যেভাবে স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে ওজন বাড়াবেন
ওজন কমানো নিয়েই কম বেশি সবাই সচেতন। কিন্তু যাদের ওজন কম বা আন্ডারওয়েট তারা ওজন বাড়ানোর জন্য কী করবে এই বিষয় আলোচনা কম হয়। তবে সবার প্রথমে জানতে হবে কারা আন্ডারওয়েট। বিএমআর (বেসাল মেটাবলিক রেট) এবং বিএমআই (বডি মাস ইনডেক্স) এই দু’টি শরীরের মেটাবলিজ়মের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। এই দু’টির মাত্রার উপরে নির্ভর করবে আপনি আন্ডারওয়েট কি না। একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের বিএমআই ১৮ থেকে ২৪-এর মধ্যে থাকলে স্বাভাবিক।
তবে ডায়েটিশিয়ানরা বলছেন, এই প্যারামিটারকে নির্দিষ্ট করে ধরা যাবে না। ফ্যাট সোর, মাসল মাস কতটা বা ক্রনিক অসুখ আছে কি না তা দেখে ডায়েট চার্ট তৈরি করতে হবে। এ ছাড়া একজন মানুষের জিনগত গঠন, শারীরিক গঠন, লাইফস্টাইলের উপরেও অনেক কিছু নির্ভর করে।
ওজন বাড়াতে কী খাবেন:
১.কার্বস ও প্রোটিন আগের চেয়ে বেশি মাত্রায় খেতে পারেন। তবে কারও বিএমআর-এর উপরে নির্ভর করবে তার কতটা খাদ্য প্রয়োজন।
২.খাদ্যতালিকায় খেজুর, কাজু, আমন্ড, পেস্তা, ওয়ালনাটের মতো ড্রাই ফ্রুটস রাখুন।
৩. মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, ছানা এবং ফলের মধ্যে কলা রাখুন রোজকার তালিকায়। ছোলা, রাজ়মা-সহ বিভিন্ন ধরনের ডাল প্রায় প্রতিদিন খাওয়ার চেষ্টা করুন।
৪.চিজ খাওয়ার পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে পারেন। সকালে চিজ়, পিনাট বাটার, ক্যারামেল স্প্রেড দিয়ে ব্রেড খেতে পারেন। কোনও সমস্যা না থাকলে গরম ভাতে মাখন বা ঘি দিয়েও খাওয়া যায়।
কিছু ভুল ধারণা
প্রোটিন শেক বা সাপ্লিমেন্ট খাওয়ার আগে ডায়েটিশিয়ানের পরামর্শ নিন। জাঙ্কফুড খেলে ওজন বাড়বেই। কিন্তু সেটা একেবারেই স্বাস্থ্যসম্মত নয়। হুট করে ওজন বাড়া বা কমা কোনওটাই ভাল নয়। এতে অন্য অসুস্থতা তৈরি হতে পারে। ওজন বাড়াতে অনেক খেয়ে নিলাম আর এ দিকে কোলেস্টেরল বা হজমের সমস্যা দেখা দিল, এমন না হয়। আবার ওজন বাড়ানোর জন্য ব্যায়াম বাদ দিতে হবে বিষয়টা এমনও না।
শিশুদের ক্ষেত্রে
আঠেরো বছরের আগে বিএমআই মাপা হয় না। কারণ তত দিন পর্যন্ত উচ্চতা বাড়ে। সেক্ষেত্রে চিকিৎসকেরা ছোটদের ক্ষেত্রে গ্রোথ চার্ট মেনটেন করতে বলেন। অনেক বাবা-মা সন্তান খুব রোগা বলে চিন্তিত হয়ে পড়েন। শিশু চিকিৎসকেরা বাচ্চাদের ওজনের চেয়েও সুস্থতার উপরে বেশি জোর দেন। গ্রোথ চার্ট অনুযায়ী শিশু আন্ডারওয়েট হলে দেখতে হবে তার অন্য শারীরিক সমস্যা আছে কি না। ছ’-সাত মাস ধরে শিশুর ওজন-উচ্চতা যদি না বাড়ে, তা হলে চিকিৎসককে জানান। শিশুর খাদ্যতালিকাতেও কার্বস-প্রোটিনের ব্যালান্স থাকা জরুরি। দুধ, ডিম, মাছ, মাংস, ফল সবই যেন থাকে সেখানে। আবার বাচ্চা রোগা বলে একনাগারে চকলেট, জাঙ্ক ফুড খাওয়ার অনুমতি দেবেন না।
হঠাৎ খাওয়া বাড়িয়ে দেওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। এমন যেন না হয়, অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে সুগার, কোলেস্টেরল, বদহজমের সমস্যা বেড়ে যায়।
সূত্র: আনন্দবাজার
আপনার মতামত জানান