প্রধানমন্ত্রীর হাতের ছোঁয়া হারাতে চায় না শিক্ষার্থীরা

প্রকাশিত

ডেইলি সোনারগাঁ :
আফনান নূর নিহা ভট্টপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেনির তিতাস শাখার শিক্ষার্থী। জুলাই মাসের ৪ তারিখ থেকে কেমন জানি আনমনা থাকে। বঙ্গবন্ধুর গৌরবগাঁথা ইতিহাস, প্রধানমন্ত্রীর সোনার বাংল  গড়ার কৃতিত্বের ইতিহাস জানতে চায়। বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর জীবনী শুনে তার চোখের পানি বেরিয়ে আসে। চোখে পানি কেন জানতে চাইলে অঝড় ধারায় কাঁদতে থাকে। সে জানায়, যে পোশাকে বঙ্গবন্ধুর কণ্যার হাতের ছোঁয়া আছে সে পোশাক বাদ দিয়ে তাদের বিদ্যালয়ে নতুন পোশাক আসছে এতে সে খুব কষ্ট পাচ্ছে।

পরে সে বিদ্যালয়ে এসে বন্ধুদের কাছে খোলা চিঠি লিখে তার মনের অনুভ’তি জানায়। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার প্রতি কোমলমতি শিশুদের ভালবাসা সবাইকে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ করে, যে পোশাকে বঙ্গবন্ধু কন্যার হাতের ছোঁয়া আছে, সে পোশাক কখনো গা থেকে নামাবে না। শুরু হয় শিক্ষার্থী অভিভাবকদের যুদ্ধ। ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনের মাস থেকে পড়ে আসা নীল-সাদা পোশাকের উপর প্রধানমন্ত্রীর আদরে ছোঁয়া ও ভালবাসা প্রবাহমান রাখতে স্থানীয় সাংসদ লিয়াকত হোসেন খোকা, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অঞ্জন কুমার সরকার, শিক্ষা অফিসার নিখিল চন্দ্র বিশ্বাস, কাউন্সিলর ফারুক আহমেদ তপন ও সাংবাদিকদের বরাবর স্বারক লিপি প্রদান করে। নতুন পোশাকের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন অধিকাংশ অভিভাবক।

গতকাল সরেজমিন বিদ্যালয়ে গিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, কোন রকম মতবিনিময় না করে বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি আবু নাইম ইকবাল এককভাবে ড্রেস পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেন।

আফনান নূর নিহা ও অন্যান্যরা জানান, ২০১৫ সালে সুন্দর হাতের লেখা ও গল্প লেখার প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহন করে প্রথম স্থান অধিকার করেছে। আপু যখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে নীল-সাদা ড্রেসে পুরস্কার আনতে যায়, তখন প্রধানমন্ত্রী তাকে অনেক আদর করেছে। মাথায়,কপালে ও ড্রেসে হাত বুলিয়ে দিয়েছে। তাই এ পোশাকে প্রধানমন্ত্রীর হাতের ছোয়া লেগে আছে। আরো জানার, আমরা এ পোশাক পড়ে একদিন দেশের প্রধানমন্ত্রী হতে চাই।

নামপ্রকাশ অনিচ্ছুক একজন অভিভাবক জানান, অধরা প্রমানমন্ত্রীর নিকট হতে পুরস্কার গ্রহনকরার পর থেকে একটি চক্র ২০১৬ সাল থেকেই পোষাক পরিবর্তন করতে চাচ্ছিল। কিন্তু তৎকালিন প্রধান শিক্ষক ওয়াহিদুজ্জামান ও নিবার্হী কর্মকর্তা শাহীনুর ইসলামের বাঁধার কারনে তা বাস্ততবায়ন করতে পারেনি। চক্রটি পরিকল্পিতভাবে তৎকালিন প্রধান শিক্ষককে অন্যত্র বদলী করে পরে নতুন ইউএনও আসার পর তারা আবার সক্রিয় হয়ে পোশাক পরিবর্তনের ঘোষনা দেন। আর নতুন পোষাক বাস্তবায়নের দায়িত্ব নেন বর্তমান প্রধান শিক্ষক রেহেনা বিলকিস।

এ ব্যাপারে অভিভাবক কমিটির সদস্য ও স্থানীয় কাউন্সিলর ফারুক আহমেদ তপন জানান, একটি বিদ্যালয়ের ইউনিফর্ম পরিবর্তন হচ্ছে আমি তা জানতে পারলাম শিক্ষার্থীদের স্বারক লিপি পড়ে। এটা সত্যিই দুঃখজনক।

উপজেলা শিক্ষা অফিসার নিখিল চন্দ্র বিশ্বাস জানান, যদি ড্রেস পরিবর্তন করতে হয় তবে সকল শিক্ষক ও অভিভাবক কমিটির সদস্যদের সাথে আলোচনা করে সর্বসম্মতিক্রমে নিধারন সরকারকে জানাতে হবে। পরে অভিভাবকদের ড্রেসের ব্যাপারে জানিয়ে দিবে। তবে বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর ছোঁয়া যে ড্রেসে আছে সেই ড্রেস তারা পরিবর্তন করতে চায় না।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অঞ্জন কুমার সরকার জানান, এ ব্যাপারে স্বারক লিপি পেয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, শিক্ষা অফিসারের সাথে কথা বলেছি। যদি কারো আপত্তি থাকে তাহলে যেন স্কুল ড্রেস পরিবর্তন করা না হয়।

আপনার মতামত জানান