ইউপি মেম্বার হলেন ফিলিপাইনের মেয়ে
১০ বছর আগে জুলহাসের প্রেমে পড়ে বাংলাদেশে আসেন ফিলিপাইনের তরুণি জিন ক্যাটামিন পেট্রিয়াকা। ধর্মান্তরিত হয়ে রাখেন নতুন নাম। এরপর জুলহাসকে বিয়ে করে সংসার পাতেন ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া উপজেলার রাধাকানাই ইউনিয়নে।
এলাকাবাসী অনুরোধে দ্বিতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচনে সংরক্ষিত (১, ২ ও ৩ নম্বর) ওয়ার্ডে সদস্য প্রার্থী হন জেসমনি। বৃহস্পতিবার (১১ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত নির্বাচনে দ্বিগুণের বেশি ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। মাইক প্রতীকে তিনি ভোট পান চার হাজার ৪৯৬ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বক প্রতীকের শিমু আক্তার পান এক হাজার ৮৩৭ ভোট।
জিন ক্যাটামিন পেট্রিয়াকা পড়াশোনা করেছেন সেখানকার নামি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিশারিজ বিভাগে। গ্রাজুয়েশন সম্পন্নের পর সিঙ্গাপুরে চাকরি করতে গিয়ে পরিচয় হয় বাংলাদেশি তরুণ জুলহাস উদ্দিনের সঙ্গে। পরিচয় থেকে প্রেম, এরপর বিয়ে।
২০১০ সালে পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে হয় ফিলিপাইনের মেয়ে বর্তমানে বাংলাদেশের নাগরিক জিন ক্যাটামিন পেট্রিয়াকা। তিনি খ্রিস্টান থেকে মুসলিম হওয়ার পর নাম রাখেন জেসমিন আক্তার জুলহাস। জন্মসূত্রে ফিলিপাইনের নাগরিক হলেও বিবাহসূত্রে বাংলাদেশের নাগরিক জেসমিন আক্তার জুলহাস। জিন ক্যাটামিন জুলহাসের প্রেমের টানে মা বাবা ছেড়ে চলে আসেন ১০ বছর আগে বাংলাদেশে। তাদের সংসারে এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।
বিজয়ী হওয়ার পর জেসমিন গ্রামের রাস্তায় বেরোলেই উৎসুক মানুষ তাকে দেখতে ভিড় করছেন। তার মুখে ইংরেজি কথা শুনে অনেকেই আনন্দ প্রকাশ করেন। স্বামী জুলহাস মিয়া দোভাষী হিসেবে সাধারণ মানুষের কথা ইংরেজিতে অনুবাদ করে বুঝিয়ে দেন জেসমিন আক্তারকে।
ফুলবাড়িয়া উপজেলার রাধাকানাই ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের দবরদস্তা গ্রামের আব্দুস সামাদ মণ্ডলের ছেলে জুলহাস। ১৯৯৮ সালে সিঙ্গাপুরের একটি কোম্পানিতে চাকরি করার সময় সহকর্মী জিন ক্যাটামিন পেট্রিয়াকার সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে চাকরি ছেড়ে জুলহাস বাংলাদেশ চলে আসেন, জিন ক্যাটামিন পেট্রিয়াকাও তার দেশে ফিলিপাইনে চলে যান। দুজনের ফোনে তাদের যোগাযোগ ছিল।
২০১০ সালে পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের আগে ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলাম গ্রহণ করলে জিন ক্যাটামিন পেট্রিয়াকার নতুন নাম হয় জেসমিন আক্তার জুলহাস। বাংলাদেশে আসার পর তিনি এ দেশের নাগরিকত্ব পান। তাদের সংসারে এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।
জুলহাস জানান, জেসমিন মানুষকে নানাভাবে উপকার করার চেষ্টা করেন। তার ভেতর নেতৃত্বের গুণ রয়েছে। তাই এলাকাবাসীর অনুরোধে মেম্বার প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন জেসমিন।
জিন ক্যাটামিন পেট্রিয়াকা জেসমিন আক্তার জুলহাস বলেন, আমার স্বামী জুলহাসের জন্য নিজের দেশ ও বাবা-মাকে ছেড়ে বাংলাদেশ ছুটে আসি। এ দেশের মানুষের সেবা করার সুযোগ পেয়ে আমি আনন্দিত, এলাকার গরীব মানুষের জন্য কিছু করতে চাই।
আপনার মতামত জানান