‘মাফ করে দেবেন…সন্তানদের দেখবেন’
করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা আবুল হাসনাত হাসেম। শনিবার রাত আড়াইটায় চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। এর আগে গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত আনুমানিক একটার দিকে তিনি তার ফেসবুক আইডিতে একটি পোস্ট দেন। তাতে লিখেছেন, ‘আমার অবস্থা ভালো না। আমাকে সবাই মাফ করে দেবেন। আমার সন্তানদের একটু দেখবেন। আমিন’।
এরপর, কিছুক্ষণের মধ্যে তার স্ত্রী-সন্তান তাকে দ্রুত নিয়ে যান চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে। কিন্তু, রাত আড়াইটায় তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।
আবুল হাসনাত হাসেম বিগত ১৯৯০ সাল পর্যন্ত চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক এর দায়িত্ব পালন করেন। পড়াশোনার সময় ফরিদগঞ্জ বঙ্গবন্ধু ডিগ্রি কলেজে এই সংগঠনটির অন্যতম নেতা ছিলেন তিনি।
আবুল হাসনাত হাসেম ফরিদগঞ্জে ‘আওয়ামী গুণিজন স্মৃতি সংসদ’ নামে একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন এবং আমৃত্যু সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া, স্থানীয় একটি দৈনিকে লেখালেখিও করতেন তিনি।
চাঁদপুর জেলা বিএমএ’র সাবেক সভাপতি, আওয়ামী লীগ, জেলা স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডাক্তার হারুন অর রশিদ সাগর জানান, হঠাৎ শ্বাসকষ্ট শুরু হলে, চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় হাসনাতকে। সেখানে তার চিকিৎসা শুরু করা হলেও কিছুক্ষণের মধ্যেই মারা যান। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত কয়েক দিন ধরে জ্বরে ভুগছিলেন তিনি।
ফরিদগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন স্বপন জানান, গতকাল শুক্রবার দুপুরেও ফরিদগঞ্জ পৌরসভার ওয়াপদা কলোনিতে হাসনাতের সঙ্গে দেখা হয়। এসময় বাসার সামনের সবজির বাগানে কাজ করছিলেন। হাসনাত তাকে বলেন, ঈদের দিন শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে পুকুরে গোসল করেছি। তারপর থেকে শরীরটা ভালো যাচ্ছিল না। স্বপন আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ লালন করতেন। তাই নিজের সংগঠনের সুবিধাবাদীদেরও ছাড় দিতেন না, হাসনাত।
চাঁদপুরে করোনাবিষয়ক ফোকালপার্সন ডা. সুজাউদ্দৌলা রুবেল জানান, যেহেতু করোনার উপসর্গ নিয়ে রোগী মারা গেছেন। তাই নমুনা সংগ্রহ করা হবে। তাছাড়া বিধি মেনে মৃতের মরদেহ দাফন করা হবে।
মৃত আবুল হাসনাত হাসেমের বাড়ি ফরিদগঞ্জ উপজেলার রাজাপুর গ্রামে। মৃত্যুকালে স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন তিনি।
এক সময়ের আদর্শের জন্য ত্যাগী এই নেতার হঠাৎ এমন মৃত্যুতে ফরিদগঞ্জে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে আসে।
সুত্র: কালের কন্ঠ
আপনার মতামত জানান