সোনারগাঁয়ে ৮ মাসের শিশুসন্তানের ওপর গর্ভধারিণী মায়ের নির্মমতা

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার সাদিপুর ইউনিয়নে ৮ মাসের শিশু সন্তানের দুই হাত ও একটি পা ভেঙ্গে পালিয়েছে তারই গর্ভধারিণী মা। এ ব্যাপারে শিশুটির পিতা বাদী হয়ে গতকাল বিকেলে সোনারগাঁ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, উপজেলার সাদিপুর ইউনিয়নের আন্দার মানিক গ্রামের আমির হোসেনের ছেলে আশরাফুলের সাথে জামপুর ইউনিয়নের শেখের হাট গ্রামের আবুল সরদারের মেয়ে সুরিয়ার সাথে ৫ বছর আগে বিবাহ হয়। সংসার জীবনে সামির আহমেদ (৪) ও সিজান আহমেদ (৮ মাস) নামের দুটি পুত্র সন্তান রয়েছে। গত ১৩ মার্চ ৮ মাসের সন্তান সিজান আহমেদ এর দুটি হাত ও বাম পা ভেঙ্গে বাপের বাড়ি পালিয়ে যায়। অসহ্য যন্ত্রনার কারনে শিশুটি দিনরাতে ঘুমাতে পারছে না। মায়ের হাতে সন্তানের উপর নির্মম নির্যাতন ও অমানবিক আচরনে বাকরুদ্ধ পুরো এলাকা। শিশুটির কান্না থামাতে আশপাশের নারিপুরুষ ছুটে এলেও পিতার কোল ছাড়া কানো কাছেই থাকছে না।
সরেজমিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, অবুঝ শিশুটি হাতে পায়ে প্লাস্টার নিয়ে শুয়ে আছে। এ সময় তার পিতা আশরাফুল অশ্রুসিক্ত চোখে সন্তানের পাশে বসে আছেন। আশরাফুল জানান, ছোটখাটো যে কোন বিষয় নিয়ে একটু তর্কবিতর্ক হলে তাকে মারতে দাবটি নিয়ে কয়েকবার আক্রমন করেছে এবং তার মাকেও মারধর করে। দুটি সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে কিছু বলি নাই। এখন দেখি সুযোগ পেলে আমার সন্তানদের মেরেও ফেলতে পারে। তাই আমাদের নিরাপত্তার জন্য গতকাল সোনারগাঁ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছি। এ সময় তিনি আরো জানান, রাতে বেলা প্রায়ই তার স্ত্রী ঘর থেকে বেরিয়ে কয়েক ঘন্টা পর ফিরে আসেন। ফির আসার পরই যে কোন অঘটন ঘটিয়ে থাকেন। তিনি বলেন, স্ত্রীর পরকিয়ার জেরে আমি, আমার সন্তানেরা নিরাপত্তাহীনতায় আছি।
স্থানীয়রা জানান, মেয়েটির আচরন খুবই খারাপ। স্বামী ও শাশুড়ির সাথে অশালিন আচরন নিত্য দিনের। কিন্ত ছোট্ট সন্তানের হাতপা ভেঙ্গে সে মা জাতিকে কলঙ্কিত করেছে। বাচ্চার কান্নায় আমাদের চোখে এমনিতে কান্না চলে আসে।
স্থানীয় বিএনপি নেতা সেলিম সরকার বলেন, শিশুটির বাবা আমার কাছে বিচার চাইতে এসেছিল। শিশুটির অবস্থা দেখে চোখের পানি ধরে রাখতে পারিনি। এমন মায়ের কথা জীবনে প্রথম শুনলাম। আমি তাকে থানা পুলিশের সহায়তা নিতে বলেছি।
সোনারগাঁ থানার ওসি এমএ বারী বলেন, এ ব্যাপারে শিশুটির বাবা একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। শিশুটির প্রতি অমানবিক আচরণ করা হয়েছে। তদন্ত করে আইনি ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে।
আপনার মতামত জানান