৯৯৯ এ কল দিয়ে প্রাণে বাঁচলেন অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ

প্রকাশিত

৯৯৯ এ কল দিয়ে প্রাণে বাঁচলেন পলাশের অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ সাবরিনা। নরসিংদীর পলাশে যৌতুকের জন্য অমানবিক নির্যাতনের শিকার হয়ে দুই সন্তানের জননী সাবরিনা শাজাহান (৩২) অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে ৯৯৯ এ কল দেন।

পরে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে পলাশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য পাঠায়। এ সময় অভিযুক্ত নজরুল ইসলাম পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যায়।

এ ব্যাপারে মঙ্গলবার রাতে পলাশ থানায় একটি অভিযোগ দেওয়া হয়। এর আগেও একাধিকবার অসহায় ওই গৃহবধূর ওপর নির্যাতন করেন তার স্বামী নজরুল ইসলাম (৩৫)।

থানায় অভিযোগ সূত্রে ও নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ সাবরিনার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রায় ১১ বছর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সুবাদে পরিচয় হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার বড়কান্দি গ্রামের আবদুল আজিজ মিয়ার ছেলে নজরুল ইসলামের সঙ্গে। সেই পরিচয় থেকে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন তারা। একপর্যায়ে সেই সম্পর্ক রূপ নেয় বিয়ের বন্ধনে।

সংসার জীবনে তাদের এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। বর্তমানেও তিনি ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। বিয়ের পর থেকেই যৌতুক লোভী নজরুল ইসলাম বিভিন্ন বাহানায় সাবরিনার পরিবারের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা এনে দিতে বাধ্য করে।

সন্তানের সুখের দিকে চেয়ে সাবরিনার পরিবারও একাধিকবার নজরুল ইসলামের চাহিদা অনুযায়ী টাকা দিয়েছে। গত বছরও ফের নজরুল ইসলাম টাকা এনে দেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করলে স্বামীর মন রক্ষার্থে সাবরিনা তার ফুফু লুৎফুর নাহারের হাতে পায়ে ধরে ৬ লাখ টাকা এনে দেয়।

এর পর গৃহবধূ সাবরিনার পরিবারের কাছ থেকে আবারও ১০ লাখ টাকা এনে দেওয়ার জন্য প্রায় ৫ মাস ধরে চাপ প্রয়োগ করতে থাকে নজরুল। কিন্তু তার দাবিকৃত ১০ লাখ টাকা এনে দিতে অস্বীকৃতি জানালেই অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ সাবরিনার ওপর শুরু হয় অমানবিক নির্যাতন।

সর্বশেষ সোমবার রাতে নজরুল ইসলামের দাবিকৃত ১০ লাখ টাকা এনে দেওয়ার জন্য পলাশ নতুন বাজার এলাকায় নজরুল ইসলামের ভাড়া বাসায় গৃহবধূ সাবরিনার ওপর অমানবিক নির্যাতন শুরু করলে তিনি প্রাণে বাঁচার জন্য ৯৯৯ এ কল দেয়।

তথ্যটি নিশ্চিত করে পলাশ থানার ওসি শেখ মো. নাসির উদ্দীন জানান, ৯৯৯ থেকে কল আসার পর থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে গৃহবধূ সাবরিনাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠাই। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সূত্রঃ যুগান্তর

আপনার মতামত জানান