সিঙ্গাপুরের সবচেয়ে দর্শনীয় ও আকর্ষণীয় স্থান

প্রকাশিত

সিঙ্গাপুর বিশ্বের অন্যতম পর্যটন স্থান। ১৮১৯ সালে ব্রিটিশ ট্রেডিং কলোনি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে স্বাধীনতার পরে – এটি বিশ্বের সবচেয়ে সমৃদ্ধ শহর বা দেশগুলির মধ্যে অন্যতম হয়ে উঠেছে। এশিয় এবং ইউরোপীয় সংস্কৃতির মিশ্রণে দেশটি প্রবাসী এবং দর্শনার্থীদের কাছে ক্রমেই আরো বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। সিঙ্গাপুরের সবচেয়ে দর্শনীয় ও আকর্ষণীয় ৫ টি স্থানের বিস্তারিত জেনে নিন :

সিঙ্গাপুরের সবচেয়ে দর্শনীয় স্থান মেরিনা বে স্যান্ডস (Marina Bay Sands)

সিঙ্গাপুরের সবচেয়ে দর্শনীয় স্থান মেরিনা বে স্যান্ডস (Marina Bay Sands)

 

১. মেরিনা বে স্যান্ডস: সিঙ্গাপুরের সবচেয়ে দর্শনীয় ও আকর্ষণীয় স্থান হলো মেরিনা বে স্যান্ডস (Marina Bay Sands)। এটি সিঙ্গাপুরের একটি অত্যাধুনিক রিসোর্ট কমপ্লেক্স। ২০১০ সালে নির্মিত এই মেরিনা বে স্যান্ডস বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল বিল্ডিংগুলোর মধ্যে একটি। এখানে আছে একটি হোটেল, বিভিন্ন দামি ব্র্যান্ড এর শোরুম, আর্টসায়েন্স মিউজিয়াম (ArtScience Museum), রেস্টুরেন্ট, কনভেনশন সেন্টার, থিয়েটার, একটি শপিংমল – যার মধ্য দিয়ে বয়ে গেছে একটি খাল, এবং মেরিনা বে স্যান্ডস স্কাইপার্ক (Marina Bay Sands Skypark) – একটি উঁচু স্থান যেখান থেকে সমগ্র সিঙ্গাপুর দেখা যায়। সমগ্র সিঙ্গাপুর দেখার এই ডেক এবং ইনফিনিটি পুল অবস্থিত একটি জাহাজের মধ্যে (হ্যাঁ, ঠিকই শুনেছেন। মেরিনা বে স্যান্ডস স্কাইপার্কের উপরে অবস্থিত এই জাহাজ)। কেবল হোটেল গেস্টরা এই ইনফিনিটি পুল ব্যবহার করতে পারলেও যে কেউই পর্যবেক্ষণের ডেক দেখতে পারবেন। তো? আর কি লাগে? উপরে উঠে সেলফি তো তুলতেই হয়, নাকি? ওহ! বলতে ভুলেই গেছি এখানে কৃত্রিম বরফের তৈরি একটি স্কেটিং কোর্টও আছে।

সিঙ্গাপুর ফ্লাইয়ার (Singapore Flyer)

২. সিঙ্গাপুর ফ্লাইয়ার: সিঙ্গাপুরের সবচেয়ে দর্শনীয় ও আকর্ষণীয় স্থানের লিস্টে পরবর্তী স্থানে আছে সিঙ্গাপুর ফ্লাইয়ার (Singapore Flyer)। এটি একটি ফ্যারিস হুইল বা নাগরদোলা। তবে ২০০৮ সালে চালু হওয়া এটি যেনতেন ফ্যারিস হুইল বা নাগরদোলা নয়, এটি বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু (১৬৫ মিটার) ফ্যারিস হুইল যার মাধ্যমে আপনি পুরো সিঙ্গাপুর দেখতে পারবেন। এর অবস্থান মেরিনা বে। সিঙ্গাপুর ফ্লাইয়ার এর মেঝে ৩ টি স্তর নিয়ে গঠিত যাতে রয়েছে রেস্টুরেন্ট, দোকান এবং অন্যান্য সেবা। ফ্লাইয়ারের প্রতিটি রাইড ৩০ মিনিট স্থায়ী হয় এবং তা খুব সকাল থেকে গভীর রাতে পর্যন্ত।

গার্ডেন্স বাই দ্য বে (Gardens by the Bay)

 

৩. গার্ডেন্স বাই দ্য বে: লিস্টের পরবর্তী স্থানে আছে গার্ডেন্স বাই দ্য বে (Gardens by the Bay)। এটি সিঙ্গাপুর পর্যটন শিল্পে যোগ হওয়া সাম্প্রতিক দৃষ্টিনন্দন স্থান। এর সৌন্দর্য দেখে আপনি দূরে থাকতে পারবেন না বিশেষভাবে আপনি যখন একে উপর থেকে দেখবেন। গার্ডেন্স বাই দ্য বে’র ৩ টি অংশ। বে সেন্ট্রাল, বে সাউথ এবং বে ইস্ট – একটি বাগান যা ওয়াটারফ্রন্ট রোডের সাহায্যে বাকি দুটি অংশকে যুক্ত করেছে। এরমধ্যে বে সাউথ সবচেয়ে বড়। যেখানে রয়েছে বিভিন্ন গ্রীষ্মমন্ডলীয় বাগান এবং গাছসদৃশ কিছু কাঠামো যেগুলো লম্বায় প্রায় ৫০ মিটার।

বোটানিক গার্ডেন্স (Botanic Gardens)

 

৪. বোটানিক গার্ডেন্স: লিস্টের ৪র্থ স্থানে আছে বোটানিক গার্ডেন্স (Botanic Gardens)। এটি সিঙ্গাপুরের প্রথম ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ মনোনয়নপ্রাপ্ত স্থান। সিঙ্গাপুরের পুরোটা কংক্রিট জঙ্গল মনে হলেও এই বোটানিক গার্ডেন্সই সেই ধারনাকে বদলে দেয়। এটি যেন ইট পাথরের জঙ্গলের মাঝে এক টুকরো সত্যিকারের জঙ্গল। এখানে হাঁটতে হাঁটতে আপনি দেখতে পারবেন সিঙ্গাপুরের বিভিন্ন প্রজাতির গাছ ও পশু-পাখি। এখানে প্রায় ৬০,০০০ প্রজাতির গাছ ও পশু-পাখি রয়েছে। বোটানিক গার্ডেন্স এর বিভিন্ন অংশে বিভিন্ন প্রজাতিভেদে বাগান রয়েছে। যেমন: অর্কিড গার্ডেন, ইকো বাগান, ইকো হ্রদ, বনসাই বাগান, ভাস্কর্য ইত্যাদি।

চায়নাটাউন এর বুদ্ধ টুথ রেলিক মন্দির

 

৫. চায়নাটাউন: সিঙ্গাপুরের সবচেয়ে দর্শনীয় ও আকর্ষণীয় স্থানের ৫ম স্থানে রয়েছে চায়নাটাউন (Chinatown)। আপনি যদি কখনো চীন ভ্রমণ না করেন তবে চায়নাটাউন ভ্রমণ হতে পারে দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানোর মত চায়নাটাউন দেখে চীন দেখা। চীনের ছোট ছোট দোকান থেকে শুরু করে চীনের ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন খাবার, উজ্জ্বল লাল লণ্ঠন (lantern), চীনা পোশাক সবই দেখতে পাওয়া যায় এখানে। আপনি এখানে চীনা হেরিটেজ সেন্টার পরিদর্শন করতে পারবেন এবং দর্শন করতে পারবেন চিত্তাকর্ষক এবং সুন্দর – শ্রী মারিয়াম্মান হিন্দু মন্দির। এছাড়া আরো একটি মন্দির আছে নাম বুদ্ধ টুথ রেলিক মন্দির যা সিঙ্গাপুরের বৌদ্ধদের শিল্প ও সংস্কৃতির দিক তুলে ধরে।

আপনার মতামত জানান