সোনারগাঁয়ের মেঘনা নদীতে অবাধে চলছে মা ইলিশ নিধন

প্রকাশিত

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মেঘনা নদীতে মা ইলিশ নিধনের মহোৎসব চলছে। স্থানীয় প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে অবৈধ কারেন্ট জাল ব্যবহার করে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ মাছ শিকার করছেন জেলেরা। নিষেধাজ্ঞার এ মাসে কিছু জাল জব্দ এবং কয়েকজনের জেল-জরিমানা ছাড়া তেমন কোনো সাফল্য নেই উপজেলা প্রশাসনের।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার নুনের টেক, আনন্দ বাজার, চরবলাকী, চরকিশোরগঞ্জ, সায়দাবাদের আড়াই হাজার উপজেলা পয়েন্ট, ডেঙ্গুরকান্দি এলাকায় দিনে ও রাতে বিপুল পরিমাণ মা ও জাটকা কারেন্ট জালে ধরা পড়ছে। আর এ মাছ প্রতি কেজি সাড়ে চারশ’ থেকে পাঁচশ’ টাকা দরে দালালদের মাধ্যমে পৌঁছে দেয়া হয় ক্রেতাদের বাড়িতে।

গতকাল সরেজমিন সোনারগাঁয়ের মেঘনা নদী ও নদীবেষ্টিত গ্রাম নুনেরটেকে গিয়ে দেখা গেছে, নদীর পাড়ে মা ইলিশের বিরাট বড় অস্থায়ী বাজার গড়ে উঠেছে। নারী ও পুরুষ ক্রেতাদের ভিড় চোখে পড়ার মতো। প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত এ বাজারে মাছ কেনাকাটা হয় বলে জানান, মাছ কিনতে আসা ক্রেতারা। শতশত জেলে নৌকা মা ইলিশ নিধনে ব্যস্ত। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জেলে জানান, এ সময় জালে প্রচুর মাছ আটকা পড়ে। প্রতিদিন গড়ে বিশ হাজার টাকার মাছ বিক্রি করতে পারি। তাছাড়া এখানে কোষ্টগার্ড, নৌ-পুলিশ ও মৎস কর্মকর্তারা খুব কম আসার কারনে নিরাপদে জেলেরা মাছ ধরতে পারে।

শত শত নারী পুরুষের মাঝে স্থানীয় দালালদের একটি চক্র কমদামে মাছ ক্রয় করে ফ্রীজে রেখে তা বেশী দামে ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করছে। তাছাড়া স্থানীয় নুনের টেক উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক শামীমা াক্তারকে মাছ কিনতে ব্যস্ত দেখা যায়। একটি নৌকা ঘাটে ভিরতেই ক্রেতাদের ভিড় লক্ষ্য করা যায়। নৌকা থেকেই মাছ বিক্রি করে আবারো ছুটে যান মাছ শিকারে। প্রায় তিনঘন্টা নুনেরটেকে অবস্থান করলে স্থানীয় মৎস কর্মকর্তা, নৌ-পুলিশ ও কোষ্টগার্ডের কোন টিম চোখে পড়েনি।

উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার শান্তির বাজার, আনন্দ বাজার, টেকপাড়া, গোয়ালপাড়া, মামরকপুর, ভাটিবন্ধ, ঝাউচর, নয়াগাঁও, দুধঘাটা, পাঁচানী, হোসেনপুর, শম্ভুপুরা ও চরকিশোরগঞ্জ সহ নদী তীরের বিভিন্ন গ্রামে ও বাজারে মা ইলিশ বিক্রয় করছে।

জেলেরা জানান, সরকার থেকে মাত্র ২০ কেজি চাল পাই, তা দিয়ে প্রায় এক মাস চলা কঠিন কাজ। তাই ঝুঁকি নিয়ে নদীতে ইলিশ ধরি। মাঝে মাঝে কোস্টগার্ড, পুলিশ এসে জাল নিয়ে যায়। আবার জাল কিনে কাজ শুরু করি।

এ বিষয় সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাহমুদা আক্তার জানান, আমরা আজ মেঘনার দিকে থাকায় নুনের টেকের দিকে যেতে পারিনি। আগামীকাল (আজ) নজরদারি আরো বাড়িয়ে দেওয়া হবে। তাছাড়া লোকবল কম হওয়ায় সব স্থানে একসাথে টহল দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। আর এ সুযোগে জেলেরা মাছ নিধন করছে।

আপনার মতামত জানান