ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে অবৈধ মিনিবাস
বিশেষ প্রতিনিধি (ডেইলি সোনারগাঁ) :
ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনার ১ ঘন্টা পরেই মহাসড়কে নম্বর প্লেট, রুট পারমিট ও নিবন্ধন বিহীন ২১ সিটের আর.এম ট্রান্সপোর্ট হাইওয়ে পুলিশের উপস্থিতিতে আবারো চলতে শুরু করে। দীর্ঘ চার মাস যাবত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থেকে দাউদকান্দি পর্যন্ত অবৈধভাবে যাত্রীবাহী মিনিবাস চলাচলের সুযোগ করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে।
জানা যায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার মোগরাপাড়া চৌরাস্তা থেকে কুমিল্লার দাউদকান্দি পর্যন্ত গত চার মাস ধরে ২১ সিটের আর.এম ট্রান্সপোর্ট নামের ২৪টি মিনিবাস এ রুটের গজারিয়ার পাখির মোড়, দড়ি বাউশিয়া, ভবেরচর, ভাটেরচর, বালুয়াকান্দি ও জামালদী বাসস্ট্যান্ডে যাত্রী নিয়ে চলাচল করছে। দেশের সবচেয়ে ব্যস্ততম এ মহাসড়কের উপর দিয়ে নম্বর প্লেটবিহীন, রুট পারমিট ও নিবন্ধন ছাড়া যাত্রীবাহী বাসে চলাচলরত যাত্রী, পরিবহন সেক্টর নাগরিক কমিটির সদস্য ও প্রশাসনের একটি অংশ মৌখিকভাবে অভিযোগ করেন।
এ ব্যাপারে একটি জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশের পর সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অঞ্জন কুমার সরকার ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে তিনজনকে জড়িমানা ও একজনকে ১ মাসের কারাদন্ড প্রদান করেন। হাইওয়ে সড়কে অবৈধভাবে চলাচলরত ২৪টি গাড়ির মধ্যে তিনটি গাড়ি জব্দ করেছেন। পরে গাড়ি তিনটি সোনারগাঁ থানা হেফাজতে রাখেন। ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানের এক ঘন্টা পরেই আবারো হাইওয়ে পুলিশের সামনে দিয়েই গাড়িগুলো চলতে থাকে।
এ রুটে চলাচলকারী যাত্রী সাইদুল জানান, অবৈধ গাড়ি হলেও ভাড়া অনেক বেশি। বিপদে পরে আমরা বাধ্য হয়ে গাড়িতে উঠি। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মতো এতো ব্যস্ততম সড়কে নম্বর প্লেট বিহীন গাড়ি চার মাস ধরে কিভাবে চলাচল করছে। এখানের হাইওয়ে পুলিশ কি কাঠের চশমা ব্যবহার করে। এত বড় অনিয়মের সঙ্গে প্রশাসনের যে সব কর্মকর্তারা জড়িত হয়ে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা দাবী জানাই ।
আর.এম ট্রান্সপোর্টের পরিচালক রাসেল মিয়া জানান, নম্বর প্লেটের জন্য আমরা আবেদন করেছি। বিআরটিএ থেকে অনুমোদন দেওয়া হলে নম্বর প্লেট ও নিবন্ধন সহ সরকারের যথাযথ সব নিয়ম মেনেই গাড়ি চালাব। পরিবহন সংকটের কারণে পুলিশ আমাদের একটু ছাড় দিয়েছে।
চারমাস যাবত চলাচলরত আর.এম ট্রান্সপোর্টের বিষয়ে জানতে চাইলে কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ওসি কাইয়ুম আলী সর্দার জানান, আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। দুদিন ধরে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে আছি। ভ্রাম্যমান আদালতের বিষয়টি জেনে তিনি প্রতিবেদককে বলেন, একদিন ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে কি এগুলো বন্ধ করা যাবে। প্রতিদিন ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করতে হবে। তাছাড়া সব গাড়ির কাগজপত্র যাচাই বাছাই করলে কোন লোকাল গাড়িই রাস্তায় থাকবে না। পরিবহনগুলো সোনারগাঁ এলাকা দিয়ে চলাচলের জন্য কোনো রুট পারমিট নেই এ কথা সত্য। নম্বর প্লেট ছাড়া সব গাড়ি চলাচল করছে বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছি। অবৈধভাবে তাদের আর চলতে দেওয়া হবে না।
হাইওয়ে পুলিশের গাজীপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার শফিকুল ইসলাম জানান, অবৈধ কোন যানবাহন মহাসড়কে চলতে দেয়া হবে না। এর সাথে হাইওয়ে পুলিশের সংশ্লিষ্টতা থাকলে তদন্ত করে আইনী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
নির্বাহী কর্মকর্তা অঞ্জন কুমার সরকার জানান, ব্যস্ততম মহাসড়কে চারমাস যাবত রুট পারমিট ছাড়া এতগুলো গাড়ি কিভাবে চলে? ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনার পর কিভাবে গাড়ি চলে, হাইওয়ে রোডের বিষয় দেখভাল করার জন্য হাইওয়ে পুলিশ দায়িত্বে আছে। এ বিষয়টি আইন শৃঙ্খলা মিটিংয়ে উপস্থাপন করবো।
আপনার মতামত জানান