পেরেক বসানো রড দিয়ে ভারতীয় সেনাদের মেরেছে চীন

প্রকাশিত

ভারত ও চীনের সেনাবাহিনীর মধ্যে গত সোমবার রাতে লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় প্রাণঘাতী সংঘর্ষে কমপক্ষে ২০ ভারতীয় সেনা নিহত হয়েছেন। ওই লড়াইয়ে চীন হাতে তৈরি অস্ত্র ব্যবহার করেছে বলে দাবি করা হচ্ছে। সে অস্ত্রের ছবি প্রকাশ পাওয়ার পর থেকে তা নিয়ে আলোচনা চলছে।

বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে জানানো হয়, গালওয়ান উপত্যকায় প্রাণঘাতী সংঘর্ষে ভারতীয় সেনা মারা যাওয়ার ঘটনায় দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছে। চীন তাদের পক্ষে কোনো হতাহতের খবর স্বীকার করেনি। সংঘর্ষে প্ররোচনা দেওয়ার জন্য দুই পক্ষই একে অপরকে দোষারোপ করেছে।

দুই দেশের মধ্যে সীমান্তের এই এলাকা ভালোভাবে চিহ্নিত নয়। এ উপত্যকার আবহাওয়া অত্যন্ত বৈরী। এর অবস্থান সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে অনেক ওপরে। এলাকাটি যে রকম ভূপ্রাকৃতিক পরিবর্তনের ঝুঁকির মুখে থাকে, যা স্পষ্ট সীমানা নির্ধারণ আরও কঠিন করে তোলে।

গতকাল বৃহস্পতিবার ভারত সংঘর্ষে চীন ব্যবহার করেছে বলে যে অস্ত্রের ছবি প্রকাশ করেছে, সেটি দেখা যাচ্ছে লোহার রডের ওপর পেরেক পোঁতা হাতে তৈরি একটি অস্ত্র। ভারতীয় সেনাবাহিনীর একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বিবিসির কাছে এই ছবি দিয়ে জানিয়েছেন, চীন গালওয়ান উপত্যকার সংঘর্ষে এই অস্ত্র ব্যবহার করেছিল।

প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক অজয় শুক্লা প্রথম এই ছবি টুইটারে দেন এবং এ ধরনের অস্ত্র ব্যবহারকে ‘বর্বরতা’ বলে বর্ণনা করেন। ছবিটি ভারতে টুইটারে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে এবং সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারকারীরা তাদের ক্ষোভ উগরে দিচ্ছে সামাজিক মাধ্যমে। তবে চীনা বা ভারতীয় কর্মকর্তারা এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

দুই দেশের মধ্যে সংঘর্ষে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার বন্ধ করার বিষয়ে চুক্তি হয়েছিল ১৯৯৬ সালে। সংঘাত যাতে ছড়িয়ে না পড়ে, তাই দুই দেশের মধ্যে বিরোধপূর্ণ সীমান্ত এলাকায় গোলাগুলি ও বিস্ফোরকের ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয় ওই চুক্তিতে।

ভারতে সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, খাড়া পর্বতের প্রায় ১৪ হাজার ফুট (৪,২৬৭ মিটার) উচ্চতায় দুই দেশের সৈন্যদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে এবং কিছু সৈন্য পা পিছলে খরস্রোতা গালওয়ান নদীতে পড়ে গেছেন, যেখানে তাপমাত্রা ছিল হিমাঙ্কের নিচে।

সাম্প্রতিক সময়ে ভারত ও চীনের মধ্যে বিতর্কিত সীমান্ত এলাকায় ছোটখাটো সংঘর্ষের ঘটনা ঘটলেও ৪৫ বছরের মধ্যে এই প্রথম দুই দেশের মধ্যে সংঘর্ষে প্রাণহানির ঘটনা ঘটল।

আপনার মতামত জানান