বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদেরবড় সংঘর্ষ, দুই গ্রুপে আহত ৫

প্রকাশিত


যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কমিটি গঠন নিয়ে শিক্ষার্থীদের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৯টা থেকে রাত ১টা পর্যন্ত কয়েক দফায় এ সংঘর্ষ চলে। এতে প্রক্টর ড. আমজাদ হোসেনসহ কমপক্ষে পাঁচজন আহত হয়েছেন। তারা সবাই যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন।

জানা গেছে, শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে চায়ের দোকানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের শিক্ষার্থীদের কথা-কাটাকাটির জেরে এই সংঘর্ষ ঘটনা ঘটে। দফায় দফায় এই সংঘর্ষ চলে রাত ১টা পর্যন্ত।

বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, ক্যাম্পাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কমিটি দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। শিক্ষার্থীদের একটি অংশ কমিটি চায় না। এ নিয়ে গত দুই দিন ধরে এক ধরনের চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছিল। সর্বশেষ শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে একটি চায়ের দোকানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই দ্বিতীয় বিভাগের শিক্ষার্থীদের কথা-কাটাকাটি হয়। পরে প্রক্টর অফিসে ঘটনা মীমাংসার জন্য গেলে সিএসই বিভাগের উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা উভয় গ্রুপই একে-অপরের ওপর চড়াও হয়। এরপর উভয়পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। ক্যাম্পাসে কয়েক দফা ইটপাটকেল ছুড়তে থাকেন দুই পক্ষের শিক্ষার্থীরা।


প্রত্যক্ষদর্শী সাধারণ শিক্ষার্থীরা জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি ও বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরা চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঘটনাস্থলে আসলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় এখন পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

আহত সিএসই ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী ফাহিম ফয়সাল এবং রাফিন আফসার বলেন, রাত সাড়ে ৯টার দিকে আমরা চায়ের দোকানে বৈষম্যবিরোধীর কমিটি গঠন নিয়ে আলোচনা করছিলাম। হঠাৎ করে আমাদের কোনো একটি কথায় আমাদের বিপক্ষ গ্রুপ বৈষম্যবিরোধীর শিক্ষার্থীরা আমাদের ওপর চড়াও হয়। তর্ক-বিতর্কের এক পর্যায়ে বৈষম্যবিরোধীর শিক্ষার্থীরা আমাদের ওপর প্রথমেই হামলা চালায় এবং ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। এতে পাঁচজন আহত হলে তাদের হাসপাতালে নেওয়া হয়।


বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আব্দুল মজিদ বলেন, ক্যাম্পাসে পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন রয়েছে।

উল্লেখ্য, এর আগে বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই আওয়ামীপন্থি শিক্ষক যথাক্রমে অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডক্টর ইকবাল কবির জাহিদ ও সিএসই বিভাগের অধ্যাপক ডক্টর সৈয়দ মো. গালিবকে সাময়িক বরখাস্ত করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ডক্টর গালিবের বরখাস্ত আদেশকে অবৈধ দাবি করে শুক্রবার জুমার নামাজের পর ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন সিএসই বিভাগের শিক্ষার্থীরা। রাতে শিক্ষার্থীদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের পেছনে এ ঘটনারও সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন।

আপনার মতামত জানান