আপনারা কি মালিক বনে গেছেন, দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে হাইকোর্ট

প্রকাশিত



বিশেষ প্রতিবেদক:

জামিনে থাকার পরও কলেজ শিক্ষার্থী মো. আশরাফুল হাওলাদারকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্যকে ভর্ৎসনা করেছেন হাইকোর্ট। তলবের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার পটুয়াখালী সদর থানার ওসি মো. মনিরুজ্জামান ও এএসআই মিজানুর রহমান হাজির হলে তাঁদের উদ্দেশে হাইকোর্ট বলেন, ‘আপনারা কি মালিক হয়ে গেছেন? মিটিংয়ে আছেন বলে ফোন কেটে দেন। মিটিং শেষ করে আর ফোন দেননি, কোনো পদক্ষেপ নেননি।’

আদালত বলেন, ‘দেশের মালিক জনগণ। অথচ যে যেখানে বসে, সে সেখানকার মালিক বনে যান। এ জন্যই কি দেশ স্বাধীন হয়েছে? জামিনে থাকার পরও আসামিকে গ্রেপ্তার করে কোর্টে পাঠিয়েছেন। আদালতের মর্যাদা রক্ষার দায়িত্ব আপনাদেরও।’


এ সময় দুই পুলিশ কর্মকর্তার পক্ষে আবারও নিঃশর্ত ক্ষমা চান তাদের আইনজীবী। পরে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলামের বেঞ্চ আগামী ৩০ জুলাই পরবর্তী শুনানির জন্য দিন ধার্য করেন।


আদালতে আশরাফুল হাওলাদারের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আলী আহসান মোল্লা। দুই পুলিশ কর্মকর্তার পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আবু রেজা মো. কাইয়ুম খান। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পী। এর আগে ‘জামিন নেওয়া শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার’ শিরোনামে ২০ মে একটি দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। পরে ওই প্রতিবেদন ২১ মে আদালতের নজরে আনেন আইনজীবী আলী আহসান মোল্লা। তাতে গ্রেপ্তারের ঘটনায় ব্যাখ্যা দিতে দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে তলব করেন হাইকোর্ট।

এদিকে উচ্চ আদালত থেকে জামিনের পরও দুজনকে ধরে নির্যাতন করে টাকা আদায়ের পৃথক ঘটনায় জড়িত পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কথা হাইকোর্টকে জানানো হয়েছে। পরে আদালত শরীয়তপুরের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দিয়ে আগামী ৬ আগস্ট পরবর্তী শুনানির জন্য দিন ধার্য করেন।

এর আগে নির্যাতন করে টাকা আদায়ের ঘটনায় আদালতের নির্দেশে সোমবার হাজির হন শরীয়তপুরের পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানার ওসি শেখ মুস্তাফিজুর রহমান, জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাসেল মনির ও চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট। ওই সময় পুলিশের পক্ষ থেকে লিখিত ব্যাখ্যা আদালতে জমা দেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।

সেখানে বলা হয়েছে, ওই ঘটনায় জড়িত পুলিশের তিনজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ সময় হাইকোর্ট বলেন, ওই কর্মকর্তাদের সাময়িক সাসপেন্ডই শেষ কথা নয়। তাদের জামিন হয়েছে কী না–এটা তো অনলাইনেই দেখা যায়। এরপরও কেন আসামিদের পুলিশের কাস্টডিতে দেওয়া হলো?

আপনার মতামত জানান