সভাপতির স্বাক্ষর জালিয়াতি প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ

প্রকাশিত


নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয় হাজী মতিউর রহমান সরকার উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে স্বাক্ষর জালিয়াতির অভিযোগ করেছেন বিদ্যালয়ের সভাপতি মোহাম্মদ আলী। স্বাক্ষর জালিয়াতি করে প্রধান শিক্ষক তার ভাই ও ভাবীকে নিয়ম বর্হিভুতভাবে এমপিও ভুক্ত করার জন্য আবেদন করার অভিযোগ উঠেছে। এর প্রতিকার চেয়ে বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি জেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর লিখিত আবেদন করেছেন।

এ ব্যাপারে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আলী জানান, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাকসুদুর রহমান সরকার নিয়ম বর্হিভুতভাবে বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নাম এমপিওভুক্তির তালিকার জন্য আবেদন না করে অনৈতিকভাবে তার ভাই মাহমুদুর রহমান সরকারকে (সহকারী শিক্ষক) ও ভাবী সানজিয়াকে (আইসিটি) শিক্ষক হিসেবে এমপিওভুক্তির জন্য অঅবেদন করেছেন। আর তা করতে গিয়ে তিনি অসুদুপায় অবলম্বন করে আবেদন পত্রের ছয়টি স্থানে আমার স্বাক্ষর জাল করেন এবং ছয়শত টাকার ষ্ট্যাম্পেও স্বাক্ষর জাল করেছেন। যা একজন শিক্ষক হিসেবে শিক্ষকদের আদর্শকে কলঙ্কিত করেছেন। বিষয়টি জানতে পেরে আমি উপজেলা শিক্ষা অফিসার সাইফুল ইসলাম প্রধানকে মৌখিকভাবে জানিয়েছি এবং জেলা শিক্ষা অফিসার শরিফুল ইসলামের বরাবর লিখিতভাবে এ দূর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আবেদন করেছি। তিনি অভিযোগ করে বলেন, উপজেলা শিক্ষা অফিসার বিষয়টি জেনেশুনেই অনৈতিক সুবিধা নিয়ে তাদের আবেদনে স্বাক্ষর করেছেন।

উল্লেখ থাকে থাকে, বিদ্যালয়ের তৎকালিন প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মতিউর রহমান সরকার নিয়মবর্হিভুতভাবে তার এক ছেলে মাকসুদুর রহমান সরকারকে প্রধান শিক্ষক, মাহমুদুর রহমান সরকারকে জুনিয়র সহকারি শিক্ষক ও আরেক ছেলের স্ত্রীকে আইসিটি শিক্ষক নিয়োগ দেন। দুজনের নিয়োগে দূর্নীতির অভিযোগ থাকায় তৎকালীন শিক্ষা অফিসার এসএম আবু তালেব নিয়োগপত্রে স্বাক্ষর করেননি বলেও জানা যায়। নিয়োগের পর থেকে বিদ্যালয়ে না এসেও হাজিরা খাতায় উপস্থিত দেখিয়ে নিয়মিত বেতন তুলে নিচ্ছেন তারা। সভাপতির ছেলে ও ছেলের স্ত্রী বিদ্যালয়ে উপস্থিত না হয়েও দীর্ঘদিন যাবত শিক্ষক হিসেবে বিদ্যালয় থেকে বেতন তোলার বিষয়টি অন্যান্য শিক্ষক, জনপ্রতিনিধি ও এলাকাবাসীর দৃষ্টিগোচর হলে এ বিষয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি উপজেলা ও জেলা শিক্ষা অফিসারের বরাবর লিখিত আবেদন করেন। গত ১৮ অক্টোবর ২০১৮ সালে দৈনিক কালের কন্ঠে ‘অনুপস্থিত থেকেও স্বাক্ষর বেতন তোলেন শিক্ষক’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হলে ২৮ অক্টোবর বিভাগীয় তদন্তের পর সানজিয়া রহমানের নিয়োগ অবৈধ প্রমানিত হওয়ায় তার নিয়োগ বাতিল করেন তদন্ত কমিটি।

এ ব্যাপারে বর্তমান সভাপতি মোহাম্মদ আলী জানান, যাদের এমপিও ভুক্তির জন্য আবেদন করা হয়েছে তারা আমার বিদ্যালয়ের শিক্ষকই না। তাই তাদের আবেদন বাতিলের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন এবং আমার স্বাক্ষর জাল করার জন্য প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানাচ্ছি।

অভিযোগের বিরুদ্ধে জানতে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাকসুদুর রহমানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সাইফুল ইসলাম প্রধান জানান, আবেদনের সাথে প্রয়োজনী কাগজপত্র জমা দেওয়ায় আমি প্রধান শিক্ষকের আবেদনে স্বাক্ষর করেছি। এখানে সভাপতির স্বাক্ষর জাল ছিল না কিনা তা আমার জানা নেই।

জেলা শিক্ষা অফিসার শরীফুল ইসলাম জানান, এ ব্যাপারে অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্তের সড়েজমিন তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।


আপনার মতামত জানান