তাজমহলে যমুনার জল

প্রকাশিত


যমুনা নদীর জল আগ্রার তাজমহলের দেওয়াল ছুঁয়েছে। ৪৫ বছর পর গতকাল সোমবার স্মৃতিস্তম্ভটির পেছনের একটি বাগান ডুবে গেছে যমুনার জলে। নদীর জলের স্তর ৪৯৭ দশমিক ৯ ফুটে পৌঁছেছে, যা বন্যার নিম্নস্তর ৪৯৫ ফুটকে ছাড়িয়ে গেছে। টাইমস অব ইন্ডিয়া এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।


অবিরাম বর্ষণে নদীর পানির উচ্চতা বেড়ে যাওয়ায় আগ্রার দশেরা ঘাটসংলগ্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ইতিমাদ-উদ-দৌলার সমাধির বাইরের অংশেও পানি প্রবেশ করেছে। রামবাগ, মেহতাববাগ, জোহরাবাগ, কালা গুম্বাদ এবং চিনি কা রৌজার মতো স্মৃতিস্তম্ভগুলো ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।


তবে আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার (এএসআই) কর্মকর্তারা দাবি করছেন, এই স্মৃতিস্তম্ভগুলোর এখন পর্যন্ত কোনো ক্ষতি হয়নি এবং বন্যার জল তাজের তলদেশে প্রবেশ করেনি।

এএসআইয়ের কর্মকর্তারা বলেছেন, তাজমহলের নকশা এমনভাবে করা হয়েছে যে বন্যার পানি এর তলদেশে প্রবেশ করতে পারে না। মথুরায় যমুনার জলের যেই স্তর ছিল তা সমাধিটির জন্য বিপদচিহ্ন ছিল। তবে সেই পানি নেমে গেছে।

তাজমহলের এএসআইয়ের সংরক্ষণ সহকারী প্রিন্স বাজপেয়ী বলেন, ‘তাজমহলটি এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যে প্রবল বন্যার সময়ও জল মূল সমাধিতে প্রবেশ করতে পারে না। শেষবার ১৯৭৮ সালে যমুনা তাজমহলের পেছনের দেয়ালে স্পর্শ করেছিল। তাজমহলের পেছনের বাগানটি কয়েক দশক আগে তৈরি করা হয়েছিল, কারণ যমুনার জলস্তর নেমে যাওয়ায় ওই জায়গাটি খালি করেছিল।’

১৯৭৮ সালে যমুনার জলস্তর ৫০৮ ফুটে উঠেছিল। এটি আগ্রায় উচ্চ স্তরের বন্যা ছিল। পানির স্তরটি তাজমহলের বাসাই ঘাট বুর্জের উত্তর দেয়ালে চিহ্নিত করা হয়েছে। এ সময় স্মৃতিসৌধের বেসমেন্টের ২২টি কক্ষে পানি প্রবেশ করেছিল। পরে এএসআই বাসাই ও দুশেরার ঘাট থেকে কাঠের দরজা (যার মাধ্যমে পানি বেসমেন্টে প্রবেশ করেছিল) সরিয়ে দেয় এবং প্রবেশপথে দেয়াল তৈরি করে।

ইতিমধ্যে, এনডিআরএফ, পুলিশ এবং প্রশাসন আগ্রা ও মথুরার জলমগ্ন নিচু এলাকায় আটকে পড়া লোকদের উদ্ধার করছে। যমুনার নিকটবর্তী ৫০টি গ্রাম ও ২০টি শহুরে এলাকার ৫০০ জনেরও বেশি লোককে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

মথুরা জেলার যমুনা নদীর জলস্তর ছুঁয়েছে ১৬৭ দশমিক ২৮ মিটার, যা বিপদসীমা ১৬৬ মিটারের ওপরে।

একটি সরকারি অনুমান অনুসারে, আগ্রা ও মথুরায় ৫০০ বিঘারও বেশি কৃষিজমি তলিয়ে গেছে। জেলাগুলো প্রায় ১০০ গ্রাম এবং শহর এলাকা গত দুই দিন ধরে বিদ্যুৎবিহীন। মথুরার বন্যাকবলিত এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, তাদের রেশন ও পানীয় জল ফুরিয়ে গেছে।

আপনার মতামত জানান