সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশ হাইকমিশনের ভুল সিদ্ধান্ত, হুমকীর মুখে বাংলাদেশী শ্রমবাজার!

প্রকাশিত

সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশী হাই কমিশনের বর্তমান সত্যায়ণ পদ্ধতি বাংলাদেশের শ্রমবাজারকে ধ্বংস করবে বলে অভিযোগ সিঙ্গাপুরে কর্মরত এবং সিঙ্গাপুর অভিমুখী শ্রমিকরেদ অভিযোগ। সিঙ্গাপুর সরকারের কোন নোটিস ছাড়া নিজেদের মনগড়া কিছু আইন তৈরী করে শ্রমবাজারে ব্যাপক অব্যবস্থাপনার জন্ম দিচ্ছে বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছে। তাই শ্রমিক বান্ধব আইন করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন সিঙ্গাপুরে কর্মরত বাংলাদেশী শ্রমিকরা।

জানা যায়, এখন থেকে নতুন কোন শ্রমিক সিঙ্গাপুরে আসতে হলে সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশী হাইকমিশন থেকে নির্দিষ্ট পরিমান ফি (১২ ডলার) জমা দিয়ে সত্যায়িত করতে হবে৷ বাংলাদেশী শ্রমিক আনতে হলে সত্যায়িত প্রক্রিয়াটি আবেদনকারী কোম্পানিকে বাংলাদেশী হাইকমিশনে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে করতে হবে। কোম্পানীর কোন প্রতিনিধি অগ্রাহ্য হবে।যা এক প্রকার বাড়তি ঝামেলা ছাড়া কিছুই না৷ এই উটকো ঝামেলার কারনে অনেকেই বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নিতে অনাগ্রহ প্রকাশ করছে বলে জানা যায়।

সিঙ্গাপুরে কর্মরত বিদেশী ঠিকাদারি কম্পানীর মালিকরাও এই ধরনের সিস্টেমে ব্যাপক বিরক্ত প্রকাশ করছেন। এ ধরনের আইন নিজেদের বিজনেস পলিসিতে না থাকায় শ্রমিক নিয়োগে অন্যান্য দেশ থেকে তাদের চাহিদা পূরণ করছে। এই বিষয়ে সিঙ্গাপুরে অবস্থানরত প্রতিটি শ্রমিক হতাসা ব্যাক্ত করেছেন। যা হাই কমিশনের পেইজে প্রচারিত নোটিসে সকলের বক্তব্য সু-স্পষ্ট।

এছাড়াও সিঙ্গাপুর প্রবাসী জানান, বাংলাদেশীদের জন্য আইপি আবেদন করলে মিনিস্টার অব ম্যানপাওয়ার থেকে অজানা কারনে রিজেক্ট আসে৷ অথচ অন্য দেশের জন্য আবেদন করলে খুব দ্রুতই তা এপ্রুভ করা হয়। বাংলাদেশীদের আইপি কেন রিজেক্ট আসে তা জানতে হাইকমিশনে বার বার যোগাযোগ করলেও কমিশন কোন সদুত্তর দিতে পারেনি বলে জানান ভুক্তভোগীরা। এরই মধ্যে হাইকমিশনের নতুন পদক্ষেপের কারনে সিঙ্গাপুরের কোম্পানিগুলো বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক আনতে অনাগ্রহ প্রকাশ করছেন।

ফলে সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশী শ্রমিক আসার অপার সম্ভাবনা থাকলেও আইনি জটিলতার কারনে সম্ভব হচ্ছে না৷ এতে দেশ আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে৷ আমরা হারাতে বসেছি সিঙ্গাপুরে আমাদের শ্রম বাজার৷

সিঙ্গাপুর প্রবাসী শরীফ উদ্দিন জানান, বিশ্বে আর কোথাও এমন অনিয়ম আছে কিনা অদৌ জানা নেই। সহজ বিষয়গুলিকে মাকড়শার জালের মতো তারা বিস্তৃত করে যাচ্ছে। কাদের প্ররোচনায় এই ধরনের মনগড়া সিদ্ধান্ত নিচ্ছে প্রশ্ন থেকে যায়! প্রবাসমুখী শ্রমিকদের নিয়ে হাইকমিশনের এই ধরনের হাস্যকর ছেলেখেলা সিদ্বান্ত নেওয়ার পূর্বে সে দেশে অবস্থানরত শ্রমিকদের মতামত নেওয়া প্রয়োজন ছিলো অথবা সিঙ্গাপুর হাইকমিশনের পরিচালিত যেই পেইজ রয়েছে সেখানে জনমত যাচাই করা প্রয়োজন ছিলো। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় যে, তারা এই ব্যাপারটির ভালোমন্দ কিছু বিশ্লেষণ না করেই তারা অতর্কিতভাবে একটি অবাঞ্চিত বিষফোড়া সিস্টেম চাপিয়ে দিয়েছে!

সোনারগাঁয়ের প্রবাসী শামীম আহমেদ জানান, মালিকরা সিঙ্গাপুরের লাইনে সত্যায়িত করবে এটা ভাবা যায় না। তবে সিস্টেমটা যদি অনলাইনে অনলাইনে ব্যাংক ড্রাফটের মাধ্যমে হতো তবে কিছুটা হলেও মেনে নেওয়া যেতো। তা না করে নগদ অর্থ লেনদেন যেন অনলাইনের যুগে এনালগ সিস্টেমে ফিরে যাওয়া। যার কুফল সহ্য করে ইতিমধ্যেই ভুক্তভোগীরা মতামত প্রকাশ করেছেন!

সিঙ্গাপুরে অবস্থানরত প্রবাসীরা আশা করছেন সিঙ্গাপুর হাইকমিশন খুব শীঘ্রই এই নতুন নিয়ম বাতিল করে পুরোনো নিয়োগ সিস্টেম চালু করবেন। নয়তো অচিরেই স্বপ্নের দেশে পারি জমানো স্বপ্নই থেকে যাবে।

বাংলাদেশ হাইকমিশন সিঙ্গাপুর এর ফেসবুক পেইজে জারিকৃত নোটিশের ব্যাপারে যারা ফেসবুকের কিছু মন্তব্য হবহু তুলে ধরা হলো :-

Mohammad Danesh এটা খুব কঠিন ভূমিকা এবং প্রবিধান । বেশির ভাগ কর্মী কোম্পানি হারিয়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে । দয়া করে এই সিস্টেম বন্ধ করুন এবং শ্রমিক জীবন সম্পর্কে চিন্তা করুন ।

Uttam Deb Nath সিঙ্গাপুরের শ্রম মার্কেট রক্ষার জন্য এই হয়রানি বন্ধ করার জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও শ্রম মন্ত্রণালয় দ্বারা যথাযথ প্রচেষ্টা নেওয়া উচিত ।

Ali Azam প্রতিটি দেশ দূতাবাস কিছু কাজ করছে কিভাবে দেশ উন্নয়ন করতে হয় কিন্তু আমার দেশ বাংলাদেশ দূতাবাস কিছু কাজ করেছে কিভাবে দেশের নিচে যেতে হয় ।

Dewan Badhon পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে
বাংলা দেশী লোক নেওয়া বন্ধ করছে শুধু হাইকমিশনের কর্মকর্তারা উদাসিনতা মনগড়া নিয়ম করার কারণে,হইতো সিঙ্গাপুরে খুব তাড়াতাড়ি বন্ধ হয়ে যাবে

Imran Hasan আপনাদেরকে গালি দিতে ইচ্ছে করে খুব, কিন্তু নিরুপায় কারন আমি আপনাদের মত … দূর্ঘটনায় জন্ম নেয়া মানুষ নই । আপনারা বর্তমানে যা করতেছেন তা Singapore এ Bangladesh এর শ্রমবাজার বিনষ্ট করার একটি প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছেন,
আপনাদের অনেক কিছু বলার আছে কিন্তু আমি Major সমস্যা গুলো দেখাই, যদিও জানিনা আপনাদের উর্দতন কর্মকর্তার চোখে পরবে কি না তারপর ও বলি –
1) IPA Attachment.
2) Passport renewal.
3) Holiday & Public Holiday.

1) IPA Attachment নামে আপনারা যে নাটক শুরু করেছেন তা নিতান্তই দুখের ব্যাপার কেননা কোন Boss ই চাইবেনা সারাদিন আপনাদের স্টাফদের মত থার্ড ক্লাশ লোকেদের approval এর জন্য wait করতে, তাদের অন্য কাজ ও আছে । তাই অনেক বসই Bangladeshi Workers আনতে অনাগ্রহী, আর যদি এমন হতে থাকে তাহলে আমাদের শ্রমবাজার নষ্ট হয়ে যাবে ।
2) Passport Renewal অন্য একটা বড় সমস্যা আপনাদের কাছে বর্তমানে, যেখানে অন্য দেশ ১-৭ দিনের মধ্যে ডেলিভারি দেয় সেখানে আপনারা অনেক পিছিয়ে কারন সময় লাগে ৩ মাস, জানিনা এই বাকি ৮৩ দিন আপনারা কি বসে বসে আঙুল চোষেন নাকি অন্য কিছু চোষেন ।
3) Holiday & Public Holiday এর জন্যই আপনারা থাকেন এখানে তাইনা? সপ্তাহে কাজ করেন ৫ দিন তার মধ্যে আবার দুই দেশের ছুটি কাটান এত সুখ কই রাখবেন??
আর আপনাদের ব্যবহার সম্পর্কে সবাই অবগত আছে জানি, তাই কিছু লিখলাম না এই ব্যাপারে ।

Shamim Ahmed আমার কোম্পানির মালিক সে খুবই বিরক্ত হয়েছে এ সমস্ত বাজে আইন করার জন্য এবং সে বলছে বাংলাদেশের হাইকমিশনারের লোকজন নাকি সব মূর্খ গণ্ডা গরু

আপনার মতামত জানান