সোনারগাঁয়ে চলন্ত বাসে কিশোরী ধর্ষণ চেষ্টা, চালক আটক

প্রকাশিত

ডেইলি সোনারগাঁ >>

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে স্বদেশ সার্ভিস নামের একটি চলন্ত বাসে এক কিশোরী যাত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টাকালে গাড়ির চালককে আটক কওে স্থানীয় জনগণ ও ব্যবসায়ীরা। ১০ জুন সোমবার রাত ১০.১৫ মিনিটে এ ঘটনা ঘটে। পরে সোনারগাঁ থানা পুলিশকে খবর দিলে গাড়ির চালক ও বাসটি জব্দ করে সোনারগাঁ থানা হেফাজতে নিয়ে যায়। এ ব্যাপারে কিশোরী যাত্রী বাদী হয়ে সোনারগাঁ থানায় চালক ও তার সহযোগীর বিরুদ্ধে একটি ধর্ষণ চেষ্টার মামলা দায়ের করেছেন।

মামলার এজহার থেকে জানা যায়, কিশোরগঞ্জের খিলপাড়া গ্রামের আশরাফউদ্দিনের মেয়ে শাহিনুর আক্তার (২২) প্রায় দেড় বছর যাবত গজারিয়া থানার ভাটেরচরস্থ ডাচ্ বাংলা প্যাক লিঃ কোম্পানীতে সুইয়িং অপারেটর হিসেবে চাকুরিরত। সে কোম্পনীর আবাসিক হলে বাসা নিয়ে থাকে। ঈদ-উল-ফিতরের ছুটি কাটিয়ে সে বাড়ি থেকে কর্মস্থলের উদ্যেশে রওনা দিয়ে সোমবার রাত ৯টার সময় গুলিস্তান স্বদেশ কাউন্টার থেকে সোনারগাঁয়ের মোগরাপাড়া চৌরাস্তার টিকিট কেটে বাসের পিছনের সিটে বসে। বাসটি রাত প্রায় ১০টার সময় মোগরাপাড়া পৌছালে সব যাত্রী নেমে পড়ে। পিছন থেকে নামার জন্য বাসের সামনে আসতে আসতে সব যাত্রী নেমে গেলে চালক শামীম মিয়া মেয়েটিকে নামতে না দিয়ে মেঘনাঘাটে নামানোর কথা বলে গাড়ি চালিয়ে নিয়ে আসে। এমন সময় চালকের সহযোগী নিরব বাসের দরজা লাগিয়ে সে ড্রাইভিং আসনে বসলে, চালক তাকে বাম হাতে মুখ চেপে পিছনের সিটে নিয়ে গিয়ে জোড়পূর্বক ধর্ষণের চেষ্টায় তার পড়নে থাকা কাপড় টেনে ছিড়ে শরীরের গোপনাঙ্গে স্পর্শ করে। এর মধ্যে বাসটি মেঘনা নিউটাউন মার্কেটের সামনে চলে আসলে লোকজন দেখে বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করলে দলবদ্ধ জনতা তাকে চালকের কাছ থেকে উদ্ধার করে। এবং চালককে পুলিশে সোপর্দ করে। ধর্ষক শামীম মিয়া সোনারগাঁ উপজেলার নানাখি মধ্যপাড়া গ্রামের আঃ রব মিয়ার ছেলে। তার সহযোগী নিরব মিয়ার ঠিকানা পাওয়া যায়নি।

সোনারগাঁ থানা পুলিশ রাতেই ভিকটিম মেয়েটিকে সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা ও সার্বিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে।

স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের মেঘনা নিউটাউন শপিং কমপ্লেক্সের ব্যবসায়ীরা দোকান বন্ধ করে রাত সোয়া দশটায় মার্কেটের সামনে গাড়ির জন্যে অপেক্ষা করছিল। এমন সময় ঢাকা টু মেঘনায় চলাচলরত স্বদেশ স্বদেশ পরিবহনের একটি গাড়ি দেখে থামাতে বললে গাড়িটি আরো দ্রুত বেগে ছুটে যেতেই বাস থেকে এক কিশোরীর বাঁচাও বাঁচাও চিৎকার শুনতে পায় স্থানীয়রা। চিৎকার শুনে সকলে দৌড়ে গাড়ির সামনে দাঁড়ায়। গাড়ি থামলে স্থানীয় লোকজন ও ব্যবসায়িরা গাড়িতে উঠে দেখতে পায় হেল্পপার নিরব মিয়া গাড়ি চালাচ্ছে আর গাড়ির চালক শামীম এক কিশোরী যাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা করছে। পরে চালককে আটক করে গণধোলাই দিয়ে সোনারগাঁ থানা পুলিশকে খবর দিলে ঘটনাস্থল থেকে এস আই তাওহীদ গাড়ির চালক এবং স্বদেশ বাসটি ( ঢাকা মেট্টো-ব-১১-৭২৬৫) আটক করে সোনারগাঁ থানায় নিয়ে আসে।

নিউটাউনের ব্যবসায়ী জসিমউদ্দিন জানান, মেয়ে কন্ঠে বাঁচাও বাঁচাও চিৎকার শুনে আমরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাসের সামনে মানব দেয়াল তৈরি করি। বাসে উঠে ধর্ষণের চেষ্টাকালে চালককে আটক করি। এ ফাঁকে সুযোগ বুঝে হেল্পপার নিরব পালিয়ে যায়। আমরা আনন্দিত যে অন্তত একটি ধর্ষণ রুখতে পেরেছি। এমনও হতে পারতো ধর্ষণ শেষে মেয়েটিকে হত্যা করে ফেলে যেতো। আমরা এ ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

সোনারগাঁ থানার ওসি মনিরুজ্জামান বলেন, এ ব্যাপারে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ধর্ষণ চেষ্টা ও সহায়তার অপরাধে সোনারগাঁ থানায় একটি মামলা নেওয়া হয়েছে এবং আসামীকে জেলা আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। ধর্ষণ চেষ্টার সহযোগী পলাতক আসামী নিরবকে গ্রেফতারের জন্য পুলিশের বিশেষ টিম কাজ করছে।

আপনার মতামত জানান