পাইলট প্রকল্পের সোলার বোট ধ্বংস হচ্ছে

প্রকাশিত



টেকসই এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (স্রেডা) ২০১৮ সালে দেশের তিনটি স্থানে পাঁচটি নৌকা পরীক্ষামূলকভাবে সৌরশক্তি দিয়ে চালানোর প্রকল্প বাস্তবায়ন করে। এরই মধ্যে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের পানাম নগরীর পঙ্খীরাজ খালে দুটি নৌকার সন্ধান পাওয়া যায়। পাইলট প্রকল্পের এ নৌকা দুটি রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।

জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সৌরশক্তি ব্যবহার করে নৌকা চালানো যায় কি-না তা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেওয়ার পর স্রেডা সৌরচালিত নৌকা তৈরির পাইলট প্রকল্প হাতে নেয়। টেকসই এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (স্রেডা) ২০১৮ সালে ৭৮ লাখ টাকা ব্যয়ে তিনটি স্থানে পাঁচটি নৌকা পরীক্ষামূলকভাবে সৌরশক্তি দিয়ে চালানোর জন্য সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে চুক্তি করে। এর মধ্যে রাজধানীর হাতিরঝিলে একটি, সোনারগাঁয়ের পানাম নগরে দুটি এবং চট্টগ্রামের ফয়েজ লেকে দুটি সৌরচালিত নৌকা রয়েছে।



সরেজমিন পানাম নগরীতে গিয়ে দেখা যায়, নৌকা দুটি খালের পাড়ে অযত্নে পড়ে থাকায় সরকারের পাইলট প্রকল্প অংকুরেই ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় শিশু কিশোররা নৌকার সোলার প্যানেলের ওপর উঠে পানিতে লাফ দিয়ে গোসল করছে।

প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের পানাম নগরীর তত্ত্বাবাধায়ক জাহাঙ্গীর আলম ভূঁইয়া জানান, ২০১৮ সালে তৎকালীন নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিনুর ইসলাম প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের আওতাভুক্ত এলাকায় অধিদপ্তরের কাউকে না জানিয়েই পঙ্খীরাজ খালে নৌকা দুটি রেখে যান। প্রথমে কিছুদিন নৌকা চললেও প্রায় দেড় বছর যাবত নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। দেখভাল করার কেউ না থাকায় নৌকা দুটি সরিয়ে নিতে আমরা কয়েকবার নির্বাহী কর্মকর্তাকে লিখিতভাবে অবহিত করেছি।

স্থানীয়রা জানান, সোলার নৌকার প্রতি পর্যটকদের আগ্রহ থাকায় এলাকার অনেকেই নৌকা দুটির ইজারা নিতে চাইলেও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা চাহিদা অনুযায়ী ইজারামূল্য না পাওয়ায় ইজারা দেননি।

স্রেডোর সহকারী পরিচালক (সোলার) প্রকৌশলী মো. ওাশেদুল আলম জানান, প্রকল্পটি ইউনাইটেড নেশন ডেভলপমেন্ট প্রগ্রাম ইন বাংলাদেশ (ইউএনডিপি) এর অর্থায়নে সোলার-ই-টেকনোলজি নামের একটি উদ্ভাবনী প্রতিষ্ঠান তৈরি করেছে। এ ব্যাপারে জানতে তাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।

সোলার-ই-টেকনোলজি প্রকৌশলী আহমেদুল কবির উপল জানান, সোনারগাঁ উপজেলার ইউএনও কাছে আমরা নৌকা দুটি হস্তান্তর করার প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ চালক তৈরি করেছি। যে লেকে নৌকা দুটি আছে সেখানে নাব্যতা সংকট এবং পানির তলায় পুরাতন দালানের ধ্বংসাবশেষ থাকায় কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এটা রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব স্থানীয় প্রশাসনের, আমরা মূলত টেকনিক্যাল সাপোর্ট দিয়ে থাকি। তিনি আরো জানান, সোলার বোট বাজারজাত করার সুদূর প্রসারী উদ্যোগ নিলে প্রযুক্তিতে নতুন মাত্রা যোগ হবে এবং নদী ও বায়ু দূষণমুক্ত শক্তি সঞ্চয় হবে।

সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আতিকুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আপনার মাধ্যমে জানতে পারলাম। আমি সরেজমিন গিয়ে নৌকা দুটিকে সচল অথবা অন্যত্র হস্তান্তরের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করব।

সুত্র: কালের কন্ঠ

আপনার মতামত জানান