মায়ের দাবী, মেয়েকে হত্যা করে ফাঁসির নাটক

প্রকাশিত

আমার মেয়েটা কত আদরের ছিল। আমারে বলতো মা তোমার মতো কেউ আদর করে না। শুধু দোষ খোঁজে আর বকা দেয়। আমি এই বাড়িতে থাকব না। খবর এলো আমার মেয়ে নাকি ফাঁস নিসে। এটা হতে পারে না। আমার মেয়েরে হত্যা করে ফাঁসির নাটক সাজাচ্ছে তার শাশুড়ি। আমার মেয়ের হত্যার বিচার চাই।’

এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন শ্বশুরবাড়ি থেকে মরদেহ উদ্ধার করা ফাতেমা মরিয়ম অর্পিতার (১৭) মা বালি আক্তার। বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকা পোস্টের সঙ্গে কথা হয় তার।

নিহত অর্পিতা চাটখিল পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের শাহনেয়ামতপুর গ্রামের বেলাল হোসেনের মেয়ে এবং উপজেলার নোয়াখলা ইউনিয়নের সিংবাহুড়া গ্রামের ইতালি প্রবাসী রবিউল ইসলাম রুবেলের স্ত্রী।

জানা যায়, চলতি বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি ফাতেমা মরিয়ম অর্পিতার সঙ্গে ইতালি প্রবাসী রবিউল ইসলাম রুবেলের বিয়ের আয়োজন করে পরিবার। অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েকে বিয়ের অভিযোগে কনে ও বর পক্ষকে ৫০ হাজার করে মোট ১ লাখ টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। পরে পারিবারিক সম্মতিতে গোপনে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের কয়েক মাস পর রুবেল ইতালি চলে যান। শাশুড়ির সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে মনোমালিন্য হলে অর্পিতা তার স্বামী রুবেলকে ও তার পরিবারকে বিষয়গুলো জানাতো।

অর্পিতার বাবা বেলাল হোসেন বলেন, আমার মেয়ের শ্বশুর ফারুক আহমেদ ইতালি থাকেন। গতকাল রাত ৯টায় আমাকে কল দিয়ে বলে আপনার মেয়ে অসুস্থ দ্রুত মেয়েকে দেখতে যান। রাত সাড়ে ৩টায় আবার ফোন দিয়ে বলে আপনার মেয়ে মারা গেছে। ফাঁস দেওয়ার নাটক সাজিয়ে আমার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে।

অর্পিতার মা বালি আক্তার বলেন, আমার মেয়েকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। এর আগে মেয়েকে গর্ভধারণের চার মাসের মাথায় জোরপূর্বক গর্ভপাত করানো হয়। আমি এর বিচার চাই

চাটখিল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইমদাদুল হক বলেন, চাটখিল থানা পুলিশ খবর পেয়ে মরদেহটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। তারপর ময়নাতদন্তের জন্য ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হচ্ছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়া গেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। এখন পর্যন্ত কেউ কোনো অভিযোগ না করায় মামলা হয়নি। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহটি পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

আপনার মতামত জানান