পাক উইকেটকিপার রিজওয়ান মৃত্যুর কাচ থেকে ফিরে এলেন

প্রকাশিত

বিশ্বকাপে সেমিফাইনালের আগে হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়েন পাকিস্তানের উইকেটকিপার ব্যাটার মোহাম্মদ রিজওয়ান ও অভিজ্ঞ শোয়েব মালিক। এ দুই তারকা মাঝারি মাত্রায় ফ্লুতে আক্রান্ত বলে প্রথমে জানায় পিসিবির মেডিকেল ইউনিট। পরে তথ্য প্রকাশ হয় বুকের মারাত্মক সংক্রমণে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন রিজওয়ান। এমনকি আইসিইউতে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয় তাকে।

দুদিন পর মাঠে নেমে তার ৫২ বলে ৬৭ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলা দেখে কেউ বুঝতেই পারেননি যে, কতটা অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন রিজওয়ান। যে তাকে আইসিইউতে ভর্তি হতে হলো।এবার রিজওয়ান জানিয়েছেন, সেই ভয়াল দিনটির কথা। তিনি জানান, সেদিন যদি ২০ মিনিট দেরি করে হাসপাতালে যেতেন তহালে আর মাঠে খেলাই হতো না তার। পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে যেতেন হয়তো।

গণমাধ্যম ক্রিকেট পাকিস্তানকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানালেন রিজওয়ান। বললেন, ‘সেদিন জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার পর বুকে প্রচণ্ড ব্যাথা অনুভব করছিলাম। নিঃশ্বাস নিতে খুব কষ্ট হচ্ছিল আমার।যখন হাসপাতালে যাওয়ার পর চিকিৎসকরা বলেন, আমার শ্বাসনালি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। হাসপাতালে নিয়ে যেতে ২০ মিনিট দেরি হলে আমার শ্বাসনালি ও ফুসফুস কাজ করা বন্ধ করে দিত! আমি মারা যেতে পারতাম। সর্বশক্তিমান আল্লাহকে ধন্যবাদ।’

রিজওয়ান আরো বলেন, ‘প্রথমে তারা বলেছিল, পরদিন সকালেই আমাকে ছেড়ে দেওয়া হবে। কিন্তু আমার অবস্থা গুরুতর দেখে তারা সিদ্ধান্ত পাল্টায়। আইসিউইতে নেওয়া হয়। বলা হয় সকালে নয়, সন্ধ্যায় ছাড়া হবে। আইসিইউতে চিকিৎসকরা আমাকে ২৪ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রেখেছিলেন। আমি শুধু ভাবছিলাম, সেমিফাইনাল খেলতে পারব কি না। চিকিৎসকরা আমাকে বলেন, আমি খেলার অবস্থায় নেই। একথা শুনে আমি ঘাবড়ে যাই। তারপরও যে খেলতে পেরেছি তার জন্য সর্বশক্তিমান আল্লাহকে ধন্যবাদ।’

তাকে দ্রুত সুস্থ করে তোলার জন্য আল্লাহর পর চিকিৎসকদের ধন্যবাদ জানান রিজওয়ান। দুবাইয়ের হাসপাতালে রিজওয়ানকে সুস্থ করে তোলার দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন ভারতীয় চিকিৎসক সাহির সাইনালবদিন। এতো দ্রুত রিজওয়ানের সুস্থ হওয়ার ঘটনায় বিস্মিত তিনি।তার মতে, দেশের হয়ে খেলার অদম্য ইচ্ছা ও মানসিকতাই রিজওয়ানকে দ্রুত সুস্থ করে তোলে।

এক গণমাধ্যমকে সাক্ষাৎকারে চিকিৎসক সাহির বলেন, ‘রিজওয়ান হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে শুধু একটা কথাই বলতেন – আমি খেলব। আমাকে দলের সঙ্গে থাকতে হবে। দেশের হয়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে খেলতে নামার অদম্য আগ্রহ ছিল রিজওয়ানের। তিনি দৃঢ় এবং আত্মবিশ্বাসী ছিলেন। যে সময়ের মধ্যে রিজওয়ান সুস্থ হয়ে ওঠেন তা আমাদের অবাক করেছে। তার সংক্রমণ মারাত্মক ছিল। এই ধরনের সংক্রমণ থেকে কোনো রোগীর সুস্থ হতে অন্তত পাঁচ থেকে সাত দিন সময় লাগে।’আইসিইউতে ৩৫ ঘণ্টা রেখে রিজওয়ানকে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন সাহির। তিনি বলেন, ‘খেলোয়াড় হওয়ায় অন্যদের থেকে শারীরিক ক্ষমতা বেশি রিজওয়ানের। সেই ক্ষমতা ও আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস তাকে দ্রুত সুস্থ করে তুলেছে।

আপনার মতামত জানান