ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে চালু হলো ট্রেন

প্রকাশিত

ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। কঠোর বিধিনিষেধ শিথিলের এক সপ্তাহ পর বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) সকাল থেকে ট্রেন চলাচল শুরু হয়।

ভোর ৬টা ৪০ মিনিটে নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকার উদ্দেশে প্রথম ট্রেনটি ছেড়ে যায়। এর আগে ভোর ৫টা ৩০ মিনিটে ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জের উদ্দেশে প্রথম ট্রেনটি ছেড়ে আসে। তবে প্রথমদিন যাত্রীর সংখ্যা ছিল অনেক কম।

সকালে শহরের কালিরবাজার এলাকার নারায়ণগঞ্জ স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, যাত্রীর সংখ্যা একেবারেই কম। যাত্রী সংখ্যা কম থাকার কারণ জানতে চাইলে আব্দুল মালেক নামের এক স্টাফ জানান, প্রথমদিন ও ছুটির দিন হওয়ায় যাত্রী সংখ্যা কম। রোববার থেকে যাত্রীতে ভরপুর থাকবে ট্রেন।

নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকার উদ্দেশে যাওয়া আল আমিন নামের একজন যাত্রী বলেন, দীর্ঘদিন পর ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। এতে করে আমাদের অনেক অর্থের সাশ্রয় হবে। ট্রেন ছাড়া অন্য পরিবহনে ঢাকা গেলে প্রতিদিন কমপক্ষে ৫০ টাকা খরচ করতে হয়। এখন ১৫ টাকা দিয়েই ঢাকা যাওয়া যাচ্ছে।

নারায়ণগঞ্জ স্টেশন মাস্টার কামরুল ইসলাম খান বলেন, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রেলপথে পুনরায় ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। আজ থেকে শুক্রবার ও ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন সকালে চার জোড়া, বিকেলে চার জোড়া এবং দুই জোড়া ডেমোসহ মোট ১০ জোড়া ট্রেন চলবে।

তিনি আরও বলেন, আপাতত আমাদেরকে ১০ জোড়া ট্রেন চালু করার কথা বলা হয়েছে। আমরা ১০ জোড়া চালু করেছি। যদি ১৬ জোড়া চালু করার কথা বলা হয় তাহলে আমরা ১৬ জোড়াই চালু করব। আমাদেরকে যে নির্দেশনা দেয়া হবে আমরা সেই নির্দেশনা অনুযায়ীই কাজ করব।

এর আগে রেলপথ চলাচলের উপযোগী রয়েছে কি-না তা দেখার জন্য বুধবার (১৮ আগস্ট) ডেমো ট্রেন দিয়ে ট্রায়াল দেয়া হয়।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রেলপথে মূলত বেসরকারি সংস্থা ট্রেন পরিচালনা করত। প্রতিদিন এ পথে আসা-যাওয়া করত ১৬ জোড়া ট্রেন। মাত্র ১৫ টাকা ভাড়ায় ৪৫ মিনিটে ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জ এবং নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকায় পৌঁছাতে পারতেন যাত্রীরা। বিপরীতে বাসে ঢাকায় যেতে যাত্রীদের ব্যয় করতে হয় ৩৬ টাকা। সময় লাগে এক থেকে দেড় ঘণ্টার মতো।

২০২০ সালে করোনা সংক্রমণের শুরুতে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। এরপরই বন্ধ করা হয় ট্রেন চলাচল। সেই সঙ্গে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে চলাচলকারী ট্রেনও বন্ধ হয়ে যায়। ছয় মাসের বেশি সময় বন্ধের পর চালু হয় ট্রেন। তবে সেবার ট্রেন চালুর পরপরই দুইবার লাইনচ্যুতের ঘটনা ঘটে। এরপর করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি পেলে পুনরায় বন্ধ রাখা হয় ট্রেন চলাচল। সেই থেকে এখন পর্যন্ত বন্ধই ছিল ট্রেন চলাচল।

এরই মধ্যে কঠোর বিধিনিষেধ শিথিলের পর সারাদেশে গণপরিবহন চললেও ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। বিধিনিষেধ শিথিলের প্রথমদিনে ১১ আগস্ট থেকে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রেলপথে কোনো ট্রেন চলাচল করছিল না। যা নিয়ে স্থানীয়ভাবে অনেক আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে লকডাউন শিথিলের এক সপ্তাহ পর ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে ট্রেন চালু হয়েছে।

আপনার মতামত জানান