বাড়িতে করোনা সংক্রমণ হলে শিশুর সুরক্ষায় করণীয়
বাড়িতে করোনা রোগী থাকলে শিশুদের জন্য নিতে হবে বাড়তি সতর্কতা। পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক ও শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ সামিমা ইয়াসমীন। লিখেছেন আতিফ আতাউর।
রোজার ঈদের আগে মাহমুদুল হাসান ও সামিয়া সুমি দম্পতির দুজনেই করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। একমাত্র সন্তান মাহিরকে নিয়ে তিন সদস্যের এই ছোট পরিবার থাকে ঢাকার বারিধারায়। জানালেন, যতটা না করোনার জটিলতা, তার চেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছিলেন ছয় বছর বয়সী সন্তানকে নিয়ে। ২১ দিন পারিবারিক কোয়ারেন্টিনে ছিলেন তারা। পুরোটা সময় সন্তান থেকে দূরে ছিলেন দুজন। পজিটিভ হওয়ার পর পরই স্বেচ্ছা ঘরবন্দি হন। পাশের রুমেই থাকত মাহির। বয়সে একটু বড় হওয়ায় এবং বুঝতে শেখায় খুব একটা বেগ পেতে হয়নি সন্তানকে পরিস্থিতি বোঝাতে। দূর থেকে ছেলের সঙ্গে কথা বলেছেন, দেখা করেছেন। ভিডিও কলে ও ফোনে গল্প করেছেন। ছেলেকে ছবি আঁকা, ক্রাফট বানানোর মতো বিভিন্ন এক্সটা কারিকুলাম অ্যাক্টিভিটিতে ব্যস্ত রেখেছিলেন তারা।
মাঝখানে কমলেও এখন আবার বাড়ছে করোনার সংক্রমণ। করোনার ডেল্টা ভেরিয়েন্ট আগের চেয়েও শক্তিশালী। বড়রা সব সময় ছোঁয়াচে এই রোগ থেকে সতর্ক থাকার চেষ্টা করলেও শিশুদের বেলায় তা উল্টো। বিশেষ করে করোনায় করণীয় সতর্কতা সম্পর্কে একটু বড় শিশুরা অবগত থাকলেও ছোটরা হরহামেশাই ভুলে যায় তা। স্বাস্থ্যবিধি মানতে ভুল করে বসে। এ জন্য বাড়িতে করোনার সংক্রমণ ঘটলে শিশুদের জন্য আলাদা সাবধানতা অবলম্বন করুন। নবজাতক বা দুধের শিশুর মা করোনা আক্রান্ত হলে সমস্যা একটু বেশি হলেও ধৈর্য হারাবেন না। একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলুন।
নবজাতকের কাছ থেকে করোনা আক্রান্ত মা যতটা সম্ভব দূরে থাকুন। যদিও কম বয়সী শিশুদের করোনা আক্রান্ত হওয়ার হার কম, তবু সাবধানতায় ছাড় দেবেন না। শিশুকে বুকের দুধ পান করানোর সময় নিজে মাস্ক পরুন। শিশুকে কোলে নেওয়ার আগে হাত জীবাণুমক্ত করে নিন ও মাস্ক পরুন। শিশু একটু বড় হলে করোনা আক্রান্ত রোগী সে বাবা-মা বা যেই হোন তাঁর থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করুন।
বাড়িতে যিনি করোনা রোগী তিনি একটি মাত্র রুমেই থাকার চেষ্টা করুন। আলাদা বাথরুম থাকলে সেটা ব্যবহার করুন। না থাকলে সবার শেষে করোনা রোগী বাথরুম ব্যবহারের চেষ্টা করুন। ব্যবহার শেষে নিজেই পুরো বাথরুমে জীবাণুনাশক স্প্রে করে দিন। বাড়ির শিশুদের করোনা রোগীর কাছে ভিড়তে দেবেন না। শিশুদের বুঝিয়ে বলুন করোনা রোগী ও রোগে করণীয় সম্পর্কে।
সূত্রঃ কালেরকণ্ঠ।
আপনার মতামত জানান