে ৩৫ ওভারে ১৯০ রানে পাঁচ উইকেট হারায় উইন্ডিজ।
সাত নম্বর পজিশনে ব্যাটিংয়ে নেমে দুর্দান্ত শুরু করেন আন্দ্রে রাসেল। কিন্তু ভালো শুরুর পরও ম্যাক্সওয়েলের অবিশ্বাস্য ক্যাচে পরিনত হয়ে সাজঘরে ফেরেন রাসেল।
অনবদ্য ব্যাটিং করে দলকে জয়ের দুয়ারে নিয়ে যান অধিনায়ক জেসন হোল্ডার। সপ্তম উইকেট কার্লোস ব্রাথওয়েটকে সঙ্গে নিয়ে গড়েন ৩৬ রানের জুটি। জয়ের জন্য শেষ দিকে ২৭ বলে ৩৭ রান। খেলার এমন মুহূর্তে মিসেল স্টার্কের জোড়া আঘাত। তার বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন ব্রাথওয়েট ও হোল্ডার।
পরপর দুই উইকেট হারিয়ে চাপের মধ্যে পড়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শেষ দিকে অ্যাশলে নার্স ও শেলডন কটরিল দলের পরাজয় এড়াতে পারেনি।
আপনার মতামত জানান