ছাত্রলীগে শুদ্ধি অভিযানের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো এই তথ্য জানিয়েছেন যে, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবরার ফাহাদ হ’ত্যার পর আবার ছাত্রলীগে শুদ্ধি অভিযানের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেছেন যে, আবর্জনা পরিষ্কার করতে হবে। যারা এরকম ঘটনাগুলো ঘটাচ্ছে তাঁদেরকে চিহ্নিত করতে হবে এবং এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। এই সমস্ত আবর্জনা দলে থাকার দরকার নেই বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এদিকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কাছে এ ব্যাপারে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন যে, আমার ছাত্রলীগে যে সমস্ত অনুপ্রবেশকারী রয়েছে, অন্যদল থেকে যারা ছাত্রলীগে প্রবেশ করেছে তাদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানাচ্ছে যে, শোভন-রাব্বানির কমিটি হওয়ার আগেই ছাত্রলীগে অনেক জামাত-শিবির এবং ছাত্রদল থেকে অনুপ্রবেশকারী ঢোকার তথ্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে দিয়েছিল গোয়েন্দা সংস্থা। প্রায় দুই হাজারের বেশি অনুপ্রবেশকারী ছাত্রলীগে প্রবেশ করেছিল এবং গোয়েন্দা তথ্যানুযায়ী এসমস্ত অনুপ্রবেশকারীরা ছাত্রলীগের নাম ব্যবহার করে বিভিন্ন অপকর্মে জড়িয়ে পড়েছিল।
একারণেই আওয়ামী সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী নিজ হতে ছাত্রলীগের কমিটি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। দীর্ঘ পরিক্ষা নীরিক্ষার পর তিনি শোভন-রাব্বানীর নেতৃত্বে কমিটি গঠন করেছিলেন।
কিন্তু আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল নেতারা বলছেন যে, ছাত্রলীগের অনুপ্রবেশকারীদের বিস্তৃতি এত তৃণমূল পর্যন্ত ছড়িয়ে পরেছে এবং অনুপ্রবেশকারিদের অবস্থান এত দৃঢ় যে চটজলদি করে উপড়ে ফেলা সম্ভব হয়নি।
অন্যদিকে অনুপ্রবেশকারিদের প্ররোচণায় শোভন-রাব্বানী বিপদে পরেছে বলে অনেক আওয়ামী লীগ নেতা মনে করেন। আর এই প্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগ শক্ত হাতে ছাত্রলীগে যারা অনুপ্রবেশকারী আছে তাদের বের করার উদ্যোগ নিয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে, আওয়ামী লীগ তিনমাসের একটা ক্র্যাশ প্রোগ্রাম গ্রহণ করবে এবং এই তিনমাসের মধ্যে যারাই ছাত্রলীগে অনুপ্রবেশকারি এবং যাদের বিরুদ্ধে ন্যুনতম অভিযোগ আছে তাদেরকে ছাত্রলীগ থেকে বের করে দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে জিরো টলারেন্স নীতি নিয়েছেন। তিনি বলেছেন যে, ছাত্রলীগের নাম ব্যবহার করে যারা বদনাম করবে তাদেরকে ছাত্রলীগের দরকার নাই। তিনি বরং মেধাবী এবং প্রকৃত শিক্ষার্থী তাদেরকে ছাত্রলীগে নিয়ে আসার জন্য উদ্বুদ্ধ করছেন।
আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলছেন, ছাত্রলীগে এরকম অনুপ্রবেশকারী এবং অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িতদের সংখ্যা বেশি হয়ে যাওয়ার কারণে এখন মেধাবী ছেলেমেয়েরাও ছাত্রলীগে আসতে অনাগ্রহ প্রকাশ করছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, খুব শীঘ্রই ছাত্রলীগকে নির্দেশনা দিবো। কোন হল দখল করা যাবে না, মাস্তানি করা যাবে না, কোন ব্যবসায়ীক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকা যাবে না সহ বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়ে আমরা একটি কঠোর বার্তা ছাত্রলীগে দিবো। যে এধরণের অপকর্মের দায়ভার ছাত্রলীগকে না নিতে হয়।
আপনার মতামত জানান