আসামি গ্রেপ্তার করতে পুলিশকে সহায়তা করায় নির্মমভাবে হত্যা

প্রকাশিত



আসামি ধরতে পুলিশকে সহায়তা করেছিলেন বেকারি চালক জাহিদুল ইসলামের ভাই মো. সানাউল্লাহ। আর এ ঘটনার প্রতিশোধ নিতেই জাহিদুলকে নৃশংসভাবে হত্যা করে আসামি মোহাম্মদ হোসেন ও তার সহযোগীরা। কিশোর জাহিদুল হত্যাকান্ডের দুই দিনের মধ্যেই পুলিশের তদন্তে হত্যা রহস্য উন্মোচিত হয়।

বৃহস্পতিবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. ইকবাল হোসাইন সাংবাদিকদের কাছে হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন। এ সময় তিনি জানান, গ্রেপ্তারের পর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন ঘাতক মোহাম্মদ হোসেন। তার দেওয়া জবানবন্দির ভিত্তিতে নজরুল ইসলাম (৪৪) ও সিয়াম (১৫) নামে আরো দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করে বৃহস্পতিবার আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।


পুলিশ কর্মকর্তা মো. ইকবাল হোসাইন জানান, সদর উপজেলার মাছিহাতা ইউনিয়নের দক্ষিণ জাগৎসার গ্রামের এলাছ মিয়ার চার ছেলের মধ্যে জাহিদুলসহ তিনজন চট্টগ্রামে বেকারিতে কাজ করেন। গত ১৭ রমজান ছুটিতে বাড়িতে আসে জাহিদুল। গত ২৪ এপ্রিল সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে বের হয়ে গেলে তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। পরদিন সকালে সুলতানপুরে একটি পুকুরে জাহিদুলের বিভৎস লাশ পাওয়া যায়। জাহিদুলকে জবাই করা হয়। এছাড়া তার বুক ও পেটে ছুরিকাঘাত করে ভুরি বের করে ফেলা হয়। দুই হাতের কব্জির রগ ও গোপনাঙ্গ কেটে ফেলা হয়। দুই কানের উপর থেকে নিচ পর্যন্তও কেটে ফেলা হয়।

জাহিদুলের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করা হলে ঘটনার পর তদন্তে নামে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুলিশ। প্রযুক্তির সহায়তায় দক্ষিণ জগৎসার গ্রামের মৃত আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে মোহাম্মদ হোসেন (৩৫) কে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। প্রথমে পুলিশের কাছে ও পরে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় হোসেন। তার দেওয়া জবানবন্দির ভিত্তিতে ঘটনার সঙ্গে জড়িত নজরুল ইসলাম (৪৪) ও সিয়াম (১৫) নামে দুইজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়।

ঘাতক মোহাম্মদ হোসেনের জবানবন্দির বরাত দিয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, জাহিদুলের পরিবারের সঙ্গে পূর্ব বিরোধ ছিল মোহাম্মদ হোসেনের। একটি নারী নির্যাতন আইনের মামলায় মোহাম্মদ হোসেনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে পুলিশ তাকে খুঁজছিল। হোসেনকে ধরতে জাহিদুলের বড় ভাই সানাউল পুলিশকে সহায়তা করেছিল। এ মামলায় সানাউল জেল খাটে। এটা থেকেই ক্ষুব্ধ ছিলো মোহাম্মদ হোসেন। গত ২৪ এপ্রিল সন্ধ্যায় স্থানীয় কিশোর মো. সিয়ামকে দিয়ে কৌশলে সানাউলের ছোট ভাই জাহিদুলকে ডেকে আনেন মোহাম্মদ হোসেন। পরে তাকে সুলতানপুরের একটি পুকুরের পাড়ে নিয়ে মোহাম্মদ হোসেন ও তার বন্ধু নজরুল ইসলাম সহ আরও দুইজন মিলে কিশোর জাহিদুল ইসলামকে নির্মমভাবে হত্যা করে পানিতে ফেলে দেয়।

আপনার মতামত জানান