অছাত্রদের দিয়েই চলছে সোনারগাঁ উপজেলা ছাত্রলীগ

প্রকাশিত



দেশের প্রাচীনতম ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলা শাখার দায়িত্বে বয়স্ক ও অছাত্ররা। দীর্ঘদিন ধরে পদ আগলে থাকায় নতুন নেতৃত্ব আসছে না উপজেলা ও ইউনিয়ন কমিটিতে।

২০১৫ সালে গঠন করা কমিটি বিলুপ্ত করে এক বছর চার মাস আগে উপজেলা ছাত্রলীগের দুই সদস্যের কমিটি গঠন করার পর তাদের তিন মাসের সময় বেধে দিয়ে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সংগঠনের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে কোনো কমিটিই করতে পারছে না ছাত্রলীগ।

সংগঠন সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালের ৮ আগস্ট নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাফায়েত আলম সানি ও সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান সুজন গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হিসেবে হাসান রাশেদ ও সাধারণ সম্পাদক রাসেল মাহমুদের নাম ঘোষণা করেন। দুই সদস্যের এ কমিটি গঠন করার সময় তাদের তিন মাসের সময় বেঁধে দিয়ে ১০টি ইউনিয়ন, বিভিন্ন ওয়ার্ড ও উপজেলার পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করার নির্দেশ দেওয়া হয়।

জেলা কমিটির নেতাদের এ নির্দেশের পর এক বছর চার মাস পেরিয়ে গেলেও উপজেলা, ইউনিয়ন এমনকি একটি ওয়ার্ডেও কমিটি গঠন করতে পারেনি বর্তমান কমিটি। সংগঠনের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে সাংগঠনিক কার্যক্রম একেবারেই নেই। মাঝেমধ্যে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বিভিন্ন ইউনিয়নে গিয়ে সভা করলেও সংগঠনের একাংশ তাঁদের সভা বর্জন করে আসছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, ১৯৯৬ সালে এসএসসি পাস করা আবু হাসান তার নাম পরিবর্তন করে হাসান রাশেদ নামে সোনারগাঁ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি পদ বাগিয়ে নেন। তার বর্তমান বয়স ৪২ বছর।

অন্যদিকে মো. রাসেল এসএসসির গন্ডি পেরুতে না পারলেও দুই সন্তানের জনক রাসেল মাহমুদ নামে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক পদে আসীন হয়। কমিটিতে পদ পাওয়ার পরপরই সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি ও বিভিন্ন অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়ে। ইতিমধ্যে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি ও অন্যের জমি দখলের অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা করেছে ভুক্তভোগীরা। জানা যায়, ২০১৫ সালে গঠিত সোনারগাঁ উপজেলা ছাত্রলীগের ৭১ সদস্যের মধ্যে বর্তমানে ৬৫ জনই বিবাহিত।

এ ব্যাপারে উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রাসেল মাহমুদ বলেন, বিবাহিত ও অছাত্রদের হাত থেকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সোনারগাঁ উপজেলা শাখাকে মুক্ত করে নতুন কমিটি দিয়ে স্বক্রিয় করার দাবি জানাচ্ছি। বর্তমানে দুই সদস্যের এ কমিটির কারোরই ছাত্রত্ব নেই। কমিটি না থাকায় দল ক্ষমতায় থাকার পরও সাংগঠনিকভাবে স্থবির হয়ে রয়েছে ছাত্রলীগের সব ধরনের কার্যক্রম।

তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হাসান রাসেল বলেন, তাঁরা চান কমিটিতে প্রকৃত ছাত্ররা স্থান পাক। কোনো দাগি সন্ত্রাসী ও অছাত্রদের দিয়ে তাঁরা কমিটি গঠন করবেন না।

নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাফায়েত আলম সাদি বলেন, সোনারগাঁয়ের ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন প্রক্রিয়াধীন। প্রকৃত ছাত্র নেতারাই যেন কমিটিতে স্থান পায় সে লক্ষে আমরা কাজ করছি।

আপনার মতামত জানান