স্ত্রীর পরকীয়া, স্বামীকে হত্যা, স্ত্রী-প্রেমিকসহ গ্রেপ্তার ৫

প্রকাশিত

পরকীয়া প্রেমিক হাফিজুর মণ্ডল এবং লিজা খাতুন। ছবি: আজকের পত্রিকা পরকীয়া প্রেমিককে নিয়ে পোশাক শ্রমিক স্বামী প্রতীক হাসানকে হত্যা করে স্বাভাবিক মৃত্যু দাবি করে লাশ দাফন করার চেষ্টা করে স্ত্রী লিজা খাতুন (১৯)। পরে প্রতীকের পরিবার সন্দেহের বশে স্থানীয় থানা-পুলিশকে খবর দিলে বেড়িয়ে আসে থলের বিড়াল। জানা যায়, পরকীয়া প্রেমের বলি প্রতীক হাসানকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। এই ঘটনায় পরকীয়া প্রেমিক হাফিজুর মণ্ডল (৩৫) সহ লিজা ও তাঁদের ৫ সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে আশুলিয়া থানা-পুলিশ। এ ঘটনায় এক অভিযুক্ত পলাতক থাকলেও গতকাল মঙ্গলবার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় লিজা।

গতকাল মঙ্গলবার এ তথ্য নিশ্চিত করেন আশুলিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জিয়াউল ইসলাম।

এর আগে গত সোমবার টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে প্রতীকের বাড়িতে তার লাশ দাফনের চেষ্টা করে লিজা ও তাঁর সহযোগীরা। প্রতীক হাসানের পরিবারের এ নিয়ে সন্দেহের সৃষ্টি হয়। পরে প্রতীক হাসানের বাবা বিল্লাল হোসেন ঘাটাইল থানা-পুলিশকে জানায়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘাটাইল পুলিশের সন্দেহ বাড়লে আশুলিয়া থানা-পুলিশকে খবর দেয় ঘাটাইল পুলিশ।

পরে আশুলিয়া থানা-পুলিশ গিয়ে ৫ জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠায়।

গ্রেপ্তারকৃত বাকি আসামিরা হলো , টাঙ্গাইলের ধনবাড়ি থানার হাবিবর রহমানের ছেলে লিজার পরকীয়া প্রেমিক হাফিজুরের মা লাকী বেগম, লিজার পরকীয়া প্রেমিক হাফিজুরের বন্ধু সুজন মিয়া (২৪), লিজার দাদি ফুলজান (৫৮)। লিজার বাবা লেবু খান (৫০) এখনো পলাতক রয়েছেন। তাঁরা সকলেই আশুলিয়ায় ভাড়া থাকত।

প্রতীকের বাবা বিল্লাল হোসেনের এজাহার থেকে জানা যায়, সোমবার ভোর রাতে আমাকে একজন জানায় আমার ছেলে মারা গেছে। পরে সকাল ১০টায় আমার ছেলের লাশ নিয়ে বাড়িতে আসে লিজা ও তাঁর পরিবার। পরে ছেলের শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখে আমাদের সন্দেহ হলে আমরা পুলিশে খবর দিই। এর আগে গত ২০ নভেম্বর থেকে আমার ছেলের মোবাইল বন্ধ ছিল। লিজা ও লিজার বাবা মাকে ফোন করা হলে তারাও রিসিভ করেননি। এ কারণে সন্দেহ আরও বৃদ্ধি পায়।

পুলিশ জানায়, গত সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রতীককে গলা চেপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে লিজা, লিজার বাবা, লিজার পরকীয়া প্রেমিক ও প্রেমিকের বন্ধু। এ হত্যাকাণ্ডের প্ররোচনা করে লিজার মা ও দাদি। পরে রাত আড়াইটার দিকে প্রতীককে আশুলিয়ার একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। হাসপাতালে প্রতীক স্ট্রোক করেছে বলে জানায় লিজা ও তাঁর সহযোগীরা। পরে লাশ গুম করার চেষ্টা চালায় তাঁরা।

আশুলিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) কায়সার হামিদ বলেন, নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে ঘাটাইল থানা-পুলিশ। আসামিদের গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠালে প্রতীকের স্ত্রী লিজা আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়। লিজার বাবা পলাতক থাকলেও তাঁকে গ্রেপ্তার করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

ঢাকা জেলা পুলিশের আদালত পরিদর্শক মেজবাহ উদ্দিন বলেন, লিজা স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দিয়েছে। বাকিদের ২ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছে মহামান্য আদালত।

আপনার মতামত জানান