শর্তসাপেক্ষে খুলছে হোটেল-রেস্তোরাঁ, বন্ধ থাকবে পর্যটন স্পট
পর্যটনসংশ্লিষ্টদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে অবশেষে আগামী ২৪ জুন থেকে সীমিত পরিসরে খুলছে কক্সবাজারের হোটেল-মোটেল ও গেস্ট হাউস। তবে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কাউকে রুম বুকিং না দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। আবাসন ও খাবার ঘর খোলা হলেও বন্ধ থাকবে সব পর্যটন কেন্দ্র। করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভায় স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. হেলালুদ্দীন আহমদ এ সিদ্ধান্ত নেন।
সোমবার বিকালে জেলা প্রশাসনের এটিএম জাফর আলম সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত মতবিনিময়সভায় পর্যটনসংশ্লিষ্টদের জন্য নেওয়া এ সিদ্ধান্তের কথা জানান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবু সুফিয়ান।
সভায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবু সুফিয়ান বলেন, পর্যটন সংশ্লিষ্ট মানুষের জীবন-জীবিকা নির্বাহের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে শর্তসাপেক্ষে হোটেল-মোটেল ও গেস্ট হাউস খুলে দেওয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি বাস্তবায়নে গঠন করা হয়েছে একটি মনিটরিং কমিটি।
এই কমিটি হোটেল-মোটেল কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা বেঁধে দিয়েছে। দিকনির্দেশনাসমূহ বাস্তবায়নে কোনো ব্যত্যয় ঘটলে মনিটরিং কমিটি আবারও বন্ধ করে দেবে হোটেল-মোটেল।
সভায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আমিন আল পারভেজ বলেন, করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় কক্সবাজারের পর্যটন সেক্টর বন্ধ করে দেওয়া হয়। কিন্তু সব বিচার বিশ্লেষণ করে সীমিত পরিসরে খুলে দেওয়া হচ্ছে আবাসন প্রতিষ্ঠানগুলো। স্বাস্থ্যবিধি বাস্তবায়নে পুলিশ-প্রশাসনের চেয়ে হোটেল মোটেল কর্তৃপক্ষের চ্যালেঞ্জ বেশি।
এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। রক্ষা করতে হবে প্রতিশ্রুতি। ব্যবসা করতে হবে নিজের ও অন্যের জীবনকে ঝুঁকিতে না ফেলে। সবাই মিলে নিরাপদে বেঁচে থাকাই কাম্য।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানিয়েছে, স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে গৃহীত শর্তগুলো হলো— বেড়ানোর উদ্দেশ্যে কোনো পর্যটক রুম বুকিং নিতে পারবে না। শতকরা ৫০ কক্ষ বুকিং দেওয়া যাবে। রুম সার্ভিস ব্যতীত বন্ধ থাকবে রেস্তোরাঁ।
জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কাউকে কক্ষ ভাড়া দেওয়া যাবে না। বন্ধ থাকবে সুইমিংপুল। রেস্তোরাঁয় বসে খাবার খাওয়া যাবে না। হোটেলের প্রবেশমুখে জীবাণুনাশক স্প্রে ও তাপমাত্রা পরিমাপের ব্যবস্থা রাখতে হবে। লবিসহ সব কক্ষে হ্যান্ড সেনিটাইজারের ব্যবস্থা করতে হবে।
তা ছাড়া পুরো হোটেলে শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে হবে। শর্ত ভাঙলে শাস্তির আওতায় আনা হবে।
এ সময় সভায় বক্তব্য রাখেন ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহিউদ্দীন আহমেদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) পঙ্কজ বড়ুয়া, কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী খোকা, জেলা প্রশাসনের পর্যটন সেলের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ মুরাদ ইসলাম, কলাতলী মেরিনড্রাইভ হোটেল-রিসোর্ট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুকিম খান, হোটেল-মোটেল-গেস্ট হাউস কর্মকর্তা অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কলিম উল্লাহসহ আরও অনেকে।
কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী খোকা বলেন, যেভাবেই হোক কক্সবাজারের পর্যটন কেন্দ্রীয় ব্যবসায়িক ক্ষতির তালিকা দীর্ঘ না করতে সরকার সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সোমবার সার্কুলার আকারে বিষয়টি প্রচার করা হবে বলে জেনেছি। তবে রেস্তোরাঁ খোলা না থাকলে আসা-যাওয়ায় থাকা লোকজন খাবে কোথায়?
উল্লেখ্য, ২০ জুন পর্যটন সংশ্লিষ্ট সব সংগঠনের সমন্বয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করা হয়। কক্সবাজার প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনের দাবি করা হয়, ভাত দিন— নয় তো কক্সবাজারের পর্যটনকেন্দ্র খুলে দিন। এর পরিপ্রেক্ষিতে হয়তো এ সিদ্ধান্ত এসেছে বলে দাবি সংশ্লিষ্ট মহলের।
সূত্রঃ যুগান্তর।
আপনার মতামত জানান