সোনারগাঁয়ে করোনা যুদ্ধে প্রশংসিত তাঁরা

প্রকাশিত



করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার মানুষের মাঝে জনসচেতনা বৃদ্ধির লক্ষে দুর্বার গতিতে ছুটে চলেছেন স্থানীয় এমপি, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক ও সোনারগাঁয়ে কর্মরত প্রশাসনের কর্মকর্তারা। উপজেলাবাসীকে খাদ্য সামগ্রী সহায়তা, স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও আইন শৃঙ্খলা নিশ্চিত করণে এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা, সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আল মামুন ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক ইঞ্জি.মাসুদুর রহমান মাসুম দিনরাত কাজ করে চলেছেন।

করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে এমপি খোকা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় জনসচেতনতা কাযক্রম, কর্মহীন মানুষের খাদ্য সহায়তা, অসচ্চল জনগোষ্ঠির জন্য ফ্রী এ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস, লডডাউনে থাকা পরিবারের জন্য খাদ্য সহায়তা এবং করোনা রোগীদের জন্য বিশেষ সেবা এবং মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য খাদ্য সহায়তা প্রদানের জন্য হটলাইন ব্যবস্থা করে প্রশংসিত হচ্ছেন।

সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম ও উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভুমি) আল মামুন এবং উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা পলাশ কুমার সাহার নেতৃত্বে উপজেলা, স্বাস্থ্য বিভাগ ও প্রশাসনের কার্যক্রম প্রশংসিত হয়ে উঠছেন উপজেলাবাসীর কাছে। সোনারগাঁয়ে প্রশাসনের সহযোগিতায় সরকারি, বিভিন্ন ব্যক্তি ও সামাজিক সংগঠণের মাধ্যমে কর্মহীন পরিবারে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে। তারা প্রতিনিয়ত কর্মতৎপরতার মধ্যে সরকারি নির্দেশনার আলোকে এলাকার জনপ্রতিনিধি, সমাজসেবক ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সাথে করোনা বিষয়ক সচেতনতামূলক মতবিনিময় অব্যাহত রেখেছেন।

এ ছাড়া এলাকাভিত্তিক ব্যক্তি উদ্যোগে করোনায় কর্মহীন হয়ে পড়া পরিবারের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণকারীদের করোনা সচেতনতা ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলাচলের নির্দেশনাও প্রদান করছেন।

প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপজেলার গ্রামের মানুষকে সচেতন করতে এলাকায় এলাকায় মাইকিং ও জীবানুনাশক স্প্রেও করছেন। উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজারে জনসমাগম এড়ানোর জন্য কয়েকটি বড় বাজার খোলা মাঠে স্থানান্তর করেছেন। স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানে সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করতে উদ্বুদ্ধ করেছেন। এ ছাড়া উপজেলার সকল সাপ্তাহিক হাট বন্ধ রেখেছেন।

অন্যদিকে গ্রাম পর্যায়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কার্যালয়ে কর্মরত ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী ও কমিউনিটি ক্লিনিকের কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইটারদের মাধ্যমে সচেতনতামূলক কার্যক্রম অব্যহত রয়েছে বলে জানা গেছে।

সোনারগাঁয়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত পরিবারসহ লকডাউনে থাকা পরিবারে প্রশাসনের পক্ষ থেকে খাদ্য সহায়তা প্রদান করেছেন। ওইসব পরিবারে থাকা শিশুদেরও খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে লকডাউনে থাকা ওইসব পরিবারে নিয়মিত খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে।
পাশাপাশি মহামারি করোনা যুদ্ধেও এলাকার আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সমুন্নত রাখতে দিনরাত নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন উপজেলা ও পুলিশ প্রশাসন।

সোনারগাঁ থানার ওসি মনিরুজ্জামানের নেতৃত্বে পুলিশ দিনরাত কাজ করে চলেছেন। করোনা পরিস্থিতিতে পুলিশের ভূমিকা প্রশংসিত।

অন্যদিকে সোনারগাঁয়ে রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠণ ও ব্যক্তি উদ্যোগে বিভিন্ন প্যাকেজে যারা ত্রাণ বিতরণ করছেন তাদেরকে মোবাইল ফোনে উৎসাহিত ও অনুপ্রেরণা দিচ্ছেন উপজেলা প্রশাসন।
সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক ও পিরোজপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইঞ্জি. মাসুদুর রহমান মাসুম শুরু থেকেই করোনা যুদ্ধে সম্মুখযোদ্ধা ও মানবসেবক হিসেবে ইতিমধ্যে সারা দেশে প্রশংসিত হয়েছেন। তিনি সকাল থেকে গভীর রাত পযন্ত মানব সেবার নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন। তিনি তার ইউনিয়ন সহ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে নিজের অর্থায়নে এ পযন্ত প্রায় ২০হাজার পরিবারে খাদ্য সহায়তা প্রদান করেছেন। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর উপহার জনগণের মাঝে সুষম বন্টন করে প্রশিংসিত হয়েছেন। তিনি সোনারগাঁ পুলিশ প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন, সাংবাদিক ও স্বেচ্ছাসেবকদের স্বাস্থ সুরক্ষায় পিপিই উপহার দিয়েছেন। তিনি গত ৫ মে সদ্যভুমিষ্ট সন্তান বিক্রি করতে চাওয়া এক মা ও তার ৪ সন্তানের ভরন পোষনের দায়িত্ব গ্রহন করেছেন।

স্থানীয়রা জানান, ইউএনও, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, এসিল্যান্ড ও ওসি তারা সরকারি কর্মকর্তা হয়েও মানব সেবায় ও সামাজিক কর্মকাণ্ডে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছেন। তারা যোগদান পরবর্তী কর্মগুণে এলাকার মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছেন।

সোনারগাঁ থানার ওসি মনিরুজ্জামান বলেন, করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে সকলকে সচেতন থাকতে হবে। এ যুদ্ধ আমাদের একার না। পুলিশ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে উপজেলাবাসীকে সচেতন রাখতে কাজ করে চলেছেন।

সোনারগাঁ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আল মামুন বলেন, সম্প্রতি সোনারগাঁ যোগদান করেছি। যোগদানের পরই করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে মানুষকে সচেতন করতে মাঠে কাজ করতে হচ্ছে। সোনারগাঁবাসীকে বলবো আপনারা যত সম্ভব ঘরে থাকুন। সরকারি সকল আইন মানুন। আমরা আপনাদের পাশে আছি।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. পলাশ কুমার সাহা বলেন, করোনাভাইরাস সারা দেশে মহামারি আকার ধারণ করেছে। এ অবস্থায় উপজেলাবাসীকে সচেতন ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে উপজেলা প্রশাসনের সমন্বয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সচেতনতামূলক কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন।


সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম জানান, উপজেলা ও পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকার পাশাপাশি উপজেলাবাসীর ভূমিকাও অনেক। প্রশাসনের পক্ষ থেকে অসহায় কর্মহীন পরিবারে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। এ ছাড়া রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠন ও ব্যক্তি উদ্যোগে সোনারগাঁয়ে কর্মহীন পরিবার, বেদে পরিবার ও তৃতীয় লিঙ্গের মাঝে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। কৃষি ও কৃষকের পাশে থেকে তাদের একটি ধানও যেন নষ্ট না হয় এজন্য স্বেচ্ছাশ্রমে ধান কাটার ব্যস্থা করেছি।প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের সার্বিক সহযোগিতা ও উৎসাহ যোগানো হচ্ছে। সরকারি সাহায্য অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান।

সোনারগাঁয়ের এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা বলেন, সোনারগাঁ উপজেলা নারায়ণগঞ্জের খুব কাছে থাকায় আমাদের খুব সতর্ক থাকবে হবে। সোনারগাঁয়ে লকডাউন নিশ্চিত করতে ইতিমধ্যে আমি জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের বরাবর চিঠি দিয়েছে। সোনারগাঁবাসী যাতে অনাহারে না থাকে তার জন্য প্রতিনিয়ত বিভিন্ন এলাকায় খাদ্য সহায়তা অব্যাহত রেখেছি।ইতিমধ্যে আমার নেতাকর্মীরা কৃষকের ধান কেটে ঘরে তুলছে। আমি এমপি নয় সোনারগাঁবাসীর সেবক হয়ে থাকতে চাই।

আপনার মতামত জানান