নারীকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার ২

প্রকাশিত

নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁয়ে বিয়ের দাবিতে অবস্থান নেওয়া রোকসানা আক্তারকে (৩২) পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলার প্রধান আসামি মনিরসহ দুজনকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব।

শনিবার দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজীনগরে র‍্যাব ১১ এর সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র‍্যাব ১১ এর অধিনায়ক লে. কর্ণেল তানভীর মাহমুদ পাশা।

প্রসঙ্গত, গত ১৮ জুলাই সোনারগাঁওয়ের সাদিপুর ইউনিয়নের হিনানপুর দেওয়ান বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অবস্থান নেওয়া এক সন্তানের জননী স্বামী পরিত্যক্তা রোকসানা আক্তারকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ২০ জুলাই নিহতের ছোট ভাই মো. এনামুল হক বাদী হয়ে সোনারগাঁ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

২২ জুলাই রাতে অভিযান চালিয়ে মামলার প্রধান আসামি সোনারগাঁয়ের বাইশটেকীর মৃত রাইজউদ্দিন ওরফে রাজু মিয়ার ছেলে মো. মনির হোসেন ও মো. আমির হোসেনকে মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়া থানার ভবেরচর এলাকা হতে গ্রেফতার করে র‍্যাব।

প্রাথমিক অনুসন্ধান ও গ্রেফতারকৃত আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ভিকটিম রোকসানা আক্তারের স্বামীর সাথে তার বিগত ৭-৮ বছর পূর্বে নিয়ম মোতাবেক বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। তারপর থেকে ভিকটিম তার একমাত্র ছেলেকে নিয়ে ছোট ভাই মো. এনামুল হকের বাড়িতে বসবাস করে আসছিল। তিনি জীবিকার জন্য উপজেলার সাদিপুর ইউনিয়নের হিনানপুর গ্রামের দেওয়ান বাড়িতে জামদানী শাড়ি তৈরির কাজ করতেন। সেই সুবাদে ওই বাড়ির মৃত রাজু মিয়ার ছেলে মনির হোসেনের (৪৫) সঙ্গে রোকসানা আক্তারের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে উঠে। একপর্যায়ে ভিকটিম বিয়ের ব্যাপারে মনির হোসেনকে চাপ দিলে মনির তার মেয়েকে বিয়ে দেয়ার পর বিয়ে করবে বলে আশ্বাস দেয়।

গত ১৫ জুলাই মনিরের মেয়ের বিয়ে হলে ভিকটিম গত ১৮ জুলাই বিয়ের দাবিতে মনিরের বাড়িতে অবস্থান নেয়। এ সময় মনিরের বাড়ির লোকজন তাকে একাধিকবার বাড়ির বাইরে টেনে হিঁচড়ে বের করে দেয়। ভিকটিম বিয়ের দাবিতে অনড় থাকায় মনির হোসেন, তার ভাই গোলজার, খোকন ওরফে খোকা, ছেলে রানা, মনিরের স্ত্রীসহ অন্যান্য আসামিরা ভিকটিমকে লোহার পাইপ, লাঠিসোঁটা দিয়ে পিটিয়ে মারাক্তকভাবে আহত করে। মুমূর্ ‍ু অবস্থায় ভিকটিমকে মনির হোসেন ও তার সহযোগীরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ভিকটিমকে মৃত ঘোষনা করেন। ভিকটিমের মৃত্যুর সংবাদ জানার পর মনির ও তার সহযোগীরা লাশ রেখেই হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যায়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামিরা এ হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। এ হত্যা মামলার অধিকতর তদন্তের জন্য গ্রেফতারকৃত আসামিদের তদন্তকারী কর্মকর্তার নিকট হস্তান্তর কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানান র‌্যাব কর্মকর্তা।

আপনার মতামত জানান