৩৫ পরিবার ও শিক্ষার্থীরা অবরুদ্ধ প্রভাবশালীর কাঁটাতারে

প্রকাশিত

প্রভাবশালীর কাঁটাতারের বেড়ায় ভূমিহীন ৩৫টি পরিবার অবরুদ্ধ হয়ে আছে। গত ৪ দিন যাবত কাঁটাতারের বেড়ায় বন্দী থাকায় মানবেতর জীবন-যাপন করছেন প্রায় ৫শতাধিক মানুষ। ঘটনাটি লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার ডাউয়াবাড়ী ইউনিয়নের খুর্দ্দ বিছনদই এলাকায়।

প্রভাবশালীর এমন কর্মকাণ্ডে শতাধিক স্কুল পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীরাও যেতে পারছেনা তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৮৮ সালের বন্যার পরে তিস্তা নদীর গর্ভে বসত বাড়ি হারিয়ে জেলা পরিষদের পরিত্যক্ত সড়কে পাশে আশ্রয় নেয় ঐ পরিবারগুলো। হঠাৎ করে ৫ দিন আগে ভোটমারী এলাকার প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম মোর্ত্তুজা হানিফ ওই ভূমিহীন ৩৫ পরিবারকে উচ্ছেদ করার জন্য বাড়ির সামনের রাস্তায় কাঁটাতারে বেড়া দিয়ে বন্ধ করে দেয় এবং তিনি দাবি করেন ওই রাস্তার জমি জেলা পরিষদের না, তার নিজের জমি।

জামিলা বেওয়া বলেন, ‘হামরা নদী ভাঙ্গা মানুষ অন্য জায়গা নাই হামার। বাড়ির সামনোত কাঁটাতারের বেড়া দিছে এলা কোনটে যাই? কাঁটাতারের বেড়া দিছে চিইলবার পাচ্ছি না।’

ভুক্তভোগী ভূমিহীন আক্কাস আলী, নরেশচন্দ্র, জবেদা বেগমসহ অনেকেই বলেন, ‘সরকারি জমি দখল করে কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে আমাদের রাস্তা বন্ধ করছে। বাড়ি থেকে বেড় হওয়া যায় না কাঁটাতারের বেড়ার কারণে। আমাদেরকে প্রতি রাতেই গোলাম মোর্ত্তুজা হানিফের লোকজন বিভিন্নভাবে ভয় দেখায়। এই জায়গা থেকে অন্যজায়গায় বাড়ি নিয়ে চলে যেতে বলছে। আমরা তো নদীতে আমাদের সবকিছু হারিয়ে প্রায় ৪০ বছর ধরে এই সড়কে বাড়ি করে আছি। এখন আমরা কোথায় যাবো।’

এ বিষয়ে ডাউয়াবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ এর চেয়ারম্যান রেজ্জাকুল ইসলাম কায়েত জানান, সড়ক দিয়ে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া হয়েছিলো তা আমি খুলে দিয়েছি। এখন আবার কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া হয়েছে কিনা তা আমার জানা নাই।

জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মতিয়ার রহমান জানান, জেলা পরিষদের পরিত্যক্ত সড়কে প্রায় ৪০ বছর থেকে নদী ভাঙ্গা অসহায় পরিবারগুলো আশ্রয় নিয়ে আছে। জেলা পরিষদ থেকে তাদের উচ্ছেদ করার কোন প্রশ্ন উঠে না। তবে পাশ দিয়ে ছোট রাস্তা হলে হয়তো পরিবারগুলোর সামান্য জমি ছাড়তে হবে।

জেলা প্রশাসক এর নির্দেশে কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার রবিউল হাসান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সাংবাদিকদের জানান, কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে কাউকে অবরুদ্ধ করে রাখা উচিত হয়নি। আর যে স্থানে কাঁটাতারের বেড়া দিয়েছে, সেই জায়গা জেলা পরিষদের হবে, তবে পুনরায় মাপার জন্য জেলা পরিষদের সার্ভেয়ারকে বলা হয়েছে।

আপনার মতামত জানান