সোনারগাঁয়ে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ গোপন রাখছে জনপ্রতিনিধিরা

প্রকাশিত


ডেইলি সোনারগাঁ >>
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলায় করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর থেকে আজ শুক্রবার পর্যন্ত সরকার সাড়ে ৫৬ টন চাল বরাদ্দ দিয়েছে বলে জানা যায়। সরকারের ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দকৃত এ চাল অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সোনারগাঁয়ের ইউএনও প্রতিটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের নামে বরাদ্দ দিয়ে স্ব স্ব ইউনিয়নে পৌঁছে দিয়েছেন।

কিন্তু সরকারের এ ত্রানের বিষয়টি গোপন রেখে চেয়ারম্যান, মেম্বাররা নিজস্ব অর্থায়নে কর্মহীন অসহায় মানুষদের সাহায্য করছেন বলে মিডিয়ায় প্রচার করার অভিযোগ উঠেছে। এতে জনগণের কাছে সরকারের অনুদান ও প্রধানমন্ত্রীর মানবতাকে হেয় করা এবং সরকারের ভাবমূর্তিকে ক্ষুন্ন করা হচ্ছে বলে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা অভিমাত পোষন করেছেন। বিশেসজ্ঞরা জানান, জনপ্রতিনিধিদের উচিৎ সরকারের ত্রাণ সরকারের নামেই উপকারভোগীদের হাতে পৌছে দেয়া।

সুত্র জানায়, ৫৬ টন চাল ৫ কেজি করে একজন দুস্থ মানুষের মধ্যে বিতরণ করলে পুরো উপজেলায় ১১,৩০০ জন মানুষের মধ্যে বিতরণ করা সম্ভব। অথচ সোনারগাঁয়ের একজন প্রতিথযশা সাংবাদিক তার ফেসবুক ওয়ালে লিখেছেন, ‘প্রতিদিন বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে অসংখ্য মানুষ গণমাধ্যমকর্মী হিসেবে ফোন করে আমাদের কাছে জানতে চান ‘সোনারগাঁয়ে কি কোনো সরকারি ত্রাণ বরাদ্দ আসেনি’? প্রশ্নকারীদের যখন বলা হয় কেন এ প্রশ্ন করছেন? তখন অপর প্রান্ত থেকে বলা হয় ‘সোনারগাঁয়ের প্রতিটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রচার করছে যে তারা ব্যক্তিগত ফান্ড থেকে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করছেন’।

তিনি আরও লিখেন, ‘গণমাধ্যমকর্মী হিসেবে কাঠগড়ায় দাড় করিয়ে যখন পাঠক বলেন, সরকারি বরাদ্দের কোনো খবর কোনো মিডিয়াতে আসল না কেন? এ প্রশ্নের জবাবে আমাদের উত্তর একটাই, এখন পর্যন্ত যে পরিমাণ সরকারি বরাদ্দ এসেছে তার পুরোটাই গোপন রাখা হয়েছে। শুধুমাত্র আত্মপ্রচারের জন্য কোনো চেয়ারম্যান গণমাধ্যমকর্মীদের বলেননি যে এগুলো সরকারি ত্রাণ! যে পরিমাণ অর্থের ত্রাণ দেওয়া হয়েছে তারচেয়ে বেশি অর্থ খরচ করা হয়েছে শুধুমাত্র প্রচারের কাজে। সরকারি কোনো ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করার সময় দুস্থরা ঠিকমত পেল কিনা এ জন্য একজন সরকারি কর্মকর্তাকে ইউনিয়ন পরিষদে তদারকি কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। কিন্তু বর্তমানে সরকারি ত্রাণ কে পেল আর এসব ত্রাণ কাদের মধ্যে বন্টন হচ্ছে তার জন্য কোনো তদারকি কর্মকর্তা নেই!

বর্তমান দুর্যোগ সময়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরকারি ত্রাণ আত্মসাৎ করার যে খবর বের হচ্ছে তা দেশে জাতি হিসেবে আমরা লজ্জিত, দু:খিত, মর্মাহত! সরকারি ত্রাণ নিজের ব্যক্তিগত বলে প্রচার চালিয়ে যারা সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে তারা কি জবাবদিহিতার বাইরে থাকবে।’

বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিন ঘুরে লকডাউনে থাকা কর্মহীন মানুষের সাথে কথা বললে তারার জানান, সরকার লকডাউন ঘোষনা করেছে অথচ আমাদের হাড়িতে একমুঠো চালের ব্যবস্থা করেনি। তারা বলেন, সরকার নয় মেম্বার চেয়ারম্যানরা বলেছেন তাদের নিজের পকেটের টাকায় আমাদের জন্য সামান্য সহযোগিতা করেছে।

এ ব্যাপারে সোনারগাঁয়ে নিম্নবিত্ত মানুষের সাথে কথা বললে তারা জানান, আমরা প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ উপহার পেয়েছি। খিবাবে পেলেন জানতে চাইলে তারা জানান, সোনারগাঁয়ের টিএনও স্যার আমাদের হাতে ত্রাণ দিয়ে বলেছেন, এটা আপনাদের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহার।

সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম জানান, আমি সাধ্যমত মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহার ঘরে ঘরে পৌছে দিয়েছি। যেহেতু এলাকাটি অনেক বড় তাই প্রতি ঘরে ঘরে আমি একা ত্রাণ দিতে গেলে অনেক সময়ের প্রয়োজন তাই সবার ঘরে আমি ত্রাণ পৌছে দিতে পারিনি।

 

আপনার মতামত জানান