আ’লীগের দু-গ্রুপে সংঘর্ষ, প্রতিমা ভাংচুর

প্রকাশিত

ডেইলি সোনারগাঁ >>
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলায় আওয়ামী লীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষ ও পূজা মন্ডপে লক্ষ্মী প্রতিমা ভাংচুরের খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের ১০ জন আহত ও কয়েকটি গাড়ি ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। ১৬ অক্টোবর সন্ধ্যায় জামপুর ইউনিয়নের গাবতলী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকাবাসী জানান, উপজেলার জামপুর ইউনিয়নের গাবতলী এলাকায় প্রবীন আ’লীগ নেতা ও জামপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হুমায়ন কবির মেম্বারের প্রতিবেশী হরি সুদনের বাড়িতে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও লক্ষ্মীপুজার আয়োজন করে। গতকাল সন্ধ্যায় পুজা মন্ডপ পরিদর্শনে যান নারায়ণগঞ্জ আ’লীগের যুগ্ম সম্পাদক অধ্যাপক ডাঃ আবু জাফর চৌধুরী বিরু। একই সময়ে হুমায়ুন মেম্বার যুবলীগের সভায় যেতে নেতাকর্মীদের নিয়ে রাস্তায় অপেক্ষা করছিলেন। বিরুর গাড়ি বহর ব্যারিকেট দিয়ে হুমায়ণ মেম্বারের লোকজন রাস্তা পাড় হচ্ছিলেন। উভয় নেতার সাথে আ’লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ছিলেন। এ সময় তাদের মধ্যে বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে সংঘর্ঘের সৃষ্টি হলে দু’গ্রুপের প্রায় ১০ জন নেতাকর্মী আহত হয়। সংঘর্ষে হুমায়ন কবিরের ছেলে রুবেল মিয়া, রোমান মিয়া, শ্যালক রিপন মিয়া মারাত্মক আহত হন। অন্যদিকে ডা. বিরুর সমর্থক মোখলেছুর, নাজমুল হোসনে, নাফি মিয়া ও জাহিদ হোসেন আহত হয়।

এ ব্যাপারে ডা. বিরু বলেন, মন্ডপে যাওয়ার পথে হুমায়ন মেম্বার বাঁধা দিলে তাকে বুঝিয়ে পূজা মন্ডপে যাচ্ছিলাম। কিন্তু তার বড় ছেলে রোমান মিয়া একটি রিভালভার নিয়ে গুলি করার জন্য তাক করলে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। এ সময় গাড়ি বহরে ইটপাটকেল ছুড়লে দু’একটি গাড়ির কাঁচ ভেঙ্গে যায়। প্রতিমা ভাংচুরের ব্যাপারে বলেন, আমরা মন্ডপ পর্যন্ত যেতেই পারিনি, রাস্তা থেকে ফিরে এসেছি।

হুমায়ন মেম্বার জানান, আমি যুবলীগের মিটিংয়ে যাওয়ার পথে রাস্তায় বিরুর গাড়ি বহর থেকে কয়েকটি মটর সাইকেল এসে গতিরোধ করে আমার উপর হামলা করে। এসময় আমার দুই ছেলে, শ্যালক ও আশপাশের মানুষ এগিয়ে আসলে তাদেরকে রড ও হকিষ্টিক দিয়ে মারাত্মক আহত করে। এ সময় পুলিশের সহযোগিতায় আমি আহতদের সোনারগাঁ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে যাই। প্রতিমা ভাঙচুরের ব্যাপারে বলেন, আমি পুলিশের সহযোগিতায় আহতদের নিয়ে হাসপাতালে ছিলাম। তবে যারা এর সাথে জড়িত আমি তাদের শাস্তি চাই।

উপজেলা পুজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ কুমার ভৌমিক জানান, কারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত এখন সঠিকভাবে কিছু বলা যাচ্ছে না। আমরা আগামীকাল গিয়ে সবার সাথে কথা বলে এ ব্যাপারে নিশ্চিত হতে পারব। জড়িতদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবী জানান তিনি।

সোনারগাঁ উপজেলার একাধিক অ’লীগ নেতা বলেন, প্রতিমা ভাংচুর স্বাধীনতা বিরোধীদের একটি চক্রান্ত। আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতাকর্মীদের মিথ্যা হয়রানি করতে পরিকল্পিতভাবে প্রতিমা ভাংচুর করেছে বলেও তাদের ধারনা। তাছাড়া এ দু’গ্রুপের সংঘর্ষের সুযোগে দেশকে অস্থিতিশীল করতে তৃতীয় কোন পক্ষ এ ঘটনা ঘটাতে পারে।

সোনারগাঁ থানার ওসি মনিরুজ্জামান জানান, সংঘর্ষ ও প্রতিমা ভাংচুরের খবর পাওয়ার সাথে সাথে থানা পুলিশের কয়েকটি টিম এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। দোষীদের খুজে বের করতে আমাদের বিশেস টিম ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে।

আপনার মতামত জানান