বৃষ্টিতে ডুবে যাচ্ছে কৃষকের ধান পাঁকার স্বপ্ন

প্রকাশিত

কয়েকদিনের বৃষ্টিতে তলিয়ে যাচ্ছে কৃষকের বুকে ঝিইয়ে রাখা বেঁচে থাকার শেষ অবলম্বন ধানপাঁকার স্বপ্ন। করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে ধান কাটার শ্রমিক না পাওয়ায় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবীরা সম্মিলিতভাবে কৃষকদের ধান কাটতে জমিতে নামলেও ফটোসেশন ও অধিকাংশ স্বেচ্ছাসেবক অনভিজ্ঞতা হওয়ায় খুব বেশী লাভবান হতে পারছে না কৃষক। শ্রমিক অভাব ও টানা বৃষ্টিতে কৃষকদের কপালে পড়েছে চিন্তার ভাঁজ। বৃষ্টি আর ঢলের কারণে ফসলি জমি ডুবে গিয়ে ব্যাপক ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান তারা।

গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে ফসলি জমির প্রচুর ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে মনে করছেন কৃষি বিশেষজ্ঞরা। বৃষ্টির পাশাপাশি মেঘনা নদী ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তলিয়ে গেছে বোরো ধানের জমি। এতে ফসলহানির আশঙ্কা করছেন ভুক্তভোগী কৃষকরা।
কয়েকজন কৃষকের সাথে কথা বলে জানান যায়, নদী তীরবর্তী পিরোজপুর, শম্ভুপুরা, মোগরাপাড়া, বৈদ্যের বাজার, আনন্দ বাজারসহ কয়েকটি ইউনিয়নের নদনদী তীরবর্তী ২৭টি গ্রামের কৃষকেরা প্রায় ৩০০ হেক্টরসহ সোনারগাঁয়ে মোট ৬ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ করেছেন। বৃষ্টির কারণে ধানগুলো জমির সাথে ঝুলে পড়ে অধিকাংশ জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। তারা জানান, সময়মতো সোনালি ফসল ঘরে তুলতে না পারলে পানিতে ফসল তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। অন্যান্য বছর বন্যার হাত থেকে ফসল রক্ষায় অধিক শ্রমিক দিয়ে তড়িঘড়ি করেই ধান কাটিয়ে নিলেও এবার বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে চলমান ‘লকডাউন’। এবার করোনাভাইরাসের শঙ্কায় এবং লকডাউন থাকায় যারা অন্যান্য বছর ধান কাটতে আসতেন, তারাও আসতে পারছেন না। শতভাগ ধান পাকতে আরো একসপ্তাহ সময় লাগবে।

সনমান্দী ইউনিয়নের অলিপুরা জোয়ারদী গ্রামের দীনইসলাম জানান, জমির পুরো ধান এখনো পাকেনি। যেগুলো পেকেছে বৃষ্টির জন্য তাও কেটে আনতে পারছি না। সপ্তাহ খানেক সময় পেলে সব ধান বাড়িতে তুলতে পারতাম। করোনার কারণে আমাদের একমাত্র ভরসা ধানী জমি। ধান নষ্ট হলে প্রাণে বাঁচা দায় হয়ে দাঁড়াবে।

সোনারগাঁ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মনিরা আক্তার জানান, এ বছর অন্যান্য বছরের তুলনায় ফলন ভালো হয়েছে। শতভাগ ফসল পাকতে আরো ১৫ দিন সময় লাগবে। এ বছর সোনারগাঁয়ে প্রায় সাড়ে ৬ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ২ ভাগ জমির ফসল কাটা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম স্যারের নেতৃত্বে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ধান কাটার জন্য ৫০০ সদস্যের স্বেচ্ছাসেবক কমিটি হয়েছে। তারা স্বেচ্ছাশ্রমে কৃষকের ধান কেটে মাড়াই করে ঘরে তুলে দিবে। আমরা কৃষকদের পাশে থেকে সার্বক্ষনিক মনিটরিং করছি।

আপনার মতামত জানান