বগুড়ার একটি গ্রামের মানুষ টাকা পুড়ে ভাত তরকারি রান্না করছেন

প্রকাশিত

বগুড়ার চান্দাই গ্রামের গ্রামের অনেকেই টাকা পুড়ে ভাত তরকারি রাধছেন। গতকাল থেকে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করার জন্য টাকা বস্তায় করে বাড়ি নিয়ে যায়।

গ্গরামের বাসিন্দারা জানান, কাল সোমবার সকাল থেকে তারা বিলের পানিতে এবং পাড়ে টাকার টুকরোগুলো পড়ে থাকতে দেখেন। পরে আশপাশের গ্রামবাসী সেই টাকা দেখতে বিলের পাড়ে ভিড় জমায়।

জানা যায়, বগুড়ার শাজাহানপুরের জালশুকা এলাকার রাস্তায় ও ডোবায় পড়ে আছে বিপুল পরিমাণ কুচি কুচি করা টাকা। এসব টাকার মধ্যে ১০০, ৫০০ ও ১০০০ টাকার ছেঁড়া নোটও আছে।

আজ মঙ্গলবার বেলা ১১ টার দিকে শাজাহানপুর উপজেলার খোট্টাপাড়া ইউনিয়নের চান্দাই গ্রাম সংলগ্ন খাউরা বিলের পাড়ে টাকাগুলোর সন্ধান পাওয়া যায়। পরিত্যক্ত ওই টাকার একাংশ বিলের পানিতেও ডুবিয়ে রাখা হয়েছিল।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, আজ সকালে সড়কের ওপর বিপুল পরিমাণ কুচি কুচি টাকা দেখে পুলিশকে খবর দেন স্থানীয়রা। খবর শুনে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পাশের ডোবায় টাকার টুকরো ভাসছিল। এটা দেখে স্থানীয়দের সেখানে নামিয়ে দেওয়া হয়। তখন সেখানে অসংখ্য টাকার কুচি পাওয়া যায়। ওই ডোবা থেকে কয়েক বস্তা টুকরো টাকা সংগ্রহ করা হয়েছে। এর দুই বস্তা আলামত হিসেবে পুলিশ এবং এক বস্তা র‌্যাব নিয়ে গেছে।

এদিকে স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে বিষয়টি জানার পর শাজাহানপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পুলিশ প্রথমে ওই টাকার উৎস সম্পর্কে কিছুই জানতে পারেনি। একারণে সেখান থেকে কয়েক বস্তা টুকরো টাকা নমুনা হিসেবে সংগ্রহ করে পুলিশ তা থানায় নেয়।

গোয়েন্দা বিভাগের সদস্যরা এবং কয়েকজন গণমাধ্যম কর্মী খোঁজ নিয়ে নিশ্চিত হন টাকাগুলো বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিত্যক্ত অংশ। তারাই পাঞ্চিং করা টাকাগুলো পৌর কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ব্যাংক থেকে অপসারণ করে সেখানে ফেলেছে।

বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(গণমাধ্যম) সনাতন চক্রবর্তী জানান, শুরুতেই টাকাগুলো নিয়ে নানা ধরনের গুজব শুরু হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নিশ্চিত হওয়া গেছে সেগুলো বাংলাদেশ ব্যাংকের বাতিল টাকা।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংক বগুড়া শাখার নির্বাহী পরিচালক জগন্নাথ ঘোষ সংবাদ কর্মীদের জানান, বেশকিছু টাকা বাতিল এবং অপ্রচলনযোগ্য হওয়ায় তা ধবংস করা হয়(পাঞ্চিয়ের মাধ্যমে টুকরো করা)। পরবর্তীতে ওই টাকাগুলো অপসারণ করার জন্য পৌরসভাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তারা ব্যাংক থেকে টাকাগুলো অপসারণ করে সম্ভবত সেখানে ফেলেছে।

বগুড়া পৌরসভার কনজারভেন্সি পরিদর্শক মামুনুর রশিদ জানান, বাংলাদেশ ব্যাংক বগুড়া শাখার যুগ্ম ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ শাজাহান স্বাক্ষরিত চিঠি দিয়ে পৌরসভাকে জানানো হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক বগুড়া ও খুলনা শাখার বাতিল ও অপ্রচলনযোগ্য টাকাগুলো বর্জ্য হিসেবে গৃহীত হয়েছে। সেগুলো বাংলাদেশ ব্যাংক বগুড়া শাখার নির্দিষ্ট ডাস্টবিন থেকে অপসারণ করতে অনুরোধ করা হয়। গত ২০ আগষ্ট স্বাক্ষরিত এই চিঠিটি পৌরসভা ২২ আগষ্ট পাওয়ার পর গত রবিবার পৌরসভার ট্রাক যোগে তিন ট্রাক টাকার টুকরো ওই বিলের ধারে ফেলে দেয়া হয়।

আপনার মতামত জানান