লক্ষ্যহীনভাবে খেলছে বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানরা : ম্যাকেঞ্জি

প্রকাশিত

জাতীয় দল যখন পাকিস্তান সফরে আছে, তখন ব্যাটিং কোচ নেইল ম্যাকেঞ্জি বসে আছেন ঢাকায়। নিরাপত্তার কারণে অন্যান্য কোচিং স্টাফদের সঙ্গে তিনি যাননি। তবে দলের করুণ অবস্থায় যারপরনাই হতাশ তিনি। আজ মিরপুরে তাকে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে। জবাবে তিনি সোজা ব্যাটে ছক্কা মেরেছেন! শিষ্যদের প্রতি রীতিমতো ক্ষোভ ঝরে পড়েছে এই সাবেক প্রোটিয়া তারকার মুখে।

পাকিস্তানে সফরে গিয়ে প্রথম দুই টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের ব্যাটিং ছিল যাচ্ছেতাই। এটা যে একটা টি-টোয়েন্টি ম্যাচ- সেটা বোঝার কোনো উপায় ছিল না। ক্ষুব্ধ ম্যাকেঞ্জি পরিস্কার বলেছেন, বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য, রানক্ষুধা কিংবা ভয়ডরহীন মানসিকতা- কোনোটাই নেই! তরুণদের মাঝে উন্নতি করার মানসিকতা নেই। দলের অনেক ব্যাটসম্যান নাকি কোনোমতে দলের সঙ্গে টিকে থাকতে পারলেই খুশি হন! তাদের লক্ষ্য থাকে পরের ম্যাচে কোনোভাবে একাদশে জায়গা করে নেওয়া! এই মানসিকতার দ্রুত পরিবর্তন চান ম্যাকেঞ্জি।

তিনি বলেছেন, ‘নিয়মিত ভালো খেলতে চাইলে আরও ক্ষুধার্ত হতে হবে। অধিকাংশ সময় পরের ম্যাচ খেলতে পারলেই অনেকে খুশি থাকে! যদি ৪০ বা ৬০ করে তাহলেই তারা সন্তুষ্ট। এটা ভুল মানসিকতা। আমি চাই এ খেলোয়াড়েরা বিশ্বের সেরা হোক অথবা অন্তত দলের সেরা ব্যাটসম্যান হোক। আমি এটাই ওদের মাথার মধ্যে ঢোকাতে চাই। আমার মনে হয় একটু হলেও উন্নতি হচ্ছে। কিন্তু ব্যাপারটা এখনো পর্যন্ত হতাশাজনক।’

ম্যাকেঞ্জি বলেন, ‘আমরা সবাই জানি যে, আমরা পারি। ক্রিকেটারদের মাঝে এই বিশ্বাসটাও আছে। কিন্তু সেটা তো মাঠে গিয়ে পারফর্ম করে দেখাতে হবে, তাই না? আপনার মাঝে রানক্ষুধা তৈরি করতে হলে ভয়ডরহীনভাবে খেলতে হবে। রাসেল (প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো) থেকে শুরু করে সবাই ক্রিকেটারদের মনে এটা ঢুকিয়ে দিতে চেষ্টা করে। কিন্তু ব্যাটসম্যানদের নিজের লক্ষ্য আগে তৈরি করতে হবে। আমরা জানি কীভাবে খেলতে হয়, কিন্তু ক্রিকেটারদের মাঝে এই বিশ্বাসটা রাখতে হবে।’

চলতি সিরিজে ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়েছে দেশসেরা ওপেনার তামিম ইকবালের ব্যাটিং। উইকেটে টিকে থাকতে তার ধীরগতির ব্যাটিং দেখে বিস্মিত হয়েছেন সবাই। দুই ম্যাচেই তিনি দলের সর্বোচ্চ স্কোরার হলেও তা কোনো কাজে আসেনি। তবে কিছু ক্ষেত্রে দলের জন্য ‘স্বার্থপর’ হওয়ারও পরামর্শ দিয়েছেন ম্যাকেঞ্জি, ‘আমি চাই দলকে জেতানোর জন্য ওদের কেউ স্বার্থপর হোক। নিজের জন্য নয়। স্বার্থপর হতে হবে ইনিংস ছুড়ে ফেলে দিয়ে না আসার ক্ষেত্রে। যদি ৮০ করতে পারি, তবে সেটাকে কেন এক শ করব না, বা ১৪০ বা দুই শ বানাব না।’

বাংলাদেশে কোনো ক্রিকেটারকে হুট করে দলে এনে আবার হুট করে বাদ দেওয়া পুরনো সংস্কৃতি। এই বাজে সংস্কৃতির পরিবর্তন জরুরি মনে করেন টাইগারদের ব্যাটিং কোচ, ‘আমি এখানে আসার পর অনেক খেলোয়াড়কে আনা হয়েছে আবার বাদ দেওয়া হয়েছে। আমার এতটা তাড়াহুড়া পছন্দ নয়। কেউই এসে চমকে দিতে পারছে না। আমাদের নাঈমের মতো কাউকে দরকার। ভারতে গিয়ে সে ৮০ রানের ইনিংস খেলেছে। প্রথম দিন ওর মাঝে জড়তা ছিল, তবু ৪০+ করেছে। কিন্তু বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের আরেকটু ধারাবাহিক হতে হবে। এছাড়া ভালো কিছু করা কঠিন।’

আপনার মতামত জানান