ফেন্সি ও রাজাকার বংশধরমুক্ত আ’লীগের দাবী

প্রকাশিত

উপজেলা আ’লীগের দীর্ঘদিনের ত্রিমূখী বিরোধের সুযোগে গত ১৫ জুলাই উপজেলা আ’লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এড.সামসুল ইসলাম ভূঁইয়াকে আহবায়ক, ইঞ্জি. মাসুদুর রহমান মাসুমকে যুগ্ম আহবায়ক এবং ডা. আবু জাফর চেীধুরী বিরুকে সদস্য করে ৮ সদস্যের কমিটির অনুমোদন দেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই এবং সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহীদ বাদল।

কমিটিতে জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক এস এম জাহাঙ্গীর, মোগরাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফ মাসুদ বাবুর অনুমতি না নিয়ে তাদের অজ্ঞাতে নাম দেয়ার বিষয়টি জানতে পেয়ে সাথে সাথে তার কমিটিকে অবৈধ ঘোষনা করে এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন। কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন, সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান বাবু ওমর, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মাহমুদা আক্তার ফেন্সী ও জামপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সামসুদ্দিন খান আবু।

গত ৩০ জুলাই আহ্বায়ক কমিটির সংবাদ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেন আ’লীগের সাবেক সাংসদ কায়সার হাসনাত, জেলা আ’লীগের সদস্য ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন, উপজেলা আ’লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক মাহফুজুর রহমান কালাম, মোগরাপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান আরিফ মাসুদ বাবু প্রমূখ।

সোনারগাঁয়ের আহ্বায়ক কমিটির কয়েকজন সদস্যের পরিবার মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী, বাবু ওমরকে সন্ত্রাস ও পরিবহন চাঁদাবাজ এবং ফেন্সীকে জাতীয় পার্টির নেত্রী উল্লেখ করে আলাদা আলাদা সভা করে তৃণমূল নেতারা। সভায় ‘ফেন্সী ও রাজাকার মুক্ত’ আ’লীগের দাবীতে তাদের উপজেলার সর্বত্র প্রতিহত করার ঘোষণা দেন উপজেলা আ’লীগের ত্রিমূখী বিভক্ত নেতারা। পরে কায়সার, মোশারফ ও কালাম তাদের দীর্ঘদিনের কোন্দল ভুলে ২১ আগষ্ট মোগরাপাড়া চৌরাস্তায় দলীয় কার্যালয়ের সামনে ১৫ ও ২১ আগস্টে নিহতদের স্মরণে আয়োজিত শোকসভায় তাদের একাত্মতা প্রকাশ করেন। নবগঠিত আহবায়ক কমিটিকে সোনারগাঁয়ে অবাঞ্চিত ঘোষনা করে যে কোন মূল্যে কমিটিকে প্রতিহত করতে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, শ্রমিকলীগ সহ সকল সহযোগী সংগঠনের নেতা কর্মীদের নির্দেশ দেন।

জামপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের উদ্যোগে ইউনিয়ন আ’লীগের সম্মেলন উপলক্ষে সম্মেলনের প্রস্তুতিমূলক সভার আয়োজন করে আহবায়ক কমিটির নেতা ডা. আবু জাফর চৌধুরী বিরু। সোনারগাঁ উপজেলা যুবলীগের পক্ষ থেকেও একই বিদ্যালয়ে একই সময় জামপুর ইউনিয়ন যুবলীগের পক্ষে থেকে একটি বর্ধিত সভার আয়োজন করে। এতে উভয় পক্ষের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংকায় এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করে এবং এলাকায় জনমনে আতঙ্ক ছরিয়ে পড়ে।দু’পক্ষই যে কোন মুল্যে সভার করার ঘোষনা দেন। ফলে এ সভাকে ঘিরে দু’পক্ষের মধ্যে যে কোন বড় ধরনের সংঘর্ষ এড়াতে স্থানীয় প্রশাসন আয়োজকদের সভা করা থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেন। এতে উভয় পক্ষ সম্মত হয়ে সভা বন্ধ ঘোষনা করে।

ডাঃ বিরু এবং এডভোকেট সামসুল ভূইয়া সমাবেশ করতে না পেরে নিজ বাড়ীতে অবস্থান নেন। এ সময় সাবেক সাংসদ কায়সার হাসনাত, মাহফুজুর রহমান কালাম ও মোশারফ হোসেনসহ জামপুর ইউনিয়ন ও উপজেলা আওয়ামীলীগ এবং অঙ্গসংগঠনের কয়েক হাজার নেতাকর্মী জামপুরের বিভিন্ন স্পটে অবস্থান নিয়ে সমাবেশ করেন। তাদের সমাবেশ শেষ না পযন্ত জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল হাই এবং সাধারণ সম্পাদক ভিপি বাদলসহ প্রায় চারঘন্টা বিরুর নিজ বাড়িতে অবরুদ্ধ থাকেন।

আহবায়ক কমিটির সমর্থরা জানান, ডা. বিরু ছাত্রলীগের মাধ্যমে ১৯৮৭ সাল থেকেই আ’লীগ পরিবারের সাথে যুক্ত। সে কায়সার ও কালামের সাথে রাজনীতি করেছেন। সে সব ছবি এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। অন্যদিকে ইঞ্জি. মাসুম স্কুল জীবন থেকেই আ’লীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত।তার দাদা পিরোজপুর ইউনিয়নে শিক্ষাগুরু হিসেবে পরিচিত, তার চাচা নূরুল ইসলাম পিরোজপুর ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি ছিলেন, আরেক চাচা তাজুল ইসলাম শ্রমিকলীগ নেতা, তার ছোট ভাই আবু সাঈদ উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, জাহিদ হাসান বাবু উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। ১২বছর উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুদুর রহমান মাসুম পিরোজপুর ইউনিয়নের নৌকা প্রতিক নির্বাচিত আ’লীগের চেয়ারম্যান। উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক কমিটির যুগ্ম আহবায়ক।

তবে ফেন্সী জাতীয় পার্টির নেত্রী স্বীকার করলেও বাবু ওমরের বিষয়ে কোন কথা বলতে রাজি হননি।

সোনারগাঁ উপজেলা ও থানা প্রশাসন সুত্র জানায়, পাল্টপাল্টি সভাকে কেন্দ্র করে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে সে জন্য উভয় পক্ষের সভা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এরপরও যদি কেউ সভা করতে চায় তাহলে সেখানে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১৪৪ জারি করা হবে।

আপনার মতামত জানান