নিষেধাজ্ঞার ফাঁদে সুন্দরবন

প্রকাশিত



টানা ১০০ দিনের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে সুন্দরবনের সকল প্রকার মৎস্য আহরণ। একই সঙ্গে বন্ধ থাকবে দর্শনার্থীদের (পর্যটক) প্রবেশও। ১ জুন (বুধবার) থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ম্যানগ্রোভ বনের মৎস্য প্রজাতির প্রজনন মৌসুম হওয়ায় এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে বন বিভাগ।

এর আগে ২০ মে থেকে শুরু হয়েছে সামুদ্রিক মাছের প্রজনন মৌসুম।

৬৫ দিনের এই অবরোধ জারি থাকবে ২৩ জুলাই পর্যন্ত। সামুদ্রিক অবরোধের বাড়তি ১০ দিন এই অবরোধের সঙ্গে যুক্ত হওয়ায় মোট ১০০ দিন নিষেধাজ্ঞার ফাঁদে পড়ল সুন্দরবন। এ জন্য সুন্দরবনে মৎস্য আহরণ এবং পর্যটক প্রবেশে ১৪ মে থেকে সব ধরনের পাস-পারমিট দেওয়া বন্ধ রেখেছে বন বিভাগ।

এদিকে দীর্ঘ অবরোধকে ঘিরে বন অপরাধীরা শুরু করেছে তাদের অপতৎপরতা। এমনকি বিষ দিয়ে মাছ ধরা পার্টিরও দৌরাত্ম্য বেড়ে যায় এই সময়। এরই মধ্যে জনশূন্য সুন্দরবনে বেশ কয়েকটি হরিণ শিকারের ঘটনা ঘটেছে। গত এক সপ্তাহে এক শিকারিকে আটক এবং এক মণ হরিণের মাংস, বিপুল পরিমাণ হরিণ ধরা ফাঁদসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে।

বন বিভাগ জানিয়েছে, এই নিষিদ্ধ সময়ে অপরাধীদের দমনে বাড়তি নিরাপত্তা ও টহলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রত্যেকটি স্টেশন ও টহল ফাঁড়ির বনরক্ষীদের নিয়মিত টহলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া জিপিএস প্রযুক্তিসম্পন্ন স্মার্ট প্যাট্রলিং দলের টহলও জোরদার করা হয়েছে গোটা সুন্দরবনে।

বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সুন্দরবনের ছয় হাজার ১৭ বর্গকিলোমিটার বাংলাদেশ অংশে এক হাজার ৮৭৪ বর্গকিলোমিটার জুড়ে রয়েছে নদীনালা ও বিল। এই জলাকীর্ণ অঞ্চলে রয়েছে ১২০ প্রজাতির মাছ, ২৪ প্রজাতির চিংড়ি, ১৪ প্রজাতির কাঁকড়া। জুন থেকে আগস্ট এই তিন মাস মাছসহ বেশ কয়েকটি প্রজাতির জলজ প্রাণীর প্রজনন সময়। মাছ ও জলজ প্রাণীর নিরাপদ প্রজননের স্বার্থে দেওয়া হয়েছে এই নিষেধাজ্ঞা।

সুন্দরবন বিভাগের খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক (সিএফ) মিহির কুমার দো বলেন, ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট সুন্দরবনের মৎস্য প্রজাতির প্রধান প্রজনন মৌসুম। তাই নিরাপদ প্রজননের জন্য মৎস্য আহরণ ও পর্যটক প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ জন্য এর আগে ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিনের সামুদ্রিক মাছের প্রজননের ১০ দিন যুক্ত করে ১০০ দিন সুন্দরবনে সব ধরনের পাস-পারমিট বন্ধ থাকবে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এটি করা হয়েছে।

সিএফ মিহির কুমার দো আরো বলেন, নিষিদ্ধ সময়ে বন অপরাধীরা সুযোগ গ্রহণ করতে তৎপর হয়ে ওঠে। তারা যাতে বনে প্রবেশ ও অপরাধ কর্মকাণ্ড করতে না পারে সে জন্য পুরো বন বিভাগ সতর্ক রয়েছে। সকল স্টেশন ও টহল ফাঁড়ির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের টহল জোরদার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আপনার মতামত জানান