সোনারগাঁয়ে ভয়াবহ আগুনে ভষ্মীভুত কনকা ফ্যাক্টরী
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাদিপুর এলাকায় ভয়াবহ আগুনে ভষ্মীভুত “ইলেকট্রো মার্ট লিমিটেড” কোম্পানীর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান কনকা ব্যান্ডের ফ্রিজ তৈরির কারখানা। ৩ ডিসেম্বর রোববার সকাল ১০টা ৫১ মিনিটে ভয়াবহ এ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে।
ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিটের ৮০ জন সদস্য প্রায় ছয়ঘন্টার অক্লান্ত পরিশ্রমে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসলেও কয়েক হাজার এসি ও ফ্রিজ এবং ফ্রিজ তৈরির অত্যাধুনিক যন্ত্রাংশ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। তবে ক্ষতির পরিমান এখন জানা যায়নি।
সরেজমিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায় কারখানাটির মুলফটকের ছাদ ঢালাইয়ের সেন্টারিং সামগ্রী থাকায় আগুন নেভাতে আসা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের গাড়ি ভেতরে প্রবেশ করতে অনেক সময় লেগেছে। এতে ক্ষয়ক্ষতির বেড়ে গেছে বলে জানান ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কর্মরত একজন শ্রমিক জানান, এসি ও ফ্রিজের কারখানা হলেও এখানে অগ্নিনির্বাপকের ব্যবস্থা ছিল না বললেই চলে। তাছাড়া কোনরকম সেফটি ছাড়াই ওয়েলডারটা ওয়েডিংয়ের কাজ করছিল।
হেড কোয়াটার (ঢাকা) ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মিডিয়া উয়িং মো: রায়হান জানান, আগুন লাগার খবর পেয়ে সোনারগাঁ, ডেমরা, বন্দর, গজারিয়া, মেঘনা, নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকাসহ প্রায় ১২টি সরকারী ও ২টি বেসরকারি ফায়ার সার্ভিসের ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনে। তবে কিভাবে কোথায় থেকে আগুনের সুত্রপাত হয়েছে তা এখনো জানতে পারেননি।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ঢাকা বিভাগীয় উপ-পরিচালক দেবাশীষ বর্ধন জানান, কারখানায় প্রচুর পরিমান দাহ্য পদার্থ থাকলেও কারখানায় অগ্নিনির্বাপকের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। নেই একটা হাইডেন্ডার। কারখানার হাইড্রিক লাইনগুলো যদি সচল থাকতো তবে আগুন নেভানো সহজ হতো। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাদ দিয়ে বলেন, অগ্নিকান্ডটা ঘটে মূলত ষ্টোর রোম থেকে।
কনকার সিকিউরিটি সুপার ভাইজার অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা আবুল খায়ের বলেন, তৃতীয় তলার এসি বিøডিং থেকে ফ্রিজ বিøডিং এ স্টিলের সংযোগ ব্রীজের কাজ করছিল। হয়তো সেখান থেকে ওয়েলডিং করার সময় আগুনের ফুলকি কোন দাহ্য পদার্থের উপর পড়ার কারনে আগুন লাগতে পারে। তিনি জানান, ষ্টোর রোমে প্রায় দুই হাজার ফ্রিজ ছিল। যা সম্পর্ণ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আতিকুল ইসলাম জানান, আগুন লাগার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ, র্যাব সহ আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তাদের সার্বিক নিরাপত্তা ও অন্যান্য ভাবে সহযোগিতা করে আসছে। এখন পর্যন্ত কেউ হতাহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।
এ সময় স্থানীয় এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) টিএম মোশারফ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আতিকুল ইসলাম, সহকারি কমিশনার (ভ’মি) গোলাম মোস্তফা মুন্না, সোনারগাঁ থানার ওসি রফিকুল ইসলাম, স্থানীয় চেয়ারম্যান আরিফ মাসুদ বাবু ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন।
আপনার মতামত জানান