৭ ভাইয়ের ৫ জনই মারা গেলেন সড়ক দুর্ঘটনায়

প্রকাশিত

বাবার শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠান শেষে বাড়ি ফেরার পথে পিকআপ চাপায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে পাঁচজনে দাঁড়িয়েছে। ঘটনাস্থলে চারজন ও হাসপাতালে নেওয়ার পর আরেকজন মারা যান বলে জানিয়েছেন ডুলাহাজারা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান হাসানুল ইসলাম আদর। আহত দুই ভাইবোনকে মালুমঘাট মেমোরিয়াল খ্রিস্টান হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (৮ ফেব্রুয়ারি) ভোর ৫টার দিকে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চকরিয়ায় উপজেলার মালুমঘাট বাজারের দেড়শ গজ উত্তরে নার্সারি এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন মালুমঘাট হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (ইন্সপেক্টর) সাফায়েত হোসেন।

ঘটনাস্থলে নিহত ব্যক্তিরা হলেন ডুলাহাজারা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের রিংভং সগীরশাহ কাটা হাসিনা পাড়া এলাকার মৃত ডা. সুরেশ চন্দ্র শীলের ছেলে ডা. অনুপম শীল (৪৬) এবং তার তিন ভাই নিরুপম শীল (৪০), দীপক শীল (৩৫) ও চম্পক শীল (৩০)। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যান স্মরণ সুশীল (৩২) নামের আরও এক ভাই।

দুর্ঘটনায় আহত ব্যক্তিরা হলেন রক্তিম শীল ও হীরা শীল। তারা খ্রিস্টান মেমোরিয়াল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে মালুমঘাট হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (ইন্সপেক্টর) সাফায়েত হোসেন জানান, হোমিও চিকিৎসক সুরেশ চন্দ্র শীল ১০ দিন আগে মারা যান। বাবার শ্রাদ্ধ করতে সনাতন ধর্মমতে সুরেশের সাত ছেলে ও এক মেয়ে ভোরবেলা ক্ষৌরকর্ম (মাথার চুল ফেলে দেওয়া) সম্পন্ন করতে হাসিনাপাড়ার তিন রাস্তার মাথায় অবস্থিত স্থানীয় মন্দিরে যান। ক্ষৌরকর্ম শেষে বাড়ি ফেরার পথে তারা একসঙ্গে রাস্তা পার হচ্ছিলেন। এসময় কক্সবাজারমুখী নম্বরবিহীন একটি পিকআপ তাদের চাপা দিলে তারা সবাই গুরুতর আহত হন।

তিনি আরও জানান, তাদের উদ্ধার করে স্থানীয় মালুমঘাট খ্রিস্টান হাসপাতালে নিলে চারজনকে মৃত ঘোষণা করা হয়। অপরজন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান। ওই গাড়িটি এখনো শনাক্ত করা যায়নি। মরদেহ পরিবারের কাছে রয়েছে।

মালুমঘাট এলাকার বাসিন্দা ডুলাহাজারা ইউপি নির্বাচনে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী এম আর মাহবুব জানান, দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়া থেকে মালুমঘাট এসে বসতি গড়ার পর হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক হিসেবে সেবা দিতেন সুরেশ চন্দ্র শীল। তার ছেলেরা কুতুবদিয়ায় থেকে বাবা-মায়ের কাছে আসা-যাওয়া করতেন। ১০ দিন আগে ডা. সুরেশ পরলোকগমন করেন। বাবার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া ও শ্রাদ্ধ করতে সন্তানরা পরিবারসহ রিংভং বাবার বাসায় অবস্থান করছিলেন।

ডুলাহাজারা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান হাসানুল ইসলাম আদর বলেন, ‘ঘটনাটি হৃদয়বিদারক। পাঁচ ভাইয়ের সৎকারে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হচ্ছে।’

রোববার (৬ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১১টার দিকে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চকরিয়ার খুটাখালী মেধাকচ্ছপিয়া এলাকায় পিকআপকে ওভারটেক করতে গিয়ে মিনিট্রাকের সঙ্গে সংঘর্ষে তিনজন নিহত হন। এসময় আহত হন অন্তত ৩০ জন।

এ ঘটনার ৩০ ঘণ্টার মাথায় চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা মালুমঘাট রিংভং এলাকায় কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দুর্ঘটনায় একই পরিবারের পাঁচ ভাইয়ের প্রাণ ঝরলো।

আপনার মতামত জানান