বাংলাদেশে গণমাধ্যম পূর্ণাঙ্গ স্বাধীন-তথ্য প্রতিমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক
গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জায়গায় কোথাও কোনোভাবে সমস্যা তৈরি হোক, সরকার তা চায় না এবং হতে দেবে না বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত। বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এডিটরস গিল্ড বাংলাদেশের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে প্রতিমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
এ সময় প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে গণমাধ্যম পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতা ভোগ করছে এবং করবে। গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জায়গায় কোথাও কোনোভাবে সমস্যা তৈরি হোক, এটা সরকার চায়না এবং হতে দেবে না।
কিন্তু একই সঙ্গে গণতন্ত্র এবং উন্নয়নের অগ্রগতি-অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে। একই সঙ্গে সরকার এটাও বিশ্বাস করে, যারা যুদ্ধাপরাধী, মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অপশক্তি, জঙ্গি, উগ্রবাদী, তাদের একটা জায়গায় রেখে গণতন্ত্র কখনোই সফল হয় না। এ জন্য সরকারের অবস্থান উগ্রবাদের বিপক্ষে, জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসের বিপক্ষে, মৌলবাদের বিপক্ষে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাইরে যারা তাদের বিপক্ষে, গণতন্ত্রের পক্ষে, নির্বাচনের পক্ষে। সে জায়গায় গণমাধ্যম, রাজনীতিবিদ, সরকার—সবার মধ্যে ঐকমত্য আছে।
’
সরকার পরিচালনায় ভুলভ্রান্তি, বিচ্যুতি থাকলে সমালোচনা করার জন্য গণমাধ্যমের সম্পাদকদের এ সময় আহ্বান জানান প্রতিমন্ত্রী। সরকার এটিকে স্বাগত জানাবে বলেও জানান তিনি। পাশাপাশি সরকারের ভালো কাজগুলোর স্বীকৃতি দিয়ে সেটি গণমাধ্যমে তুলে ধরার আহ্বানও জানান আরাফাত।
মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেন, ‘বাংলাদেশ, বাংলাদেশের পতাকা, আমাদের জাতীয় সংগীত, জাতির জনক, সংবিধান, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রশ্নে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
একই সঙ্গে ষড়যন্ত্র যেগুলো অতীতে বাংলাদেশে হয়েছে, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র, দেশের ভেতরেও অনেকে এসব ষড়যন্ত্রে অংশগ্রহণ করে এবং তার ফলাফল হিসেবে ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট আমরা দেখেছি। অতীতে অনেক অভিজ্ঞতা আমাদের আছে। এসব ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকতে হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘অনেক ক্ষেত্রে আমাদের বিদেশি বন্ধুরা বলতে চান, সংসদ একতরফা হয়ে গেছে। তাঁরা বলেন, এখানে বিরোধী দল নেই।
আমরা অবশ্যই শক্তিশালী বিরোধী দল চাই, সমালোচনা চাই, সংসদের মধ্যে আলোচনা চাই। কিন্তু আমরা জঙ্গিবাদ, উগ্রবাদ ও মুক্তযুদ্ধবিরোধী কোনো অপশক্তি চাই না। এ বিষয়ে আমাদের ঐক্য থাকতে হবে।’
যারা নির্বাচন বর্জন করতে বলে, হুমকি দেয়, তারা কি গণতন্ত্রের পক্ষে হতে পারে?—মতবিনিময়কালে এমন প্রশ্নও তোলেন প্রতিমন্ত্রী। এবারের নির্বাচন, যারা নির্বাচন বর্জনকারী তাদের না বলার নির্বাচন। তারা এ দেশের জনগণ না বলে মন্তব্য করেন প্রতিমন্ত্রী।
এডিটরস গিল্ড গণতন্ত্রের পক্ষে, নির্বাচনের পক্ষে, বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার পক্ষে সরকারে সঙ্গে একসঙ্গে থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী।
সভায় উপস্থিত ছিলেন এডিটরস গিল্ড বাংলাদেশের কার্যনির্বাহী কমিটির সভাপতি ও একাত্তর টেলিভিশনের প্রধান সম্পাদক মোজাম্মেল বাবু, সাধারণ সম্পাদক ও দি বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের সম্পাদক ইনাম আহমেদ, আজকের পত্রিকার সম্পাদক গোলাম রহমান, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার প্রধান সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, দৈনিক সংবাদের সম্পাদক আলতামাশ কবির, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, ডিবিসি টেলিভিশনের প্রধান সম্পাদক মঞ্জুরুল ইসলাম, আমাদের অর্থনীতির প্রধান সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম খান, দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক সাইফুল আলম, বাংলাদেশ জার্নালের সম্পাদক শাহজাহান সরদার, ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত, গ্লোবাল টেলিভশনের সিইও সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, বাংলা ট্রিবিউনের সম্পাদক জুলফিকার রাসেল, এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ারের সম্পাদক মোল্লাহ এম আমজাদ হোসেন, এক টাকার খবরের সম্পাদক মুন্নী সাহা, আমাদের নতুন সময়ের সম্পাদক নাসিমা খান মন্টি, এটিএন বাংলার প্রধান নির্বাহী সম্পাদক জ ই মামুন প্রমুখ।
আপনার মতামত জানান