বঙ্গভবনে উঠলেন রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন
সপরিবারে বঙ্গভবনে উঠেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সোমবার (২৪ এপ্রিল) সকালে দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথগ্রহণের পর রাতেই রাষ্ট্রপ্রধান গুলশানের বাসা ছেড়ে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বঙ্গভবনে ওঠেন। বঙ্গভবন সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সোমবার (২৪ এপ্রিল) বেলা ১১টায় বঙ্গভবনের দরবার হলে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন মো. সাহাবুদ্দিন। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী শপথ পাঠ করান। বিকেলেই প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এদিন দুই মেয়াদে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করা আবদুল হামিদকে রাজসিক বিদায় জানানো হয়। সদ্যোবিদায়ি রাষ্ট্রপতি রাজধানীর নিকুঞ্জের বাসায় উঠেছেন।
রাষ্ট্রের এক নম্বর ব্যক্তি হিসেবে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা, সব ধরনের রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা পাবেন মো. সাহাবুদ্দিন। শুধু তিনিই নন, তার পুরো পরিবারের জন্যও থাকছে নানা সুযোগ-সুবিধা। নিরাপত্তার পাশাপাশি বেতন-ভাতা, দেশে-বিদেশে বিনা মূল্যে চিকিৎসা, রাষ্ট্রীয় খরচে বিদেশ ভ্রমণের মতো সুযোগ যেমন পাবেন, তেমনি কিছু ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতিকে ক্ষমা করারও অধিকার দিয়েছে সংবিধান।
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ১৯৪৯ সালের ১০ ডিসেম্বর পাবনা শহরের শিবরামপুরের জুবিলী ট্যাংক পাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তার ডাকনাম চুপ্পু। তার পিতা শরফুদ্দিন আনছারী, মাতা খায়রুন্নেসা। ১৯৭৪ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএসসি ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। পরে এলএলবি ও বিসিএস (বিচার) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। পাবনা এডওয়ার্ড কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক, পাবনা জেলা ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সভাপতি ছিলেন। জেলা বাকশালের যুগ্ম সম্পাদক ও জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।
সাহাবুদ্দিন ছেষট্টির ছয় দফা আন্দোলন, উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান, সত্তরের নির্বাচন এবং একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। পাবনা জেলার আন্দোলন-সংগ্রামে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন তিনি। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের পর তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ করেন। ওই সময় সামরিক স্বৈরশাসকদের রোষানলে তিন বছর জেল খাটেন এবং অমানুষিক নির্যাতনের শিকার হন।
মো. সাহাবুদ্দিন দৈনিক বাংলার বাণীতে সাংবাদিকতাও করেছেন। তার অনেক কলাম বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে ছাপা হয়েছে। কর্মজীবনে তিনি জেলা ও দায়রা জজ এবং দুদকের কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক এবং বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে নিযুক্ত সমন্বয়কারী হিসেবেও তিনি দায়িত্ব পালন করেন তিনি। সাহাবুদ্দিন পরপর দুইবার বিসিএস (বিচার) অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব নির্বাচিত হন। চাকরি থেকে অবসরের পর হাইকোর্টে আইন পেশায় নিযুক্ত হন।
২০০১ সালের নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতা তদন্তে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। সাবেক এই ছাত্রনেতা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এবং কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রকাশনা উপকমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন সাহাবুদ্দিন।
আপনার মতামত জানান