সংসদে বাহাউদ্দিন নাছিম অ্যাসোসিয়েশনের বিবৃতি গোটা সংস্থার ওপর দায় চাপায়
স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আলোচিত কর্মকর্তা মতিউর রহমানের মতো আরও কোনো মতিউর রহমান আছেন কি না, তা সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে খুঁজে বের করার আহ্বান জানিয়েছেন সরকার দলীয় সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম।
পাশাপাশি তিনি বলেছেন, বিশেষ কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে তখন তার সংস্থা, গোষ্ঠী বা অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে দুর্নীতিবাজের পক্ষে সাফাই বক্তৃতা, বিবৃতি দেয়, যা প্রকারান্তরে ওই বিশেষ ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগের দায় সংস্থাগুলো নেয়।
বুধবার (২৬ জুন) জাতীয় সংসদের অধিবেশনে ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, যারা রাজস্ব আদায়ের দায়িত্বে থাকেন যেমন মতিউরকে দুর্নীতি দমন কমিশন, গণমাধ্যম এমনকি আমরা যারা রাজনীতিবিদ আছি তারা চিহ্নিত করতে পারিনি।
তাকে একটি বোবাপ্রাণী ছাগল চিহ্নিত করেছে। এমন মতিউর আরও আছে কি না, তাদের ভবিষ্যতে ছাগল বা অন্য কোনো বোবাপ্রাণী চিহ্নিত করার আগে সংশ্লিষ্ট সংস্থারই চিহ্নিত করা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, যারা অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন, সেক্ষেত্রে তারা যেন এ বোবা ছাগলের বিপক্ষে দাঁড়িয়ে কথা বলা, বিবৃতি দেওয়া, পক্ষ নিয়ে প্রকারান্তরে দুর্নীতিবাজ কোনো ব্যক্তিকে রক্ষায় সংস্থার সবার ওপর দায়ভার না নেন—সেদিকে সবার সজাগ থাকা প্রয়োজন। কোনো রাজনীতিবিদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি বা অপকর্মের অভিযোগ এলে তখন রাজনীতিবিদরা পদক্ষেপ নেন, পক্ষ নেন না।
বরং রাজনৈতিক পদক্ষেপ ও আইনি বিচারে সোচ্চার হন। এটাই হল সৎ রাজনীতিবিদদের মাহাত্ম্য। কিন্তু আমরা দেখতে পাই, যখন কোনো সরকারি বা বেসরকারি, আধা সরকারি কিংবা সংস্থা বা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার বিশেষ কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আসে, তখন ওই গোষ্ঠী বা অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে দুর্নীতিবাজের পক্ষে সাফাই বক্তৃতা, বিবৃতি দেয়। প্রকারান্তরে বিশেষ ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগের দায় কিন্তু ওই সংস্থাগুলো নেয়। পুরো সংস্থার ওপর চলে আসে এ দায়। এখান থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।
বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, দুর্নীতিবাজ ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, সরকারি বা বেসরকারি যে কোনো দলের বা সংস্থার হোক না কেন, তাদের বিরুদ্ধে কঠিন পদক্ষেপ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুর্নীতির বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিকে বাস্তবায়নে উদ্যোগ নিতে হবে। ঋণ খেলাপি, অর্থপাচারকারী, ব্যাংক লুটেরা, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির সিন্ডিকেট যারা করে তাদের চিহ্নিত করতে হবে। তাদের তালিকা প্রণয়ন করে জাতির সামনে উপস্থাপন করা প্রয়োজন বলে আমি মনে করি।
আওয়ামী লীগের এ নেতা বলেন, বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন করে এই দুষ্টচক্র, সর্বগ্রাসী, স্বার্থন্বেষী চক্রের হাত থেকে দেশের জনগণকে রক্ষা করতে হবে। দেশের সব অর্জন হয়েছে আওয়ামী লীগ ও রাজনীতিবিদদের নেতৃত্বে। কিন্তু একটি কুচক্রি মহল, যারা সুদখোর বা বিদেশি প্রভুদের পা চাটা কুকুর তারা একটু সুযোগ পেলে রাজনীতি ও রাজনৈতিক নেতৃত্ব কুলুষিত করে দেশ পরিচালনার সেরা সন্তান হিসেবে নিজেদের প্রমাণ করতে গিয়ে বারবার দেশপ্রেমী জনগণ কর্তৃক প্রত্যাখ্যাত হয়েছে।
আপনার মতামত জানান